ফাইল চিত্র।
ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ন্ত্রণ ও কোভিড নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতে এ বার থানায় থানায় সর্বদলীয় বৈঠক করতে উদ্যোগী হল হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। হাওড়া কমিশনারেটের অধীনস্থ বিভিন্ন থানায় সব দলেরই স্থানীয় স্তরের নেতাদের ডেকে বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই গোলাবাড়ি ও বেলুড়-সহ বেশ কয়েকটি থানায় এই বৈঠক হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি থানাতেই এমন বৈঠক করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
হাওড়ায় ভোটগ্রহণ পর্ব মিটে গিয়েছে গত ১০ এপ্রিল। কিন্তু তার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। রক্ত ঝরছে অবিরাম। আক্রান্ত হচ্ছেন মহিলারাও। ভাঙচুর হচ্ছে ঘরবাড়ি। এমন বেশ কয়েকটি ঘটনায় দুই দলেরই সমর্থকদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যে সব জায়গায় গোলমাল হচ্ছে, সেখানে পুলিশবাহিনী ও র্যাফ নামানো হচ্ছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও রাজনৈতিক উত্তেজনা কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
রাজনৈতিক গোলমালের পাশাপাশি পুলিশের চিন্তা বাড়িয়েছে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। এর মধ্যে গোটা হাওড়ায় যেখানে দু’হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানে শুধু পুলিশ কমিশনারেট এলাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৭০০। সেই কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রাজনৈতিক দলগুলি যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে সচেতনতার প্রচার চালায়, তা নিশ্চিত করতে থানায় থানায় সর্বদলীয় বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ কমিশনারেট। সেই সঙ্গে পুলিশবাহিনীর কর্মীদেরও কোভিড-বিধি মেনে কাজ করতে বলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মানুষকে সচেতন করতে তাদের তরফে মাইকে প্রচার চালানো হবে। এই প্রচার বেশি করে চলবে বাজার এবং ঘন বসতিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায়।
উত্তর হাওড়া বাদে সার্বিক ভাবে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ভোটগ্রহণ শান্তিতেই মিটেছে। কিন্তু ভোটের পরের দিন থেকেই ডোমজুড়ের বাঁকড়া এবং চ্যাটার্জিহাটের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। রবিবার রাতে বাঁকড়ার রাজীবপল্লিতে দু’দলের সংঘর্ষে প্রায় ১৫ জন জখম হয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। চ্যাটার্জিহাটের ভ্যানিশকালী মাঠে দু’দলের সংঘর্ষে জখম হন তৃণমূলের তিন-চার জন মহিলা সমর্থক।
আগামী ২ মে নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরে গোলমাল আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে পুলিশের একাংশ। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়বে করোনাও। পুলিশের ধারণা, হাওড়ায় যে হারে করোনা ছড়াচ্ছে, তাতে বহু এলাকাতেই কন্টেনমেন্ট জ়োন করতে হবে। মানুষকে বোঝানোর দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদেরই নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা।
বুধবার হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) অনুপম সিংহ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক হিংসা ও করোনার প্রকোপ কমাতে হাওড়া শহরের সব থানায় সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হচ্ছে। আপাতত এই দু’টি সমস্যা নিয়েই আলোচনা হবে। ইতিমধ্যেই গোলাবাড়ি ও বেলুড়ে বৈঠক হয়ে গিয়েছে। সব থানাতেই এটা করার চেষ্টা করছি।’’
গত বছর হাওড়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল করোনা মোকাবিলায় যে ভাবে পথে নেমেছিল, এ বারও তেমন হোক, চাইছে পুলিশ। কারণ, স্থানীয় নেতারাই জানবেন, কোথায় কত জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথাও তাঁদের থেকে জানা যাবে, মনে করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy