ফাঁকফোকর: কন্টেনমেন্ট জ়োনেও এলাকা ঠিক মতো ঘেরা নেই। চলছে রিকশাও। বুধবার সন্ধ্যায়, তেঘরিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
মদের দোকান খুলতেই ভিড়ের আগল ভেঙেছিল। শিকেয় উঠেছিল দূরত্ব-বিধি। তার পরে দিন দুয়েক যেতে না-যেতেই জনজীবনকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে জনতা। এরই মধ্যে বুধবার দমদম, বাগুইআটি, কেষ্টপুর, তেঘরিয়া, নাগেরবাজার-সহ বিধাননগর এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেটের বেশ কয়েকটি এলাকায় কিছু দোকানপাট খুলে যায়। ফলে ভিড়ও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।
এ দিন সকালে প্রচুর গাড়ি এবং মোটরবাইক রাস্তায় নেমে পড়ে। দমদম রোড, ভিআইপি রোড, যশোর রোডে গাড়ি চলাচল আতঙ্ক বাড়িয়েছে গৃহবন্দি জনতার। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের মত, কেন্দ্রীয় সরকার রেড জ়োনের গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কন্টেনমেন্ট জ়োন) এবং সাধারণ এলাকার জন্য পৃথক নির্দেশিকা জারি করেছে। তবে বিভ্রান্তি বাড়িয়েছে একক দোকান (স্ট্যান্ড অ্যালোন) এবং বাজারের মধ্যে দোকান খোলা নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা।
প্রসঙ্গত, ওই নির্দেশিকায় মিষ্টি, চা, পান-বিড়ির দোকান-সহ বেশ কিছু দোকানকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে তার থেকেও এ দিন বেশি আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাস্তার ভিড়। অধিকাংশ জায়গায় দূরত্ব-বিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। পুলিশকে তেমন ভাবে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে সুযোগ বুঝে ফাঁদ পাতছে সাইবার প্রতারকেরা
কেষ্টপুরের সমরপল্লি, সুকান্তপাড়া এবং প্রফুল্লকানন এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন। সোম এবং মঙ্গলবার সমরপল্লি, সুকান্তপাড়া এবং লাগোয়া বারোয়ারিতলার বাজার বন্ধ ছিল। এ দিন বাজার খুলতেই ভিড় ভেঙে পড়ে। আনাজ, মুদিখানা, ওষুধের পাশাপাশি পান-বিড়ি, চা এবং ছোটখাটো অন্য দোকানও খুলে যায়। কেষ্টপুর মেন রোড এবং ভিআইপি রোডে প্রচুর গাড়ি চোখে পড়েছে। কোনও কোনও গাড়িতে তিন জনের বেশি যাত্রীও ছিল। রেড জ়োনে মোটরবাইকে চালক ছাড়া কোনও আরোহী থাকার কথা নয়। কিন্তু বেশির ভাগ বাইকে দু’জন, কোনও ক্ষেত্রে তিন জন আরোহীও দেখা গিয়েছে।
নির্দেশ জারি হতে এ দিন বেশ কিছু দোকান খুলেছে দমদম পার্ক, বাঙুর ও লেক টাউন এলাকায়। লেক টাউনের বি ব্লক এবং দক্ষিণদাঁড়ি এলাকা গণ্ডিবদ্ধ। দমদম পার্ক এবং বাঙুরও কন্টেনমেন্ট জ়োন। নাগেরবাজার সংলগ্ন গোরক্ষবাসী রোড, কাজিপাড়া, ডায়মন্ড সিটি, তেঘরিয়া, চিনার পার্কের বিস্তীর্ণ জায়গাও গণ্ডিবদ্ধ এলাকা। সেখানে এ দিন সকালে এত ভিড় হয় যে, অনেকেই আতঙ্কে বাড়ি ফিরে যান।
তাঁদেরই এক জন গোরক্ষবাসী রোডের বাসিন্দা শ্যামল সরকার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো নিয়ম মেনে বাড়িতেই থাকছি। কিন্তু জরুরি প্রয়োজনে সপ্তাহে এক দিন তো অন্তত বেরোতে হবে। অথচ বারান্দা থেকে দেখছি, কিছু মানুষ রোজ বাজারে এসে হয় একটা পাউরুটি অথবা এক প্যাকেট দুধ কিনে বাড়ি ফিরছেন। চা খেতেও বেরোচ্ছেন অনেকে। অগত্যা আমি ফিরে এলাম। অনলাইনেই কেনার চেষ্টা করব।’’ নাগেরবাজার থেকে দমদম স্টেশন পর্যন্ত দমদম রোড এলাকায় এখনও পর্যন্ত করোনা-আক্রান্ত কারও সন্ধান মেলেনি। সেখানে বাজার সরানো থেকে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ দিন ওই রাস্তায় এত গাড়ি চলাচল করেছে যে, আতঙ্ক ছড়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, গণ্ডিবদ্ধ এবং সাধারণ এলাকায় যে নির্দেশিকা রয়েছে, তার নজরদারি যথাযথ হচ্ছে। যদিও জনতার অভিযোগ, পুলিশি নজরদারি আচমকা ঢিলে হয়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘সরকারি নিয়মে কিছু দোকান খুলেছে। বেশ কিছু অফিসও চালু হয়েছে। তার ফলে গাড়িচালক এবং আরোহীরা কেউ দোকানে যাচ্ছেন, কেউ অফিসে। তাঁদের কী ভাবে আটকাব?’’ কিছু ক্ষেত্রে তাঁরা যে অসহায়, তা প্রকারান্তরে মেনে নিয়েছেন পুলিশকর্তারা।
আরও পড়ুন: আতঙ্কে ‘হেনস্থা’ হাসপাতালের কর্মীদেরও
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy