Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Corona

সপরিবার সংক্রমিত ওসি, করোনা মোকাবিলায় বৈঠকে পুলিশ

ওসি সংক্রমিত হওয়ায় ভোটের কাজ কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় লালবাজারের কর্তারা।

সুরক্ষা: গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে থানার প্রবেশপথ। সোমবার, ভবানীপুর থানায়।

সুরক্ষা: গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে থানার প্রবেশপথ। সোমবার, ভবানীপুর থানায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩১
Share: Save:

অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কলকাতা পুলিশের কর্মীরাও। করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন একের পর এক কর্মী। রবিবারই সংক্রমিত হয়েছেন জোড়াসাঁকো থানার ওসি এবং তাঁর গোটা পরিবার। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার পরে এই প্রথম কোনও থানার ওসি আক্রান্ত হলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অষ্টম ও শেষ দফায় আগামী ২৯ এপ্রিল জোড়াসাঁকো থানা এলাকায় ভোট। তার ঠিক মুখে ওসি সংক্রমিত হওয়ায় ভোটের কাজ কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় লালবাজারের কর্তারা। বর্তমানে ওই ওসি তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গৃহ-পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে সূত্রের খবর। পুলিশকর্মীদের করোনার প্রতিষেধক দেওয়া চালু হওয়ার পরে নিয়ম মেনে দু’টি ডোজ় নিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট ওসি। তার পরেও সংক্রমিত হয়েছেন তিনি। সোমবার কলকাতা পুলিশে আক্রান্ত ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক জনও ইনস্পেক্টরও। এই নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বাহিনীর ৭০ জন সংক্রমিত হলেন।

অন্য দিকে, করোনার এই বাড়বাড়ন্ত যাতে বাহিনীর উপরে প্রভাব না ফেলে, সে জন্য আগে থেকেই সচেষ্ট হয়েছিল লালবাজার। তার পরেও প্রায় রোজই বাহিনীতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থায় সোমবার কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডে।

সূত্রের খবর, রাস্তায় গাড়ি তল্লাশির সময়ে কোনও পুলিশকর্মী যাতে হাতে নথিপত্র না নেন, তার জন্য তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনও কারণে নথি বা টাকা ধরতে হলেও দ্রুত হাত জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গাড়িচালক বা আরোহীদের থেকে পুলিশকর্মীরা যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখেন, সে দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ড জানিয়েছে, জরিমানার টাকা জমা নেওয়ার পরে সেটাও স্যানিটাইজ় করতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অফিসে ঢুকে জরিমানার টাকা জমা দিতে হয়। তাই বাইরে থেকে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে কারণে উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ড-সহ বিভিন্ন গার্ডে অফিসের বাইরে জরিমানার টাকা জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার কতর্ব্যরত সার্জেন্টদের একাংশ জরিমানার টাকা নির্দিষ্ট ব্যাগে ফেলে দিতে বলছেন অভিযুক্ত চালককে।

এ ছাড়াও, এ দিনের বৈঠকে অফিসের কর্মী সংখ্যা প্রয়োজন মতো কমাতে বলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে নির্ভর না করে শুধুমাত্র সরকারি করোনা-বিধি মেনে চলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। পাশাপাশি, ব্যারাকগুলি যাতে জীবাণুমুক্ত করা হয় তার জন্য নিয়মিত সেখানে স্যানিটাইজ়ার স্প্রে করতে বলা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডে পুলিশবাহিনীর সদস্যেরা কেমন আছেন, প্রতি দিন সেই খোঁজ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে ওসিদের।’’

করোনার এই চোখরাঙানির কারণে সাধারণের প্রবেশে রাশ টেনেছে বিভিন্ন থানা। যেমন, ভবানীপুর থানার প্রবেশপথ গার্ডরেল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে তবেই ঢুকতে পারছেন সাধারণ মানুষ। আবার, পোস্তা থানায় প্রবেশের আগে থার্মাল গান দিয়ে দেহের তাপমাত্রা মাপছেন পুলিশকর্মীরা। পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন থানার সঙ্গে রয়েছে ক্যান্টিন। সেখানে পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি বাইরের লোকজনও খেতে আসেন। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার কথা চিন্তা করে গড়িয়াহাট-সহ একাধিক থানা ক্যান্টিনে বাইরের লোক ঢোকার উপরে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Corona COVID-19 Coronavirus in Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy