Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Amphan

আমপানে ছিঁড়ে পড়া তার স্পর্শ করেই কি মৃত্যু

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন বিপজ্জনক হয়ে পড়ে ছিল ওই ছেঁড়া তার। ওই তার বিদ্যুতের না কেব্‌ল সংস্থার, সোমবার রাত পর্যন্ত তা জানাতে পারেনি পুলিশ। 

শ্যামল দে

শ্যামল দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০১:৫৫
Share: Save:

আমপানের পরে শহরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বহু জায়গায় উপড়ে পড়েছিল বিদ্যুতের খুঁটি। অভিযোগ, তার পর থেকে বিপজ্জনক ভাবে একটি বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তার ঝুলছিল মানিকতলার হরিশ নিয়োগী রোডে। রবিবার বৃষ্টির রাতে সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় স্থানীয় এক বাসিন্দার। এলাকাবাসীর সন্দেহ, ঝুলতে থাকা তারটির কারণেই ওই দুর্ঘটনা। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ এবং সিইএসসি।

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের নাম শ্যামল দে (৪৩)। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন বিপজ্জনক হয়ে পড়ে ছিল ওই ছেঁড়া তার। ওই তার বিদ্যুতের না কেব্‌ল সংস্থার, সোমবার রাত পর্যন্ত তা জানাতে পারেনি পুলিশ।

শ্যামলবাবু হরিশ নিয়োগী রোডের বহু বছরের বাসিন্দা। বাড়ির কাছেই একটি গেঞ্জির কারখানায় তিনি কাজ করতেন। স্ত্রী ছাড়াও তাঁর বছর পাঁচেকের একটি মেয়ে রয়েছে। রবিবার রাত দশটা নাগাদ বৃষ্টির মধ্যেই কারখানা থেকে বাড়ি ফেরার জন্য বেরোন শ্যামলবাবু। রাত দেড়টার পরেও স্বামীকে ফোনে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তাঁর স্ত্রী রূপা। তখনই বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই রাস্তায় জমা জলের মধ্যে শ্যামলের দেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে বলে রূপাকে খবর দেন এক যুবক।

রূপা বলেন, “ওঁর শরীরটা জলের মধ্যে উল্টো হয়ে পড়েছিল। চটি জলে ভাসছিল।’’ সুমন সাহা নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, “গোটা জায়গাটাই বিপজ্জনক হয়েছিল। পুলিশও তাই শ্যামলকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেনি। রাত দু’টোরও পরে বিদ্যুৎ সংস্থার লোকজন আসে। এর পরেই শ্যামলকে আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো যায়। তত ক্ষণে সব শেষ। প্রায় তিন ঘণ্টা মৃতদেহ ওই ভাবে পড়েছিল।”

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, সেখান থেকে শ্যামলবাবুর বাড়ির দূরত্ব মাত্র কয়েকশো মিটার। প্রতিবেশীদের দাবি, যে জায়গাটিতে মৃতদেহ পড়ে ছিল তার সামনেই রয়েছে একটি বিদ্যুতের খুঁটি। তা থেকে এ দিনও ঝুলছিল কয়েকটি ছেঁড়া তার। এক বাসিন্দা বলেন, “বার বার বলেও ওই খুঁটি সংস্কার করানো যায়নি। আমপানের দিন থেকেই কয়েক গোছা তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। আশপাশের শিশুরাও এই রাস্তায় খেলা করে। পুর-প্রতিনিধি বা থানাকে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। এই মৃত্যুর পরে যদি হুঁশ ফেরে!” মৃতের স্ত্রীর অবশ্য দাবি, “হুঁশ ফিরে আর কিছু হবে না। এই গাফিলতি যাদের, তাদের কড়া শাস্তি চাই।”

মানিকতলা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক জানালেন, এ নিয়ে থানায় কখনওই কিছু জানানো হয়নি। তারগুলি কাদের, তা জানতে বিদ্যুৎ সংস্থা সিইএসসি এবং স্থানীয় কেব্‌ল অপারেটরদের চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

ময়না-তদন্তের পরে শ্যামলবাবুর দেহ এ দিন সন্ধ্যায় তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সিইএসসির-র উত্তর কলকাতার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বললেন, “আমরাও তদন্ত করছি। কী থেকে এমনটা ঘটল, পুলিশকেও জানাব।” এলাকার পুর কোঅর্ডিনেটর অমল চক্রবর্তী যদিও অভিযোগ উড়িয়ে বলেছেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবু বলব, বহু লোক ওখানে জায়গা দখল করে থাকেন। ডেঙ্গি থেকে করোনা— ওঁরা কিছুই মানেন না। বিদ্যুতের তার পড়ে থাকার কথা আমাকেও কোনও দিন কেউ জানাননি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy