দুটি সংক্রমণ একসঙ্গে হলে তা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। প্রতীকী ছবি
ডেঙ্গি ও করোনার জোড়া ফলাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কামারহাটি পুরসভার কর্তৃপক্ষের। করোনা সংক্রমণ রোধের পাশাপাশি ডেঙ্গিকে কী ভাবে পুরোপুরি মোকাবিলা করা যাবে, তা নিয়েই সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।
যদিও পুর প্রশাসকমণ্ডলীর দাবি, দু’টি রোগের ক্ষেত্রেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর কামারহাটির ৩৫টি ওয়ার্ড মিলিয়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল ৪৪০। এঁদের মধ্যে পাঁচ জন অন্য জায়গা থেকে এসেছিলেন। ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছিল চার জনের। আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল ১৪ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর রেল কলোনি এলাকায়। সেখানে ৮৭ জন আক্রান্ত হন। এ ছাড়াও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩ জন, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ২৬ জন, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। অন্যান্য ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০ ও তার নীচে। অন্য দিকে চলতি বছরে জুন পর্যন্ত কামারহাটিতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে মার্চ মাসে ছ’জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০০।
চিন্তাটা সেই জায়গাতেই বলে মত পুর কর্তাদের। কারণ ডেঙ্গির মরসুম সাধারণত জুন থেকে শুরু হয়ে নভেম্বর পর্যন্ত চলে। অগস্ট-সেপ্টেম্বরে আক্রান্তের সংখ্যাটাও বেশি হয়। ২০১৯ সালে কামারহাটিতে যত জন ডেঙ্গিতে ভুগেছেন তার বেশির ভাগই জুন থেকে নভেম্বরের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেখানে এ বছরের শুরুতেই ১০ জন আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন পুর কর্তারাও। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘সমস্যা তো আছেই। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ডেঙ্গি মোকবিলার কাজও করতে হচ্ছে। আমরা হাল ছাড়ছি না।’’
তিনি জানান, পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা প্রতিদিন ৩৫টি ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাসিন্দাদের জ্বর, জমা জলের খোঁজ নিচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও দেখা দিচ্ছে সমস্যা। করোনা পরিস্থিতিতে এখন বহু বাড়িতেই কর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। গোপালবাবু বলেন, ‘‘অসাবধানবশত অনেকেই ছাদে বা বাগানে জল জমিয়ে রাখেন। সেটা দেখেই সতর্ক করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। যে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, জানতে পেরে আমরা মালিকের সঙ্গে কথা বলছি।’’
‘সুডা’ থেকে মশা মারার কিছু তেল দেওয়া হয়েছে কামারহাটি পুরসভাকে। বিভিন্ন নিকাশি নালায় তা ছড়ানোর কাজও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি এলাকার পুকুর, বড় নর্দমায় এখনও পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে। তবে করোনার ফলে এ বছর আর ডেঙ্গি সচেতনতায় কোনও পদযাত্রা করা সম্ভব নয়। তাই পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, মানুষকে সচেতন করতে ট্যাবলো, অটোর মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে সব থেকে বড় সমস্যা হয়েছে পতঙ্গবিদের পদ ফের খালি হয়ে যাওয়ায়। প্রতি বছর কামারহাটি পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সেখানে এক বছর আগে এক জন পতঙ্গবিদকে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু অন্য চাকরি পেয়ে তিনি চলে গিয়েছেন।
ফাঁকা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের অন্য পদগুলিও। হেলথ অফিসার, পাবলিক হেলথ অফিসারের পদ খালি রয়েছে। সাতটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন আট জন। নার্স রয়েছেন ছ’জন, ল্যাব-টেকনিশিয়ান সাতটি পদের মধ্যে ফাঁকা চারটি, আবার সাত জন ফার্মাসিস্টের মধ্যে রয়েছেন চার জন। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিমল সাহার দাবি, ‘‘পদ খালি রয়েছে বলে কাজ হচ্ছে না, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। তবে ওই পদগুলিতে নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বার বার জানানো হচ্ছে। আশা করি কিছু ব্যবস্থা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy