—ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত হাওড়া জেলা হাসপাতাল বন্ধ করে দিল প্রশাসন। স্থির হয়েছে, কয়েক দিন ধরে ওই হাসপাতালের সমস্ত ওয়ার্ড জীবাণুমুক্ত করার পরে তা পুরোপুরি ভাবে চালু করা হবে। এ দিকে হাওড়াকে ‘হটস্পট’ ঘোষণা করার পরেই করোনা পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সব চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী করোনা-আক্রান্তের সংস্পর্শে আসছেন, তাঁদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ সরবরাহ করা হবে।
সাত দিন আগে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের পদে যোগ দেওয়া বীরেন্দ্রপ্রসাদ সাউকে সরিয়ে বুধবার রাতারাতি আগের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাসকে ফিরিয়ে আনা হয়। বৃহস্পতিবার তিনি কাজে যোগ দিয়ে জানিয়েছেন, জীবাণুমুক্ত করা শেষ হলে হাওড়া জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও ফিভার ক্লিনিক অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি বিভাগ আস্তে আস্তে চালু করা হবে।
গত কয়েক দিন ধরেই ওই হাসপাতাল থেকে রোগী সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছিল। বুধবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জরুরি বিভাগ। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় মূল ফটকে। বৃহস্পতিবার ভবানী বলেন, ‘‘জেলাশাসকের অনুমতি নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতাল আজ
থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই হাসপাতালটি পুরোপুরি চালু করা হবে।’’
হাওড়া পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে করোনা সন্দেহে রোগী-ভর্তির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে কয়েক জন চিকিৎসক ও আধিকারিককে হাওড়ায় আনা হয়েছে। এ দিন তাঁদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন নতুন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাওড়া হাসপাতালে ৮৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৪৪ জনই কোয়রান্টিনে চলে গিয়েছেন। বাকিদের মধ্যে অধিকাংশ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ছুটি নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন। আতঙ্ক ছড়িয়েছে সকলের মধ্যে। ফলে জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এ জন্য ঠিক হয়েছে, প্রতিষেধক হিসেবে কোয়রান্টিন কেন্দ্র-সহ সব হাসপাতালে করোনা সন্দেহে ভর্তি হওয়া রোগী এবং চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ দেওয়া হবে। করোনা রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কতটা সাবধানতা নিতে হবে, তা জানাতে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবিরও করা হবে। ভবানীদেবী বলেন, ‘‘হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে ওই ওষুধ দেওয়া হবে। চিকিৎসক পরীক্ষা করে প্রয়োজন মনে করলে তবেই তা দেওয়া হবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা-যুদ্ধে প্রথম সারিতে রয়েছেন যাঁরা, অর্থাৎ পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী, মর্গের কর্মী, পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সচালক প্রমুখদের প্রয়োজনে ওই ওষুধ দেওয়া হবে।
এ দিকে ‘হটস্পট’ বলে চিহ্নিত এলাকাগুলিতে, বিশেষত যে সব জায়গায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে সেখানে বিশেষ স্বাস্থ্য শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই শিবিরগুলিতে চিকিৎসকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন এবং করোনা নিয়ে তাঁদের সচেতন করবেন। এ দিন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজবল্লভ সাহা লেনে এমনই একটি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করে পুরসভা। গত মাসের শেষ দিকে সেখানেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy