রাস্তায় উপড়ে পড়েছে বিশাল গাছ। চলছে রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা। —প্রতীকী চিত্র
কোথাও উড়ে গিয়েছে টিনের ছাউনি। কোথাও আবার ভেঙে পড়েছে সীমানা পাঁচিল। ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আমপানের তাণ্ডবে এমনই বিপর্যস্ত অবস্থা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন এবং শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের প্রধান কার্যালয় ও বিভিন্ন শাখা কেন্দ্রের।
বুধবারের ঝড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মনসাদ্বীপের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের ব্যাপক ক্ষতি হলেও শনিবার থেকে সেখানে দৈনিক এক হাজার মানুষের হাতে রান্না করা খাবার তুলে দেওয়া শুরু হল। সমাজে পিছিয়ে থাকা মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে নাওড়া রামকৃষ্ণ মঠও। ওই আশ্রমের অধীনে রয়েছে ১২টি কোচিং সেন্টার। সেখানে এলাকার পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখানো হয়। ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই সেন্টারগুলি।
আমপানের তাণ্ডবে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কার্যালয় বেলুড় মঠ চত্বরে প্রায় ৪০টি গাছ ভেঙে পড়েছে। নিজেদের লোকজনকে লাগিয়ে সেই গাছ কাটার কাজ করেছেন সন্ন্যাসীরা। অন্য দিকে, মনসাদ্বীপ ছাড়া নরেন্দ্রপুর, সরিষা, নাওড়া, কাঁথি, বামুনগোরা, টাকি-সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মেদিনীপুরে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বেশ কিছু আশ্রম ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অডিটোরিয়াম, দাতব্য চিকিৎসালয়, স্কুলের টিনের ছাউনি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। কোথাও আবার তা উড়ে গিয়েছে। কোথাও ভেঙে পড়েছে সীমানা পাঁচিল। গাছের সঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় অন্ধকারে ডুবে রয়েছে বেশ কিছু আশ্রম। বিদ্যুৎ না থাকায় দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কটও। এক প্রবীণ সন্ন্যাসীর কথায়, ‘‘মোবাইলে নেটওয়ার্ক না থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের আশ্রমগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।’’
ঝড়ের দাপটে একই রকমের সমস্যা হয়েছে শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের বিভিন্ন শাখা কেন্দ্রে। যেমন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গারামপুর রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের স্কুলবাড়ির দোতলার ছাদের ছাউনি পুরো উড়ে গিয়ে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে আলো-পাখা। বড় গাছ পড়ে ক্ষতি হয়েছে স্কুলের ছাদের। ঝড়ের দাপটে উড়ে গিয়েছে জলের ট্যাঙ্ক, ভেঙেছে জলের পাইপলাইন। আবার বরাহনগরের বারুইপাড়া স্কুলের ভিতরে গাছ ভাঙার পাশাপাশি জল ঢুকে গিয়েছে। দক্ষিণেশ্বরে শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের প্রধান কার্যালয়ের ভিতরে বেশ কিছু বড় গাছও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সঙ্ঘের সহ সম্পাদক প্রব্রাজিকা জ্ঞানদাপ্রাণা বলেন, ‘‘সব জায়গাতেই আমরা নিজেদের মতো করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।’’ এর মধ্যেও তাঁরা করোনার ত্রাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
অন্য দিকে, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ জানান, দেশ জুড়ে করোনার ত্রাণ কাজ চালানোর পাশাপাশি হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার যে সব শাখা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছে, তাদের বলা হয়েছে রান্না করা খাবার গৃহহীন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। রামকৃষ্ণ মিশন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাদের অনুরোধ করেছেন ত্রাণকাজে সহযোগিতা করার জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy