প্রতীকী ছবি।
পৃথক দু’টি মামলায় সমকামী চার তরুণীকে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের গ্রীষ্মাবকাশের বিশেষ আদালতে বিচারপতি প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছেন ওই তরুণীরা যেখানে থাকেন, সেখানে পুলিশ পিকেট বসাতে। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশ, চার জনকেই আদালতে অতিরিক্ত হলফনামা দিয়ে তাঁদের সাবালকত্বের প্রমাণ দাখিল করতে হবে। এ-ও জানাতে হবে, এই সম্পর্ক রাখতে প্রত্যেকের পূর্ণ সম্মতি রয়েছে।
ঘটনাটি কী? শ্রীরামপুরের বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার এক তরুণীর বছর দেড়েক ধরে সমকামী সম্পর্ক রয়েছে। মাস কয়েক আগে শ্রীরামপুরের তরুণী রিজেন্ট পার্কে চলে আসেন এবং সেখানেই থাকতে শুরু করেন। তাঁর আইনজীবী দীপঙ্কর পাল এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, তাঁর মক্কেলকে সম্পর্ক ছিন্ন করে শ্রীরামপুরে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বাবা ও দাদা। লালবাজারের এক পুলিশ অফিসারকে দিয়েও টেলিফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। বাঁচার অধিকার রক্ষা করার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় ওই আইনজীবীর উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘‘সম্পর্ক নিষ্কাম (প্লেটোনিক) হলে অভিভাবক হয়তো মেনে নিতেন।’’ বিচারপতির ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শ্রীরামপুরের তরুণীর আইনজীবী বলেন, ‘‘মক্কেলের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন। তা না হলে তিনি ‘সম্মান রক্ষার্থে খুন’ (অনার কিলিং) হয়ে যেতে পারেন।’’ এ কথা শুনে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘‘সম্মান রক্ষার্থে খুন? এই রাজ্যে?’’
এর পরেই বিচারপতি সরকারি কৌঁসুলি তপন মুখোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রিজেন্ট পার্কে তরুণীর বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসানোর ব্যবস্থা করতে। গরমের ছুটির পরে এক সপ্তাহের মধ্যে দুই তরুণীকেই অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। হলফনামায় রিজেন্ট পার্কের তরুণীকে এ-ও প্রমাণ দিতে হবে যে, তাঁর বাবার মৃত্যুর পরে মা ও দাদার সঙ্গে তিনিও বাসস্থানের মালিকানার অংশীদার।
অন্য ঘটনায় আনন্দপুরের এক তরুণীর সঙ্গে পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা এক তরুণীর সমকামী সম্পর্কের জেরে মামলা দায়ের হয়েছে। এ দিন সেই মামলারও শুনানি হয় বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদালতে। পার্ক সার্কাসের তরুণীর আশঙ্কা, সম্পর্ক ছিন্ন না করলে তাঁর বাবা-মা তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেবেন। ওই তরুণীর আইনজীবী আদালতে জানান, দশ বছর ধরে তাঁর মক্কেলের সঙ্গে এক তরুণীর সম্পর্ক রয়েছে। তাঁরা দু’জনেই এমবিএ পাশ করেছেন। দুই পরিবারের আপত্তির কারণে তাঁরা শহরের একটি জায়গায় গোপনে থাকছেন। তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুক আদালত।
এ ক্ষেত্রেও বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় দুই তরুণীর সাবালকত্বের প্রমাণ দাখিল করতে ও সম্পর্ক স্থাপনে তাঁদের উভয়েরই যে পূর্ণ সম্মতি রয়েছে, তার প্রমাণ দিতে বলেন। গরমের ছুটি শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ওই হলফনামা পেশ করতে হবে দু’জনকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy