এসএসকেএম হাসপাতালের মর্গ থেকে দেহ উধাও হওয়ার ঘটনায় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আদালতবান্ধব তাপসকুমার ভঞ্জ। মঙ্গলবার আদালতবান্ধবের সুপারিশের ভিত্তিতে এ বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে হাই কোর্ট সূত্রের খবর।
প্রেসিডেন্সি জেলের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাওড়ার আমতার বাসিন্দা বাবলুকে গত ২০ অক্টোবর এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যদিও চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন। এর পরেই তাঁর দেহ পাঠানো হয় ওই হাসপাতালের মর্গে। ঠিক হয়, ২৩ অক্টোবর এসএসকেএমে বাবলুর দেহের ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের সুরতহাল হবে। তার জন্য ওই দিন মর্গে যান কলকাতা পুলিশের এক সহকারী নগরপাল। তিনি মর্গে বাবলুর দেহ না পেয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ হন।
আরও পড়ুন:
এর পরে দেহের খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, মহেশতলার বাসিন্দা এক ব্যক্তির দেহের সঙ্গে অদলবদল হয়ে গিয়েছে বাবলুর দেহ। এমনকি, মহেশতলার সেই বাসিন্দার পরিবারের সদস্যেরা বাবলুর দেহ নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য করে ফেলেছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, পরিবারের তরফে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে দাবি করা হয়েছিল, বাবলুকে জেলে খুন করার পরে দেহ লোপাট করে ফেলা হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সেই সূত্রেই পুলিশ মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে সেখানকার চিকিৎসক এবং কর্মীদের বয়ান নথিভুক্ত করে। খতিয়ে দেখা হয় সিসিটিভি ফুটেজও।
আরও পড়ুন:
কার গাফিলতিতে ওই দেহ উধাও হয়েছে, তা জানতে পুলিশ এসএসকেএম হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির কর্মী ও অফিসারদের জেরা করেছে। ওই বন্দির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই হেস্টিংস থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। সেই তদন্ত চলছে। ঘটনার তদন্ত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থও হয়েছে মৃতের পরিবার। গত সোমবার ওই পরিবারের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে এই সংক্রান্ত চিঠি জমা দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, সেই চিঠিতে মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই বন্দিকে প্রেসিডেন্সি জেলে খুন করা হয়েছে এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্যই মৃতদেহ মর্গ থেকে গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। চিঠি আকারে এই অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে রাজ্যপাল এবং মানবাধিকার কমিশনের দফতরেও। বাবলু পোল্লে নামে ওই বন্দির পরিবারের আইনজীবী নবজ্যোতি রায় জানিয়েছেন, সুবিচারের আশাতেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতর-সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।