প্রতীকী ছবি।
থানার বাইরে গাড়ি রাখার জায়গায় টেবিল-চেয়ার পেতে বসে আছেন পুলিশকর্মীরা। বিচারপ্রত্যাশীরা এসে সেখানেই কথা বলছেন আধিকারিকদের সঙ্গে। অভিযোগ দায়ের করার থাকলে সেখানেই সারা হচ্ছে সেই পর্ব। কিন্তু থানার ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে।
থানার সেরেস্তায় বসে ডিউটি করছেন পুলিশকর্মীরা। পাশাপাশি বসা দুই পুলিশকর্মীর মাঝে কাচের দেওয়াল। ভিতরে অফিসারদের ঘরে প্রত্যেকের ডেস্ক কাচ দিয়ে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ কারও সংস্পর্শে আসতে না পারেন।
উপরের দুই চিত্র কলকাতা পুলিশের দু’টি থানার। প্রথমটি কসবা, দ্বিতীয়টি তারাতলা। করোনার সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই এমন ব্যবস্থা করে নিয়েছেন সেখানকার কর্মী-আধিকারিকেরা।
লালবাজারের কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করছেন পুলিশকর্মীরা। লকডাউনের শুরু থেকে পুলিশকর্মীদের কাজের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে কি না, লোকজন মাস্ক পরছেন কি না, সবই নজরে রাখতে হচ্ছে পুলিশকে। এর পাশাপাশি কন্টেনমেন্ট জ়োনে টহল দেওয়া, মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়া থেকে লকডাউন কার্যকর করা, সেই সব দায়িত্বও তাদেরই কাঁধে। এর বাইরে প্রতিদিনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কিংবা অপরাধ দমনের কাজ তো রয়েছেই। আর তাতেই সংক্রমণের কবলে পড়ছেন বহু পুলিশকর্মী। করোনার বিপদ ঠেকাতে এ বার তাই নিজেরাই একাধিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন আধিকারিকেরা।
লালবাজার জানিয়েছে, শুক্রবার নতুন করে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে কলকাতা পুলিশের ১৯ জন কর্মী-অফিসারের মধ্যে। যার মধ্যে রয়েছেন কসবা ও রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশকর্মীরা। শুক্রবার পর্যন্ত কলকাতা পুলিশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭১১। তার মধ্যে অবশ্য সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫০০ জনেরও বেশি।
কসবা থানায় বৃহস্পতিবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ন’জন। যার মধ্যে একাধিক অফিসার রয়েছেন। এ নিয়ে ওই থানায় মোট ১৭ জন আক্রান্ত হলেন বলে লালবাজার জানিয়েছে।
এই অবস্থায় কিছু কিছু থানায় প্রতিদিনের ডিউটি সামলানোই নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশের কাছে। সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর থানার ১৩ জন পুলিশকর্মী গত কয়েক সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে আছেন ছ’জন সাব-ইনস্পেক্টর। বাকিরা কনস্টেবল এবং হোমগার্ড। তাঁদের পাশাপাশি দুই অফিসারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সূত্রের খবর, এর ফলে ওই থানার রোজকার কাজ ব্যাহত হয়। প্রতিদিন থানায় তিন শিফটে তিন জন ডিউটি অফিসার থাকেন, যাঁরা মূলত সাব ইনস্পেক্টর। গত কয়েক দিনে ওই থানায় পুলিশকর্মীর ঘাটতি সামাল দিতে অনেকটা বেশি সময় থেকে যেতে বাধ্য হন বাকি চার অফিসার, ওসি এবং অতিরিক্ত ওসি। তাঁদের মধ্যে আছেন এক মহিলা অফিসারও।
বৃহস্পতিবার ওই মহিলা অফিসারও করোনায় আক্রান্ত হন। তবে শুক্রবার সুস্থ হয়ে কয়েক জন কাজে যোগ দেওয়ায় অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। একই সঙ্গে ডিভিশন থেকে পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত এক অফিসারকে।
লালবাজার জানিয়েছে, কয়েক দিন আগে একই অবস্থা হয়েছিল গরফা থানায়। সেখানেও ছ’জন অফিসার-সহ ১৬ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই সময়ে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়ে অবস্থা সামাল দিয়েছিলেন কর্তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকর্মীদের অন্য জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
লালবাজারের কর্তাদের দাবি, আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের মধ্যে সুস্থতার হার অনেক বেশি। এ ছাড়া, প্রায় সর্বত্রই পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশকর্মী রয়েছেন, তাই থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডে প্রতিদিনের কাজ চালিয়ে যেতে অসুবিধা হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy