—ফাইল চিত্র।
হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক কোভিড রোগীর পরিজনেরা। এ বারও কাঠগড়ায় এম আর বাঙুর হাসপাতাল। অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ওই রোগীর শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত কোনও খবরই দেওয়া হয়নি পরিবারকে। পরে হাসপাতাল ফোন করে ওই রোগীকে অন্যত্র পাঠানোর খবর জানালেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যে ফের তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, সেই খবরটুকুও পায়নি পরিবার। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি, ওই রোগীর পরিবারের দেওয়া নম্বরে ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
যাদবপুরের শ্যামাপল্লির বাসিন্দা, বছর ষাটেকের ওই রোগীর পরিবার সূত্রের খবর, গত ২৭ জুলাই করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে ওই ব্যক্তিকে এম আর বাঙুরে ভর্তি করানো হয়েছিল। প্রায় ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষার পরে পরিবারের লোকজন ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পেরেছিলেন। কিন্তু ভোগান্তির সেখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, রোগী-ভর্তির পরে প্রায় ন’দিন হাসপাতালের তরফে তাঁর পরিবারকে কোনও খবরই দেওয়া হয়নি। তার পরে গত ৬ অগস্ট, বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে রোগীর ছেলেকে ফোন করে জানানো হয় যে, শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ওই রোগীকে বাইপাসের ধারে একটি সেফ হোমে পাঠানো হচ্ছে।
কিন্তু তার পরের দিন পর্যন্ত সেই সেফ হোমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ওই রোগীর ছেলে ফোন করেন বাঙুরে ভর্তি থাকা আর এক জন রোগীকে, যিনি তাঁর বাবার পাশের শয্যাতেই ভর্তি ছিলেন। রোগীর ছেলের কথায়, ‘‘বাঙুরে থাকাকালীন এক দিন অজানা একটা নম্বর থেকে ফোন করে বাবা খাবার আনতে বলেছিলেন। সে দিন জেনেছিলাম, ওই ব্যক্তি বাবার পাশের শয্যায় শুয়ে আছেন।’’ তাই গত শুক্রবার উপায় না দেখে প্রথমে সেই ব্যক্তিকে ফোন করলে জানা যায় যে, তাঁকেও ওই সেফ হোমে পাঠিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল। কিন্তু তিনি জানান, যাদবপুরের ওই রোগীকে হাসপাতাল থেকে লোক এসে ফের নিয়ে গিয়েছে।
এ কথা শুনে আরও আতান্তরে পড়েন ওই রোগীর পরিবারের সদস্যেরা। ওই রোগীর ছেলেকে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে হচ্ছিল বলে তিনি বাবার খোঁজ নিতে যেতে পারছিলেন না। ফলে তাঁদের এক আত্মীয় ওই সেফ হোমে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন, ওই রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই আত্মীয় বাঙুর হাসপাতালে পৌঁছে দেখেন, সেখানে ফের ভর্তি হওয়ার জন্য জরুরি বিভাগে বসে রয়েছেন ওই রোগী। পরে ওই দিন রাতের দিকে তাঁকে ফের বাঙুরে ভর্তি করানো হয়। রোগীর ছেলের অভিযোগ, “বাবাকে যে বাঙুরে আবার নিয়ে আসা হয়েছে, সেটাও জানানো হয়নি আমাদের। আমার পিসেমশাই সেফ হোমে না গেলে তো জানতেই পারতাম না বাবা কোথায়!”
যদিও এম আর বাঙুর হাসপাতালের সুপার শিশির নস্করের দাবি, ‘‘এখানে ভর্তি হওয়া সমস্ত কোভিড রোগীর বাড়ির লোককেই ফোনে খবর দেওয়া হয়। ওই রোগীর বাড়ির লোকের নম্বর হয়তো বন্ধ ছিল বা নম্বর ভুল দেওয়া হয়েছিল, তাই যোগাযোগ করা যায়নি।’’ যদিও এ কথা মানতে চায়নি রোগীর পরিবার। সেফ হোম সংক্রান্ত কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি পরিবারকে, এই অভিযোগের উত্তরে শিশিরবাবু বলছেন, ‘‘অনেক রোগী সুস্থ হলেও তাঁদের বাড়ি না পাঠিয়ে কিছু দিনের জন্য সেফ হোমে পাঠানো হচ্ছে। সেফ হোমে পাঠানোর আগে পরিবারকে সেই খবরও জানানো হচ্ছে। কিন্তু তার পরে আর ওই রোগী সংক্রান্ত খবর দেওয়ার কাজ হাসপাতালের নয়।’’
এখানেই শেষ নয়। এম আর বাঙুর হাসপাতালে ফের নিয়ে যাওয়া হলেও ওই রোগীর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাই সেই সময়ে তাঁদের আত্মীয় হাসপাতালে না পৌঁছলে কে রোগীকে ফের ভর্তি করাতেন, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁর পরিজনেরা। যদিও হাসপাতালের তরফে এর কোনও সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy