চলছে দুয়ারে সরকার শিবির। — ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি শুরু হওয়া ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে শিবির করার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বেশ কিছু স্কুলকে বাছা হয়েছে। আর এর জেরে স্কুলের পঠনপাঠন থেকে পরীক্ষার রুটিন অনেকাংশে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ দিকে, চলতি মাসের শেষে এবং জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে পরীক্ষার মরসুম। এক দিকে শুরু হবে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট, একাদশের ষাণ্মাসিক পরীক্ষা। অন্য দিকে রয়েছে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির তৃতীয় সামগ্রিক মূল্যায়ন। তাই বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সরকারি ওই কর্মসূচির দিনক্ষণ দেখে পরীক্ষার রুটিন পাল্টাতে হচ্ছে তাঁদের। কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ আবার জানাচ্ছেন, চলতি মাসে এই প্রকল্পের জন্য পঠনপাঠনেও ছুটি দিতে হয়েছে।
যেমন, বেহালা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বেরা জানিয়েছেন, বুধবার দুয়ারে সরকার প্রকল্প থাকায় তাঁদের স্কুল ছুটি দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা সকলে স্কুলে এসেছেন, কিন্তু ক্লাস হয়নি। আমাদের স্কুলে দুয়ারে সরকারের পরবর্তী শিবির আবার হবে মাধ্যমিকের টেস্ট চলাকালীন। তাই পরীক্ষার রুটিনও এমন ভাবে ফেলতে হয়েছে যাতে শিবিরের দিনে পরীক্ষা না থাকে।’’
মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট শুরু হচ্ছে ১৭ নভেম্বরের পরে। অন্য দিকে, নিচু ক্লাসের তৃতীয় সামগ্রিক মূল্যায়ন শুরু হচ্ছে ২৫ নভেম্বরের পর থেকে। যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে যে দিন দুয়ারে সরকার প্রকল্পের শিবির হবে, সে দিন দশম শ্রেণির টেস্ট রয়েছে। তবে স্কুলের দু’টি দরজা রয়েছে। তাই দ্বিতীয় দরজা দিয়ে ঢুকে মাঠের মধ্যে শিবিরের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। ’’
কলকাতার হাতে গোনা কয়েকটি স্কুলকে এই সরকারি কর্মসূচির জন্য নেওয়া না-হলেও শহরতলির অনেক স্কুল চত্বরেই ওই প্রকল্পের আয়োজন করা হচ্ছে। যার জেরে সেখানে পঠনপাঠন অনেকাংশে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘রাজ্যের কিছু স্কুল থেকে খবর পাচ্ছি, দুয়ারে সরকার প্রকল্পের জন্য পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। পরীক্ষার রুটিনও সেই অনুযায়ী ফেলতে হচ্ছে। একই সঙ্গে টেস্ট ও দুয়ারে সরকার কর্মসূচি থাকায় জেলার বিভিন্ন স্কুলের পক্ষে রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণের দিনও আছে সামনে। বিষয়টির যাতে সুরাহা হয়, সে জন্য শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়েছি।’’
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘পরিকল্পনা করে দুয়ারে সরকার করলে স্কুলগুলিকে সেই সব দিনে ছুটি দিতে হত না। এত দিন পুজোর ছুটি গেল। শনি-রবিবার দুপুর দেড়টার পরে দুয়ারে সরকার করলেও পঠনপাঠন ব্যাহত হয় না।’’ শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, প্রকল্পের জন্য যে স্কুলে মাইক বাজছে বা অত্যধিক ভিড় হচ্ছে, এমন নয়। কিন্তু বাইরের লোক ঢোকায় পড়ুয়াদের, বিশেষত ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে স্কুল ছুটি দিতে হচ্ছে। যদিও শিক্ষা দফতরের এক কর্তার মতে, ‘‘এখন শুধু স্কুল নয়, বিভিন্ন ক্লাব ও কমিউনিটি সেন্টারও ওই কর্মসূচির জন্য নেওয়া হচ্ছে। স্কুলে প্রকল্প করা হলেও মাইক বাজানো হচ্ছে না। তাই পঠনপাঠন বা পরীক্ষা নিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy