ফাইল চিত্র
কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে ফের করোনা সংক্রমণ। বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা বিভাগের দুই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি) নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন। এ দিন বিকেলে দু’জনকেই ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে খবর। সেই সঙ্গে লালবাজারের সাইবার শাখার এক মহিলা এএসআই-ও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে এ দিন রিপোর্ট আসে পুলিশের সদর দফতরে। নৈহাটির বাসিন্দা ওই মহিলা পুলিশকর্মীকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
কলকাতা পুলিশে প্রায় প্রতিদিনই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ দিনই পুলিশের আরও ৪৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। এর জেরে বাহিনীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এ দিন বেড়ে দাঁড়াল ১১৮৮। তবে লালবাজার জানিয়েছে, আক্রান্তের থেকে সুস্থ হয়ে ফেরা পুলিশকর্মীর সংখ্যা এ দিন বেশি ছিল। এ দিন সুস্থ হয়েছেন মোট ৫১ জন। যার জেরে বাহিনীতে মোট সুস্থ হওয়া কর্মীর মোট সংখ্যা দাঁড়াল আটশো জন। সুস্থতার হার বাড়লেও লালবাজার এ-ও জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে এমন কোনও থানা বা ট্র্যাফিক গার্ড নেই, যেখানে অন্তত পাঁচ জন করে পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হননি। চলতি মাসেই শোরগোল ফেলেছে কসবা, রবীন্দ্র সরোবর, হেস্টিংস ও চারু মার্কেট থানার করোনা পরিস্থিতি।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত শনি ও রবিবার চারু মার্কেট থানার অন্তত আট জন পুলিশকর্মীর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। যার ফলে ওই থানায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৮। হেস্টিংস থানাতেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে প্রায় ১০। গত সপ্তাহেই সেখানে এক কনস্টেবলের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। মারা গিয়েছেন লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের অফিসার স্তরের এক পুলিশকর্মীও। ফুলবাগান, বেলেঘাটা, বড়তলা, শ্যামপুকুর, বেহালা এবং লেক থানারও অবস্থা এই মুহূর্তে গুরুতর বলে জানাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা।
থানাগুলির পাশাপাশি এই মুহূর্তে লালবাজারের পরিস্থিতিও যে যথেষ্ট চিন্তার, তা এ দিন অস্বীকার করেননি পুলিশকর্তারা। সূত্রের খবর, লালবাজারের ট্র্যাফিক বিল্ডিংয়ে সব স্তরের কর্মী মিলিয়ে অন্তত জনা কুড়ি করোনায় আক্রান্ত। গোয়েন্দা বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ ছাড়িয়ে গিয়েছে। অনেক কর্মীকেই আবার পাঠাতে হয়েছে কোয়রান্টিনে। একই অবস্থা গুন্ডা দমন শাখারও। সেখানে আবার কয়েক জন পুলিশকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠাতে হয়েছে এক ধৃতের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘বড় কর্তাদের বিল্ডিংয়েও কয়েক জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত। তাঁদের সঙ্গেই কাজ করায় এই মুহূর্তে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে সেখানকার প্রায় ১৬ জন কর্মীকে।’’
সাইবার শাখায় এ নিয়ে দু’জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সেখানকার মোট ৭০ জন কর্মীর অনেককেই কোয়রান্টিনে পাঠানোর ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সাইবার শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিশ আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘সপ্তাহে তিন-চার দিন জীবাণুনাশের কাজ চলছে। বড় কর্তারা লালবাজার ভবনে প্রতিদিন উপস্থিত পুলিশকর্মীদের সংখ্যা কমানোর কথা বললেও কিছুই করা যাচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে সাইবার অপরাধের সংখ্যা প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। সাধারণ অভিযোগও অনলাইনে আসছে। ফলে কয়েক দিন কিছু পুলিশকর্মীকে বাড়িতে রেখে কাজ করানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হলেও পরে তা বাতিল করতে হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy