Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

পারিবারিক বিবাদে অস্ত্র করোনা, বধূ ‘নির্যাতিতা’

নাইসেডের ওই কর্মীর অভিযোগ, তাঁর থেকে পরিবারের লোকজন সংক্রমিত হতে পারেন, এই অজুহাতে তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০২:৪০
Share: Save:

বেলেঘাটার নাইসেডের কর্মী। রক্তের নমুনা এলে তা সংগ্রহ করে খাতায় নথিভুক্ত করা ও নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো, তাঁর সঙ্গে করোনার যোগাযোগ বলতে এতটুকুই। এমন এক মহিলাকে বাড়ি থেকে মারধর করে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতারও করেছে নরেন্দ্রপুর থানা। নাইসেডের ওই কর্মীর অভিযোগ, তাঁর থেকে পরিবারের লোকজন সংক্রমিত হতে পারেন, এই অজুহাতে তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে।

করোনার পরিবেশে চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী তো বটেই, যাঁরা অতিমারির চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন, এমন মানুষেরাও হেনস্থার শিকার হয়েছেন। রানাঘাটের বাসিন্দা, বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস বিভাগের কর্মী এক মহিলাকে মাস দেড়েক আগে তাঁর বাড়িতে ঢুকতে বাধা দিচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। বিধাননগরের একটি হাসপাতালের এক ডাক্তার ও কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মীর থাকার জায়গায় স্থানীয় লোকজন ইট ছুড়ে কাচ ভেঙে দেন। কারণ ওই হাসপাতালে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।

নরেন্দ্রপুরের ঘটনায় পুলিশের দাবি, এ ক্ষেত্রে পারিবারিক বিবাদের শিকার হয়েছেন ওই মহিলা। অজুহাত হিসেবে করোনার সংক্রমণের আশঙ্কাকে মহিলার বিরুদ্ধে হাতিয়ার করার চেষ্টা হয়েছে। মহিলাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তাঁর শাশুড়ি-সহ শ্বশুরবাড়ির পরিজনেদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তাঁকে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে। বুধবার রাতে নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ফরতাবাদ এলাকার বাসিন্দা ওই নির্যাতিতা।

তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। স্বামী অসুস্থ, শয্যাশায়ী। মহিলার অভিযোগ, পুত্রসন্তান না হওয়ায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই তাঁর উপরে নানা অত্যাচার চলছে। শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি তিনি যাতে না পান তাই তাঁকে বাড়ি ছাড়ার জন্য হুমকি ও শাসানি দেওয়া হচ্ছিল বলে তিনি জানান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নাইসেডে কাজ করি। তাই বাড়িতে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে আমাকে মারধর করা হয়। এমনকি আমার দুই নাবালিকা মেয়েকেও হেনস্থা করা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: এক দিনে রাজ্যে আক্রান্ত প্রায় ৩ হাজার, কলকাতায় মৃত ২৭​

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা একাধিক বার থানায় তাঁর শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। শাশুড়ি বৃদ্ধা হওয়ায় সেই সময়ে পুলিশ বাড়িতে গিয়ে তাঁকে সতর্ক করে এলেও তাতে কেউ গুরুত্ব দিত না বলেই মহিলার দাবি। তিনি জানান, করোনার সংক্রমণের অজুহাতে অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে গিয়েছিল।

নির্যাতিতা বলেন, “এত দিন সব সহ্য করেছিলাম। কিন্তু আমার দুই মেয়েকেও ওরা ছাড়েনি। এটা আর মানতে পারলাম না।”

আরও পড়ুন: রাজ্যে ডাক্তার, নার্স পদে এ বার সরাসরি নিয়োগ

নরেন্দ্রপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার মেয়েদের ছবি গোপনে তুলে তা এলাকায় ভাইরাল করে দেওয়া হয়েছে। যে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত নির্যাতিতার শ্বশুরবাড়ির এক আত্মীয়। তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় নির্যাতিতার শ্বশুরবাড়ির একাধিক লোক জড়িত বলে মনে করছে পুলিশ। তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, নির্যাতিতার ঘরের জলের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Woman Domestice Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy