Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Corona

রেলকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে করোনা, বাতিল একাধিক ট্রেন

সোমবার রাত পর্যন্ত হাওড়া এবং শিয়ালদহ ডিভিশন মিলে প্রায় ৬০ জন গার্ড এবং চালক সংক্রমিত হয়েছেন।

বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি। বারাসত স্টেশনে।

বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি। বারাসত স্টেশনে। ছবি: সুমন বল্লভ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫১
Share: Save:

রাজ্যে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বেসামাল অবস্থা রেলের। দৈনিক পরিষেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা রেলকর্মীদের মধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে। আর তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবায়। সোমবার, সপ্তাহের প্রথম দিনেই শিয়ালদহ ডিভিশনে কম-বেশি ৩০ জোড়া লোকাল ট্রেন বাতিল হয়েছে। ট্রেন বাতিল হয়েছে হাওড়া ডিভিশনেও। যাত্রীদের অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরে দিনে গড়ে ১০-১২ জোড়া ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে হাওড়া ডিভিশনে।

সোমবার রাত পর্যন্ত হাওড়া এবং শিয়ালদহ ডিভিশন মিলে প্রায় ৬০ জন গার্ড এবং চালক সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়াও দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বিভিন্ন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে বসা কর্মী, আরপিএফ এবং সাফাই কর্মীদের মধ্যে। ইতিমধ্যে শিয়ালদহে বি আর সিংহ হাসপাতাল এবং হাওড়ার অর্থোপেডিক হাসপাতালে শয্যার আকাল দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত রেলকর্মীদের শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী অনেককেই বাড়িতে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর এরই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে লোকাল ট্রেন পরিষেবায়।

এ দিন বাতিল হওয়া ট্রেনের মধ্যে রয়েছে ব্যারাকপুর, নৈহাটি, হাবড়া, দত্তপুকুর, কল্যাণী সীমান্ত এবং ক্যানিং লোকাল। তবে এখনও পর্যন্ত দুপুরের দিকে, অর্থাৎ তুলনামূলক ভাবে কম ব্যস্ত সময়ে বেশি সংখ্যক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে ব্যস্ত সময়ের পরিষেবাতেও টান পড়তে শুরু করেছে বলে অভিযোগ রেলযাত্রীদের। এ দিন সকালের ডানকুনি, ব্যারাকপুর এবং দমদম ক্যান্টনমেন্ট লোকাল বাতিল হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ দিকে, চালক এবং গার্ডদের সংক্রমণের জেরে ট্রেনের সংখ্যা কমতে থাকলেও যাত্রী সংখ্যা অবশ্য খুব একটা কমেনি। ফলে ভিড়ে ঠাসাঠাসি করেই যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। প্রবল ভিড় হচ্ছে সোনারপুর, ক্যানিং, বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার, বারাসত, বনগাঁ লোকালে। ফলে ফের নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

অতিমারি আবহে রেলের দফতরগুলিতে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ শুরু হলেও পরিষেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কর্মীদের নিয়মিত কাজে যোগ দিতে হচ্ছে। সে জন্য অনেককেই ভিড় ট্রেনে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফলে রেলকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে। অনেক সময়ে ভিড় এড়াতে রেলকর্মীদের অনেকে ট্রেনচালক বা গার্ডের কামরায় উঠে পড়ছেন বলে অভিযোগ। বিশেষত সন্ধ্যার পরে একাধিক লোকাল ট্রেনে চালক বা গার্ডের কামরায় ৪-৫ জন রেলকর্মী উঠছেন বলে অভিযোগ। যার জেরে চালক এবং গার্ডদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ছে বলে মত চালকদের একাংশের।

পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে সম্প্রতি চালক, গার্ড-সহ প্রথম সারির রেলকর্মীদের সুরক্ষার স্বার্থে বিশেষ যন্ত্র কেনা হয়েছে। রেলকর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আগে এবং পরে ওই যন্ত্র ব্যবহার করে নিঃশ্বাসের সঙ্গে বাষ্প টেনে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে আদতে সংক্রমণ কতটা ঠেকানো সম্ভব, তা নিয়েই সংশয় রয়েছে। রেলকর্তাদের একাংশের মতে, পরিষেবা চালু রাখতে এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে রেলের ট্র্যাফিক বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গার্ড এবং চালকেরা যে রানিং রুম ব্যবহার করেন, তা নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন। কাজ থেকে ফিরে তাঁরা যে সব বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নেন, তা-ও জীবাণুমুক্ত রাখা দরকার। এ জন্য নিয়মিত ব্যবধানে ওই সব ঘর জীবাণুমুক্ত করা জরুরি। মোটরম্যানের ক্যাবে রেলকর্মী এবং আধিকারিকদের ওঠা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। তা না-হলে সংক্রমণ রোখা যাবে না। পরিষেবা খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে পড়বে।’’ রেলকর্তাদের অবশ্য দাবি, পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চালক এবং গার্ডদের কামরা ছাড়াও লোকাল ট্রেনের কামরা জীবাণুমুক্ত করার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Coronavirus in West Bengal COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy