Advertisement
E-Paper

আদালতের রেকর্ড বিভাগে সংক্রমণ, প্রশ্নের মুখে শুনানি 

আদালতে সশরীরে শুনানি চালু থাকলেও সংক্রমণের ভয়ে অধিকাংশ আইনজীবী আদালতমুখো হচ্ছেন না।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০২:২২
Share
Save

করোনা সংক্রমণের জালে ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে আলিপুর ফৌজদারি আদালত। সম্প্রতি করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে ওই আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের গাড়িচালকের। আক্রান্ত হয়েছেন কলকাতা পুলিশের জেনারেল রেকর্ড (জিআর) দফতরের দুই কর্মীও। তার পরেই আইনজীবী, পুলিশকর্মী এবং আদালতের কর্মীদের মধ্যে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।

আলিপুর আদালত সূত্রের খবর, ফৌজদারি আদালতে জিআর দফতর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কলকাতা পুলিশ এলাকার সমস্ত থানার মামলার নথি থাকে সেখানে। বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে প্রতিদিন গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের মামলার নথিপত্র প্রথমে জিআর দফতরে জমা দেন পুলিশকর্মীরা। সেখান থেকে সেগুলি নেন আইনজীবী এবং আদালতের কর্মীরা।

বর্তমানে জেলা বিচারকের নির্দেশ মতো আদালতে সশরীরে শুনানি চালু থাকলেও সংক্রমণের ভয়ে অধিকাংশ আইনজীবী আদালতমুখো হচ্ছেন না। অনেকে হয় হাসপাতালে ভর্তি অথবা গৃহ-পর্যবেক্ষণে আছেন। ফলে মামলার শুনানি কার্যত বন্ধ। কিন্তু অন্য বিচারকদের এজলাসে আইনজীবীরা হাজির না-থাকলেও কলকাতা পুলিশের হাতে প্রতিদিন গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের জামিনের আবেদনের মামলার শুনানিতে হাজির ছিলেন তাঁদের একাংশ। ওই মামলাগুলির শুনানি মূলত হয় মুখ্য বিচারবিভাগীয় এবং অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে। এখন জিআর দফতরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত আইনজীবীদের বড় অংশ।

তাঁদের অভিযোগ, জিআর দফতরে প্রায় কুড়ি জন কর্মী গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে কাজ করেন। দু’জন সংক্রমিত হলেও তাঁদের সংস্পর্শে আসা অন্য কর্মীদের এখনও গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়নি। ওই দফতর জীবাণুমুক্তও করা হয়নি। আক্রান্তদের সঙ্গে থাকা কর্মীরা নিয়মিত অফিসে আসছেন এবং কাজ করছেন। সে ক্ষেত্রে ওই দফতর থেকে মামলার নথি সংগ্রহ করে শুনানিতে অংশ নেওয়া ঝুঁকির হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আলিপুর আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ভাবে আদালত চালু রাখা অত্যন্ত বিপজ্জনক। কোনও রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেই। সংক্রমণের জেরে আদালতের কর্মকাণ্ড কার্যত ভেঙে পড়েছে। অবিলম্বে সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া না-হলে মামলা প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’

অধিকাংশ আইনজীবী জানাচ্ছেন, জিআর দফতরে সংক্রমণ ছড়ানোয় এখন অভিযুক্তদের তরফে কোনও আইনজীবী সেখান থেকে নথি সংগ্রহ করতে রাজি হচ্ছেন না। সরকারি আইনজীবী এবং পুলিশকর্মীরাও ওই দফতরের কর্মীদের এড়িয়ে চলছেন। ফলে অভিযুক্তদের মামলার শুনানি নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। আলিপুর আদালতের আইনজীবী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে যে কোনও সময়ে আদালত বন্ধ করে দিতে হতে পারে। কিন্তু মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক এবং অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে জামিনের আবেদনের শুনানি বন্ধ হয়ে গেলে আইনগত ভাবে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। করোনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলকাতা পুরসভার শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনা করছি।’’

Coronavirus in Kolkata Alipore Court

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}