—ফাইল চিত্র
কয়েক দিন পরেই মেয়ের বিয়ে। করোনা-বিধি মেনেই হবে অনুষ্ঠান। প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ। এর মধ্যেই আচমকা পাত্রীর বাবা কোভিড পজ়িটিভ!
তাল কাটল আনন্দের। চিন্তায় গোটা পরিবার। বিয়ে কি পিছিয়ে যাবে? যদি বিয়ে হয়, তা হলে কি নিমন্ত্রিতেরা আসতে পারবেন? পাত্রীর বাবা আক্রান্ত হওয়ায় বাড়ির বাকিদের কি কোয়রান্টিনে থাকতে হবে? হাজারো প্রশ্ন নিয়ে পাত্রীর পরিজনেরা যোগাযোগ করলেন চিকিৎসকের সঙ্গে।
চিকিৎসক জানালেন, বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার বা সকলের কোয়রান্টিনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে যে ক’জন পাত্রীর বাবার খুব কাছাকাছি এসেছিলেন, বিয়ের তিন-চার দিন আগে তাঁদের করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল। পাত্রপক্ষের যে ক’জন অনুষ্ঠানে খুব কাছাকাছি থাকবেন, তাঁদেরও পরীক্ষা করানো যেতে পারে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বললেন, ‘‘পাত্রী বা পাত্রপক্ষের যে কেউ কোভিডে আক্রান্ত হতে পারেন। তা হলেই অনুষ্ঠানে মন খারাপের পরিস্থিতি তৈরি হবে। বিয়ের মরসুমে এটি একটি বড় সামাজিক সমস্যা।’’
আরও পড়ুন: ‘গুন্ডা’ ইস্যুতে অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলার পথে কৈলাস-পুত্র আকাশ
অরুণাংশুবাবু জানাচ্ছেন, সামাজিক এই ব্যাধি কাটাতে বাছাই করা অতিথি ছাড়া বেশি কাউকে নিমন্ত্রণ না করাই ভাল। আর যাঁরা পাত্র বা পাত্রীর খুব কাছাকাছি আসবেন, তেমন ১০-১২ জন অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে করোনা পরীক্ষা করালে অনেকটা নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। তবে পুরোহিতদের মতো যাঁদের পক্ষে মাস্ক পরে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়, তাঁদের পরীক্ষা করানো একান্ত প্রয়োজন। ওই চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সামাজিক কাজও করতে হবে, করোনাকেও আটকাতে হবে।’’ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী বলছেন, ‘‘এই বিপুল জনসংখ্যার দেশে সকলে করোনা পরীক্ষা করিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকবেন, এটা সম্ভব নয়। সব থেকে ভাল, সমাগম না করে শুধু আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যেই কাজ মেটানো।’’
আরও পড়ুন: থাকলে থাকুন, নইলে লুটেরাদের দলে যান, নাম না করে শুভেন্দুকে বার্তা মমতার
চিকিৎসকদের মতে, করোনা এখন সামাজিক ও মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হচ্ছে। অনির্বাণবাবুর মতে, এই ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে মানুষকে রোগ সম্পর্কে অবহিত করার পাশাপাশি বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে উঠতে হবে। না-হলে করোনা আতঙ্ক ও ত্রাসে পরিণত হবে। করোনা-পরবর্তী সময়ে মানসিক সমস্যা আরও বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন ‘ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি’র অধিকর্তা প্রদীপ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনা চলে গেলেও বিশ্ব জুড়ে মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি হবে।’’
সম্প্রতি ৪৭ বছরের এক ব্যক্তি এসএসকেএমের ওই বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেন। জানা যায়, তাঁর কোভিড হলে পরিবারের সকলে আক্রান্ত হতে পারেন, এমন আশঙ্কায় আত্মহত্যা করতে যান তিনি। প্রদীপবাবুর মতে, করোনার ফলে কিছু মানসিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কোভিড হতে পারে জেনেও কেউ কেউ
ভাবছেন, কখনওই আক্রান্ত হবেন না। আবার শিশু থেকে প্রবীণ, অনেকেই সর্বক্ষণ সংক্রমণের আশঙ্কায় ভুগছেন। ঘনিষ্ঠ কেউ কোভিডে মারা গেলে সেই ক্ষত সারা জীবন বয়ে বেড়ানোর পাশাপাশি ‘পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজ়অর্ডার’-এও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রদীপবাবুর মতে, ‘‘মানসিক সমস্যা কাটাতে প্রতিটি পরিবারের উচিত নিজেরা আলোচনা করে প্রত্যেকের নিজস্ব কাজ ও খেলাধুলোর জগৎ তৈরি করা। যাঁদের সঙ্গে কথা বলতে ভাল লাগে, তাঁদের নিয়ে মোবাইলেও যোগাযোগের মাধ্যম গড়ে তোলা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy