প্রয়াস: পুলিশের পক্ষ থেকে মাস্ক বিলি। মঙ্গলবার, হাওড়ার বঙ্গবাসী মোড়ের কাছে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
ঠিক এক বছর আগের চিত্র ফিরে এল হাওড়ায়। মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের করোনা সর্ম্পকে সচেতন করতে ভ্যানে চেপে মাইকে প্রচার করতে নামতে হল হাওড়া সিটি পুলিশকে। কিন্তু তাতে সচেতন হলেন ক’জন? সকাল থেকে পুলিশের প্রচার সত্ত্বেও প্রায় মাস্কহীনই রইল মঙ্গলাহাট।
মঙ্গলবার ছিল হাওড়ার মঙ্গলাহাট বসার দ্বিতীয় দিন। সকাল থেকে হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা ভিড় জমিয়েছিলেন হাওড়া ময়দান সংলগ্ন বঙ্গবাসী মোড়-সহ ১১টি হাট ভবনে। হাওড়ায় ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের কথা চিন্তা করে এ দিন সকাল ৭টা থেকেই ফের করোনা-বিধি নিয়ে সচেতনতার প্রচারে নেমে পড়েছিল হাওড়া সিটি পুলিশ। হাওড়া থানার পক্ষ থেকে কিছু মাস্কও বিলি করা হয়। মঙ্গলাহাটে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে, এমনকি অন্য রাজ্য থেকেও হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতা জড়ো হন। এত মানুষের ভিড় যে করোনা দ্রুত ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়, তা বলাই বাহুল্য। এ দিন সকাল থেকেই পুলিশ টোটোয় মাইক লাগিয়ে প্রচার এবং মাস্ক বিলি করলেও মঙ্গলাহাটে অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও ক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। মানা হয়নি দূরত্ব-বিধিও। এর ফলে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে হাওড়া প্রশাসন।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘মঙ্গলাহাটের ভিড় হাওড়ায় করোনা সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার করে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের উচিত গত বছরের কথা চিন্তা করে করোনা-বিধি মেনে চলা।’’
বর্তমানে মঙ্গলাহাট ১১টি ভবনে বসে। এ ছাড়াও, হাজার হাজার ব্যবসায়ী ফুটপাতে জামাকাপড় নিয়ে বসেন। অভিযোগ, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে বহু বছর ধরেই রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে জামাকাপড়ের এই ব্যবসা চলে আসছে। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত বছর ২৪ মার্চ থেকে মঙ্গলাহাট বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। প্রায় ছ’মাস বন্ধ থাকার পরে গত সেপ্টেম্বর মাসে পুজোর আগে চালু হয় মঙ্গলাহাট। অভিযোগ, প্রথম দিকে করোনা-বিধি মেনে হাটে কেনাবেচা হলেও ধীরে ধীরে সবই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ আকার নেওয়ার আশঙ্কায় পুলিশ সক্রিয় হলেও এ দিন হাট ব্যবসায়ী সংগঠনের কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। দেখা যায়নি হাটের ভবনগুলিতে মাস্ক বা স্যানিটাইজ়েশন টানেলের ব্যবস্থাও।
মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সম্পাদক কানাই পোদ্দার বলেন, ‘‘করোনা-বিধি কী ভাবে মানা যায়, তা নিয়ে আবার প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরে, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করে, দূরত্ব-বিধি বজায় রেখেই যাতে মঙ্গলাহাট চালানো যায়, তা দেখতে হবে।’’
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, হাওড়ায় গত ২২ মার্চ নতুন করে ২৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ২২ জনই হাওড়া পুরসভা এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে ৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। এ দিকে, এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিকের ভিডিয়ো বৈঠকে ঠিক হয়েছে, হাওড়ায় যে সব হাসপাতালকে গত বছর কোভিড হাসপাতাল করা হয়েছিল, সেগুলিকে ফের প্রস্তুত করা হবে। নির্বাচন মিটে যাওয়ার পরে করোনার সংক্রমণ বাড়লেই যাতে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা যায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy