—ফাইল চিত্র।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। তবু এখনও পুর এলাকায় কোভিড দেহ দাহ করার জন্য নেই নির্দিষ্ট শ্মশান। দূরদূরান্তের যে সমস্ত শ্মশানে ওইসব দেহ পাঠানোর কথা, সেখানে চুল্লি খারাপ হলে ব্যাহত হচ্ছে কাজ। ফলে সৎকারের আগে কখনও দু’দিন, কখনও বা তিন দিন ধরে কোভিড দেহ পড়ে থাকার অভিযোগ উঠছে বিধাননগর, রাজারহাট-নিউ টাউন এলাকার হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিতে।
বিধাননগর, রাজারহাট-নিউ টাউন পুর এলাকায় মৃতদেহ সৎকারের জন্য আজ পর্যন্ত কোনও শ্মশান গড়ে ওঠেনি। অতিমারি পরিস্থিতির আগে ওই এলাকার মৃতদেহ কলকাতার বিভিন্ন শ্মশানে আসত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কলকাতা পুর এলাকার শ্মশানগুলি আর অন্য পুর এলাকার মৃতদেহের চাপ নিতে পারছে না। যে কারণে মাসখানেক আগে কলকাতা পুরসভার তৎকালীন প্রশাসক খলিল আহমেদ জানিয়েছিলেন, রাজারহাট-নিউ টাউন এবং বিধাননগর পুর এলাকার কোভিড মৃতদেহের সৎকার খড়দহ, কামারহাটি-সহ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন শ্মশানে করা হবে।
বর্তমানে কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে উত্তর ২৪ পরগনায়। ফলে গোটা জেলার কোভিড মৃতদেহ সৎকারে হিমশিম খাচ্ছে সেখানকার শ্মশানগুলি। এই পরিস্থিতিতে বিধাননগর ও রাজারহাট-নিউ টাউন পুর এলাকা থেকে আসা মৃতদেহগুলি অতিরিক্ত মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাগাড়ে কাজ করতে গিয়ে ওই সব শ্মশানের চুল্লি খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলেও অনেক সময়েই ব্যাহত হচ্ছে কাজ। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই সৎকারে দেরি হচ্ছে।
যেমন রাজারহাটের সিএনসিআই কোভিড হাসপাতালে কোনও কোভিড মৃতদেহ দু’-তিন দিন ধরে পড়ে থাকার অভিযোগ উঠেছে। পার্ক সার্কাসের অসিতকুমার ঘোষের এক আত্মীয় মঙ্গলবার কোভিডে মারা যান।
অসিতের অভিযোগ, ‘‘সে দিন দুপুরে মৃতদেহ নিয়ে যেতে বলেছিল হাসপাতাল। পরে বলা হয়, দেহ বুধবার রাতে ছাড়া হবে। অনেক কষ্টে এক পরিচিতের মাধ্যমে সে রাতেই দেহ বার করে বাগমারি কবরস্থানে নিয়ে যাই। কিন্তু ওই হাসপাতালেই দেখেছি, মৃত্যুর পরে দেহ সৎকার করতেই তিন দিন লেগে যাচ্ছে।’’
রাজারহাটের ওই হাসপাতালের সুপার সুজয় কৃষ্ণ এই সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে কোন শ্মশানে দেহ যাবে, তা স্থির করে জেলা প্রশাসন। এখান থেকে মৃতদেহ বসিরহাট, বাদুড়িয়া, হালিশহর, গাড়ুলিয়া, বরাহনগর, ভাটপাড়া, খড়দহ ইত্যাদি শ্মশানে যায়। কিন্তু নাগাড়ে কাজ করতে করতে ওই সব শ্মশানের কোনও না কোনও চুল্লি খারাপ হচ্ছে। ওই সমস্ত শ্মশানের থেকে সময় নিয়ে তবেই দেহ সৎকারের জন্য যায়। কিন্তু চুল্লি খারাপ থাকায় দেহ হাসপাতাল থেকে বেরোতেই দু’দিন সময় লাগছে।’’
বিধাননগর পুরসভার প্রশাসক কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘এর জন্য কেউ দায়ী নয়। প্রতিদিন কোভিডে এত মৃত্যু হচ্ছে যে, সবটাই ব্যাহত হচ্ছে। গাড়ুলিয়া, নৈহাটি-সহ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন শ্মশান থেকে যখন যেমন সময় দিচ্ছে তেমন ভাবেই বিধাননগর পুরসভা থেকে কোভিড দেহ নিয়ে শ্মশানে যাওয়া হচ্ছে। বিধাননগরে খালপাড়ে শ্মশান তৈরি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয়দের আপত্তিতে তা হয়নি।’’
তবে রাজারহাটে কোভিড শ্মশান তৈরির জন্য ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজারহাটে নতুন কোভিড শ্মশান নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ডিপিআর বানিয়ে অনুমোদনের জন্য গিয়েছে। চার বৈদ্যুতিক চুল্লির শ্মশান নির্মিত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy