Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

‘বার কোডে’ ধাঁধা, রেশন পেতে সমস্যা কলকাতাতেও!

কলকাতা পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এমনই দেড়শোটি পরিবারের প্রায় ছশো সদস্যের দাবি, তাঁদের প্রত্যেকের কাগজের রেশন কার্ড ছিল। পরে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হলে সেই কার্ড বাতিল হয়ে যায়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২০ ০৩:২৮
Share: Save:

আবেদন করার পরে আট মাস পেরিয়ে গেলেও হাতে আসেনি ডিজিটাল রেশন কার্ড। স্থানীয় পুর-প্রশাসনের তরফে মিলেছে স্রেফ ‘বার কোড’ ছাপা এক টুকরো কাগজ! তা দেখিয়ে অবশ্য মিলছে না কিছুই। টানা লকডাউনের মধ্যে এ বার বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়।

কলকাতা পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এমনই দেড়শোটি পরিবারের প্রায় ছশো সদস্যের দাবি, তাঁদের প্রত্যেকের কাগজের রেশন কার্ড ছিল। পরে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হলে সেই কার্ড বাতিল হয়ে যায়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁরা। কেউ বা আবেদন করেন তারও আগে। এর পরে স্থানীয় পুর-প্রশাসন তাঁদের একটি করে বার কোড ছাপানো কাগজ ধরায়। কিন্তু বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও কার্ড আসেনি। এখন টানা লকডাউনে রেশন-সামগ্রী পেতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। কাজে লাগছে না বার কোডও। ফলে কেউ থাকছেন আধপেটা খেয়ে, কাউকে আবার নির্ভর করতে হচ্ছে পুলিশ, স্থানীয় নেতা বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া খাবারের উপরে।

গত কয়েক দিনে একই রকম একাধিক অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন, কাউকেই অভুক্ত রাখা হবে না। সকলের জন্য রেশন-সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ, সদ্য মেয়াদ উত্তীর্ণ কলকাতা পুর বোর্ডের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটরের অভিযোগ, তিনি দলের নেতা সুমন সিংহের কাছে গেলে স্রেফ অপেক্ষা করতে বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ওই ওয়ার্ডের গোবিন্দ পাল লেনের বাসিন্দা, ভুক্তভোগী সঙ্গীতা দাস কয়েকটি বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর কাজ বন্ধ। একই ভাবে টানা লকডাউনে বন্ধ স্বামী শ্রীকান্তবাবুর চায়ের দোকানও। ওই দম্পতির দুই মেয়ে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সঙ্গীতার কাছেই থাকেন তাঁর মা, ষাটোর্ধ্ব সুচিত্রা মণ্ডল। সঙ্গীতা বলেন, ‘‘এর পরে খাব কী! পুরনো কার্ড দেখিয়েও রেশন দিচ্ছে না। স্থানীয় পুর অফিসে গেলেও আমাদের সঙ্গে দেখা করা হচ্ছে না।’’

অনেকেরই দাবি, অন্য বহু ওয়ার্ডে বার কোড দেখে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ন্যায্য দাবিদার ধরে নিয়ে নিজেরাই রেশন পাইয়ে দিতে টোকেন দিচ্ছেন ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর। কিন্তু সুমনের কার্যালয়ে গেলে বলা হচ্ছে, ‘সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে কার্ডের খোঁজ করুন’। এক ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা, সরকারি ওয়েবসাইটে কার্ডের অ্যাপ্লিকেশন নম্বর বসিয়ে খোঁজ করলে দেখাচ্ছে, যে কার্যালয়ে ডিজিটাল কার্ডের আবেদনপত্র জমা করেছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সেখান থেকে তাঁর নথি অনলাইনে তোলাই হয়নি! প্রশ্ন উঠছে, তবে কি বরো অফিস বা কো-অর্ডিনেটরের অফিস থেকে আবেদনপত্র পুরসভার ঘরে পৌঁছয়নি? তা হলে বার কোড দেওয়া হল কী ভাবে?

সুমন এ ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট উত্তর দেননি। তাঁর কথায়, ‘‘কাজ বন্ধ ছিল, সব নথি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ও সব এখন ছাড়ুন। কী ভাবে সকলের কাছে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যায়, সেটা দেখছি।’’

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বললেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকেই এই সমস্যা মিটে যাবে। নতুন অ্যাপ চালু করা হচ্ছে। বার কোড দিয়ে গ্রাহক নিজেই টোকেন নামাতে পারবেন। তবে এক জন একাধিক বার আবেদন করলে কিন্তু রেশন কার্ড বাতিল হয়ে যাবে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy