Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Food Delivery App

করোনায় ত্রস্ত রসনাও, যুঝতে ‘ছোঁয়াচবিহীন’ ডেলিভারি

ব্যক্তির স্পর্শ এড়ানো গেলেও যিনি খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন, খাবারের প্যাকেটে থাকা তাঁর স্পর্শ এড়ানো যাবে কী ভাবে?

ছোঁয়াচবিহীন ডেলিভারি কী ভাবে, অ্যাপে তারই হদিস।

ছোঁয়াচবিহীন ডেলিভারি কী ভাবে, অ্যাপে তারই হদিস।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০২:৪৫
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একাধিক ভিডিয়ো ঘুরছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি বাড়ির দরজায় কড়া নেড়ে খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিলেন এক যুবক। প্যাকেটটি গৃহকর্তার হাতে তুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই যুবকের শুরু হল প্রবল হাঁচি-কাশি। ধাক্কা মেরে ওই যুবককে বাড়ি থেকে বার করে দিয়ে ঘর সাফসুতরো করার কাজ শুরু করলেন গৃহকর্তা!

করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে এমন ভিডিয়োয় প্রমাদ গুনছে অ্যাপ-নির্ভর খাবার আনানোর সংস্থাগুলি। যে ভাইরাস নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে, যার জেরে প্রায় প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে— সেটি কোনও ভাবে বাইরে থেকে আনানো খাবারের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন ধারণা তৈরি হলে রক্ষা নেই। ওই সংস্থাগুলির বক্তব্য, এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে গত ২০ দিনে খাবারের অর্ডারের সংখ্যা হঠাৎ করেই অনেকটা কমে যাওয়ায়। ফলে তড়িঘড়ি কোনও কোনও সংস্থা প্রচারে নেমেছে এই বলে যে, খাবার তৈরি হওয়ার পরে রেস্তরাঁ থেকে স্রেফ প্যাকেটবন্দি খাবারই তারা এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় পৌঁছে দেয়। প্যাকেটের মধ্যে থাকা খাবারের পাত্র তারা ছুঁয়েও দেখে না। অ্যাপ-নির্ভর একটি সংস্থা জ়োম্যাটো আবার ‘কনট্যাক্টলেস ডেলিভারি’ চালু করার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। সেই পদ্ধতিতে খাবার যিনি পৌঁছে দিচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে যিনি অর্ডার দিয়েছেন, তাঁর দেখা করারই প্রয়োজন নেই।

জ়োম্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা দীপিন্দর গয়াল জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে খাবার পৌঁছে দিতে যাচ্ছেন যিনি, তিনি অর্ডার দেওয়া ব্যক্তির দরজার বাইরে প্যাকেটটি রেখে সেটির একটি ছবি তুলে অ্যাপে দিয়ে দেবেন। অর্ডার দেওয়া ব্যক্তির অনুমতি থাকলে ফোন করে খাবারটি যে তিনি রেখে দিয়ে যাচ্ছেন, সেটি জানিয়ে দিতে পারেন। দীপিন্দরের দাবি, এর মাধ্যমে গ্রাহক খাবার পৌঁছে দিতে যাওয়া ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়াতে পারবেন। কেউ অসুস্থ হয়ে বাড়িতে বিশ্রামে থাকাকালীন খাবারের অর্ডার দিলে তাঁর বা তাঁর পরিবারের সংস্পর্শও একই পদ্ধতিতে এড়াতে পারবেন খাবার পৌঁছে দিতে যাওয়া ব্যক্তি।

যদিও অনেকেরই প্রশ্ন, ব্যক্তির স্পর্শ এড়ানো গেলেও যিনি খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন, খাবারের প্যাকেটে থাকা তাঁর স্পর্শ এড়ানো যাবে কী ভাবে? আর এক অ্যাপ-নির্ভর সংস্থা সুইগি-র পূর্বাঞ্চলীয় শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বললেন, ‘‘সে ভাবে দেখতে গেলে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার যে পাত্রে রয়েছে, সেখান থেকে তরল ঢেলে নিয়ে হাত পরিষ্কার করার আগে তো সেই অপরিষ্কার হাতেই স্যানিটাইজ়ার রাখা পাত্র ধরতে হচ্ছে। হাত পরিষ্কারের পরেও সেই পাত্র আবার ধরতে হচ্ছে ঠিক জায়গায় সেটিকে রাখার জন্য। সে ক্ষেত্রেও তো সংক্রমণের ভয় থেকে যায়! সার্বিক ভাবে সচেতনতার প্রসারের উদ্যোগেই এই পদক্ষেপ।’’ ওই আধিকারিকের এ-ও দাবি, সুইগি-র তরফে এমন কিছু চালুর পরিকল্পনা এখনও নেই। তবে খাবার পৌঁছে দেন যাঁরা, তাঁদের সুবিধার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। অসুস্থ হলে তাঁরা এই সময়ে আর্থিক সহায়তাও পাবেন সংস্থার তরফে।

খাবার আনানোর অ্যাপ-নির্ভর সংস্থার কর্মীরা যদিও জানাচ্ছেন, অসুস্থ হলে তাঁদের বাড়িতে থাকার কোনও সুযোগই নেই। দিনে যত বেশি জায়গায় তাঁরা খাবার পৌঁছে দেন, তার উপরেই তাঁদের আয় নির্ভর করে। তমাল দেবনাথ নামে এমনই এক কর্মী বললেন, ‘‘আমাদের জ্বর হলেও ছুটি নেওয়ার উপায় নেই। বাড়িতে বসে থাকলে তো অ্যাপ বন্ধ রয়েছে ধরে নিয়ে এক টাকাও দেবে না। বাড়ি বসে কাজ করার সব সুযোগ যাঁরা অফিসে বসে কাজ করেন, তাঁদের জন্যই!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Food Delivery App Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy