প্রতীকী ছবি।
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করার পরে রবিবার বিকেলে একসঙ্গেই বাড়ি ফিরছিলেন একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী দম্পতি। আবাসনে ঢোকার মুখে বাসিন্দারা গেট বন্ধ করে দিলেন তাঁদের সামনে। বক্তব্য, ওই দম্পতি যে হাসপাতালে কাজ করেন, সেখানে করোনা-রোগীদের চিকিৎসা চলছে। সেই রোগীদের পরিষেবা দিতে গিয়ে অসাবধানতাবশত আক্রান্ত হয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মীও। তাই আবাসনে তাঁদের থাকা হবে না! পড়শি আবাসিকেরা যখন এই নিদান শোনাচ্ছেন, তখন বাড়িতে মা-বাবার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছে পাঁচ বছরের শিশু সন্তান।
চিনার পার্ক সংলগ্ন ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রবিবার বিকেল থেকে সোমবার পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসবাসকারী তাঁদের কর্মীরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। কর্মীদের বাড়ি ঘেরাও, হাসপাতালের কিচেন সেন্টারে বিক্ষোভ, এক জন নার্সকে ধাক্কা মেরে বার করে দেওয়া— কিছুই বাদ যায়নি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও এনেছে।
রবিবার ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার রোগী ও এক জন কর্মীর করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ ধরা পড়ে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসায় এ দিন এক চিকিৎসক, এক জন নার্স এবং দু’জন ফ্লোর ম্যানেজারের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টও পজ়িটিভ হয়েছে। ওই হাসপাতালে এখন সাত দিনের জন্য রোগী ভর্তি বন্ধ রেখে গোটা চত্বর জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর আবেদন না মেনে ফি বৃদ্ধি বেশ কিছু স্কুলে
একটি হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ পাঁচ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ার পরেও মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার অঙ্গীকার থেকে কেউ পিছু হটার কথা ভাবেননি। কিন্তু সেই ভাবনায় প্রভাব ফেলেছে একের পর এক অনভিপ্রেত ঘটনা। হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রশান্ত শর্মা জানিয়েছেন, লকডাউনের জেরে পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয়, তার জন্য বাগুইআটি থানা এলাকার দু’টি আবাসন ও রাজারহাটের নারায়ণপুরে কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। রেকজোয়ানিতে ২৫০ জন কর্মীর খাবার তৈরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানান, এ দিন সকালে সেখানে খাবারের গাড়ি আটকান স্থানীয়েরা। নারায়ণপুরের যে আবাসনে কর্মীরা রয়েছেন, সেখান থেকে তাঁদের তুলে দিতে স্থানীয়েরা একত্রিত হয়ে ঝামেলা করেছেন। হলদিরামের কাছে এক আবাসনেও তিনটি ফ্ল্যাটে ওই হাসপাতালের কর্মীরা রয়েছেন। ভিন্ রাজ্যের এক নার্সকে সেখান থেকে ধাক্কা মেরে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হেনস্থার শিকার ওই নার্স কর্তৃপক্ষকে ফোন করে সাহায্য চান।
আরও পড়ুন: বরাহনগরে ‘কোর’ এলাকায় ফোন নম্বর-সহ লিফলেট
ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানান, নারায়ণপুরে সমস্যার সমাধান করেন বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়। প্রশান্তের কথায়, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য পেয়েছি। কিন্তু মানুষের সেবায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেও এমন ব্যবহার পাব, আশা করিনি।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy