—ফাইল চিত্র।
উদ্বেগ বাড়িয়ে বিধাননগরে দৌড় অব্যাহত করোনাভাইরাসের। দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর হারও। গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো এ বার সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গিও।
বিধাননগর পুরসভার অবশ্য দাবি, মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণেই আছে। তবে করোনা আবার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হচ্ছে। কিন্তু নিয়ম না মানার প্রবণতা কমছে না। বরং দিনদিন তা বেড়ে চলেছে।
আরও পড়ুন: প্লাজ়মা দিয়ে সুস্থ করতে আক্রান্তদের পাশে পুলিশ
পুরসভা সূত্রের খবর, বিধাননগরে এখনও পর্যন্ত ১১ হাজার ৪২০ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার এখনও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমানে দিনে ১০০ জনেরও বেশি বাসিন্দা আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ, সেপ্টেম্বরেও সংখ্যাটা পঞ্চাশ থেকে সত্তরের মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। তার পরেই গত কয়েক সপ্তাহে হঠাৎ তা বেড়ে যায়। এখনও পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে পুরসভা। গত ১২ নভেম্বর থেকেই এ পর্যন্ত ১২ জন মারা গিয়েছেন।
বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, পুজোর কিছু দিন আগে থেকে ফের নিয়ম না মানার প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। ছটপুজোতেও দেখা গিয়েছে, মাস্ক পরার বা দূরত্ব-বিধি রক্ষা করার ধার ধারেননি অসংখ্য মানুষ। দত্তাবাদে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি জলাশয়ে ছটপুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করেছিল পুর প্রশাসন। বিলি করা হয়েছিল মাস্কও। কিন্তু পুজোর দিন দেখা যায়, মাস্ক পেয়েও অনেকে তা পরার প্রয়োজন মনে করেননি। এমনকি, পুজোর সময়ে দূরত্ব-বিধি মানারও কোনও রকম চেষ্টা দেখা যায়নি। ওই ওয়ার্ডের পুর কোঅর্ডিনেটর নির্মল দত্ত ঘটনার কথা স্বীকার করে জানান, তাঁরা মাস্ক বিলি করেছিলেন। কিন্তু অনেকেই তা পরেননি। শুধু দত্তাবাদ নয়, সল্টলেক, নিউ টাউন ও রাজারহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকেই এসেছে এমন অভিযোগ।
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দোকান-বাজার, গণ পরিবহণ বা খেলার মাঠ— সর্বত্রই একটা গা-ছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে নাগরিকদের একাংশের মধ্যে। করোনা যে এখনও কমেনি এবং সামান্য ঢিলে দিলেই তা যে আবার মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, সেটাই বুঝতে চাইছেন না অনেকে।
বিধাননগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী দাবি করেছেন, সচেতনতার প্রচার লাগাতার চলছে। কিন্তু নিয়ম মেনে চলার ক্ষেত্রে শিথিলতায় কোনও পরিবর্তন আনা যাচ্ছে না। এমনকি, কোভিডে আক্রান্তেরাও সব সময়ে নিয়ম মেনে চলছেন না। অনেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ। কৃষ্ণা বলেন, ‘‘আমাদের অনুরোধ, করোনার প্রতিরোধে শুরু থেকে যে ভাবে সকলে নিয়ম মানার চেষ্টা করেছেন, তা অব্যাহত রাখুন। নিয়ম মেনে নিজে বাঁচুন, সকলকে বাঁচান।’’
এখন আবার করোনার দোসর হয়েছে ডেঙ্গি। খোদ ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর তুলসী সিংহরায়ের ১৪ বছরের সন্তান ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শনিবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ওই কোঅর্ডিনেটর থাকেন চেয়ারপার্সনেরই ওয়ার্ডে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খালে জলের প্রবাহ তেমন না থাকার পাশাপাশি রাস্তায় জমা জল-সহ একাধিক কারণে মশার প্রকোপ বেড়ে এমনটা হচ্ছে। পুরসভার আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য প্রণয় রায় অবশ্য জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে এই সময়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত দেড়শো জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর দাবি, ডেঙ্গি ঠেকাতে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy