ডাঁই: বাগড়ি মার্কেটের এই পোড়া বর্জ্য ফেলা ঘিরেই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র
আগুন নিভেছে আগেই। তবে বাগড়ি মার্কেটের ভিতরের পোড়া বর্জ্য এখনও স্তূপীকৃত হয়ে রয়েছে ওই বাজারের কাছে ক্যানিং স্ট্রিটের উপরে। সেই বর্জ্যের প্রকৃতি নিয়ে দ্বিধায় পুর প্রশাসন। তা ধাপায় ফেলা যাবে তো? মুশকিল আসানে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শরণাপন্ন হয়েছেন পুরকর্তারা।
এ দিকে, অবিলম্বে বর্জ্য সরানো না হলে ওই জায়গায় মানুষ চলাচল থেকে শুরু করে যে ব্লকগুলি অক্ষত রয়েছে, সেখানেও দোকানপাট খোলা বা মাল সরানোর কাজে বিঘ্ন ঘটবে, কিছুটা ঘটছেও। দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশও। পুরসভার আশঙ্কা, ওই বর্জ্যের মধ্যে রাসায়নিক বা এমন কিছু থাকতে পারে যা ধাপায় ফেললে পরিবেশ দূষিত হতে পারে। তাই সেই কাজ শুরু করেও থামতে হয়েছে পুরসভাকে। অবশেষে পুর প্রশাসন রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে অনুরোধ করেছে ওই বর্জ্যের মধ্যে কী আছে তা পরীক্ষা করে জানানো হোক। তার পরেই ওই বর্জ্য সরানোর কাজে হাত দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার রাজ্য দূষণ পর্ষদের বিশেষজ্ঞেরা বাগড়ি মার্কেট এলাকায় গিয়ে পোড়া বর্জ্যের মধ্যে থেকে আট ধরনের নমুনা সংগ্রহ করেন। ওই বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে ওষুধের বোতল থেকে শুরু করে চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য, পোড়া ও আধপোড়া প্লাস্টিক, ঝুটো গয়না, নানা ধরনের বৈদ্যুতিন বর্জ্য-সহ আরও অনেক কিছু। পুরসভার কর্মীরা বাগড়ির ভিতর থেকে বর্জ্য পরিষ্কার করে এনেও ক্যানিং স্ট্রিটের রাস্তার উপরে জমা করে চলেছেন। পুরকর্মীরা জানাচ্ছেন, মার্কেটের ভিতরে দোকানের মধ্যে, করিডরে সিঁড়িতে এখনও জমে রয়েছে প্রচুর পোড়া ও আধপোড়া জিনিস। সেগুলি তাঁরা বেলচা দিয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে আসছেন। সব এক জায়গায় জড়ো করা হয়েছে।
এক সঙ্গে জমে থাকা ওই বর্জ্য খুবই ক্ষতিকারক বলেই মত দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিশেষজ্ঞদের। এরই মধ্যে মঙ্গলবার বাগড়ি মার্কেটের এক দল প্রতিনিধি পুরভবনে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। মেয়রের কাছে তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল, বাজারের ভিতরে ঢোকা-বেরোনোয় অসুবিধা হচ্ছে, ওই বর্জ্য পরিবেশকেও কলুষিত করছে।
তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরানোর ব্যবস্থা করা হোক।
পুর কমিশনার খলিল আহমেদ জানান, ওই দগ্ধ বাজারের বর্জ্য সরাতে পুরসভার আপত্তি নেই। তবে পরিবেশ সুরক্ষিত রাখতে তার মধ্যে কী আছে জানা দরকার। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, শহরের যে জঞ্জাল ধাপায় ফেলা হয় তা মূলত পরিচিত। কিন্তু বাগড়ির ভিতরে রাসায়নিক থেকে এমন অনেক কিছু বিক্রি হত যাতে বিষাক্ত কিছু থাকতে পারে। আবার কোনও বর্জ্য থেকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আগুনও লাগতে পারে। তাই কী আছে না জেনে, ধাপায় ফেলা ঠিক হবে না।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে তাই বর্জ্যের হালহকিকত জানার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।কবে মিলবে বর্জ্যের বিশদ রিপোর্ট? দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিশেষজ্ঞেরা জানান, শীঘ্রই তা তৈরি করে পুর প্রশাসনকে পাঠিয়ে দেব। আর পুর কমিশনার খলিল আহমেদ জানান, ওই রিপোর্ট পেলেই বর্জ্য সরিয়ে দেওয়া হবে। তেমন ক্ষতিকারক কিছু থাকলে হলদিয়ায় বর্জ্য ফেলার
জায়গায় তা পাঠানো হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রতিনিধিরা জানান, সব বর্জ্য একসঙ্গে না ফেলে আলাদা করা দরকার। তার পরে যেটা পুনর্ব্যবহারযোগ্য হতে পারে সেটুকু নিয়ে বাকিটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসারে পুড়িয়ে ফেলা বা মাটিতে পুঁতে ফেলা প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy