প্রতীকী চিত্র।
সংক্রমণের আশঙ্কায় কার্যত অবরুদ্ধ পরিবেশে দুর্গাপুজো হতে চলেছে কলকাতা পুলিশের বডিগার্ড লাইন্সে। পঞ্চমীর দিন থেকেই সেখানে আবাসনের মূল তিনটি গেট বহিরাগতদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনও আবাসিক পঞ্চমী থেকে একাদশী আবাসনের বাইরে যেতে পারবেন না। এমনকি পুরোহিত ও ভোগের রাঁধুনিকেও পুজোর কাজে হাত দেওয়ার আগে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।পুজো কমিটির সম্পাদক তথা রাজ্য পুলিশ ওয়েলফেয়ার বোর্ডের কর্তা তপন মাইতি জানান, কঠোর ভাবে করোনা-বিধি মেনেই এ বার পুজোর আয়োজন হচ্ছে বডিগার্ড লাইন্সে। উদ্বোধন থেকে বিসর্জন, সবটাই সতর্কতার ঘেরাটোপে বেঁধে ফেলা হয়েছে। উৎসবকে ঘিরে যেন ভাইরাসের ছোঁয়াচ কোনও ভাবেই আবাসনে পৌঁছতে না পারে, তার জন্য সতর্ক আবাসিকেরা।
প্রতি বছরের মতো এ বারেও বডিগার্ড লাইন্সের পুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এ বছর শুধুমাত্র মণ্ডপে একটি প্রদীপ জ্বেলে উদ্বোধন হবে। উদ্যোক্তাদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য মঞ্চের সামনে ভিড় করা এড়াতে এ বার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের কোনও মঞ্চই তৈরি করা হবে না।ঠিক হয়েছে, পুজো মণ্ডপে তিন জন পুরোহিত ছাড়া আর কেউ থাকবেন না। প্রায় ৫ হাজার বর্গফুটের মণ্ডপ চত্বরে ১৫ জনের বেশি কাউকে থাকতেও দেওয়া হবে না। মণ্ডপ চত্বরে ৬ ফুট দূরত্বে গোল চিহ্ন আঁকা থাকবে।
উদ্যোক্তারা জানান, প্রতি বছর বিভিন্ন জেলা থেকে শিল্পীরা এসে পুজোয় নানা অনুষ্ঠান করতেন। আবাসিকেরাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন। এ বছর সে সব বাতিল। তাঁরা জানান, ভোগ রান্না থেকে অঞ্জলি, সব ক্ষেত্রেই সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।উদ্যোক্তাদের কথায়, ‘‘প্রতি বছর মায়াপুর থেকে রাঁধুনিরা আসেন। এই বছর তাঁদের প্রথমে করোনা পরীক্ষা করা হবে। নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে আসার পরেই তাঁরা পুজোর কাজে হাত লাগাবেন। রাঁধুনি থেকে পুরোহিত, বহিরাগত সকলেরই করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’’
পুজোর চার দিন মণ্ডপে থাকবে না অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা। মণ্ডপ থেকে কিছুটা দূরে পাঁচটি শামিয়ানা টাঙানো হচ্ছে। এক-একটি শামিয়ানার নীচে এক জন করে পুরোহিত অঞ্জলির মন্ত্র উচ্চারণ করবেন। আর সেখানে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে অঞ্জলি দেবেন আবাসিকেরা। অঞ্জলির ফুল-সহ পুজোর সামগ্রী জীবাণুমুক্তকরণ রাসায়নিকে কয়েক ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখার পরে ব্যবহার করা হবে। মণ্ডপ চত্বর-সহ আবাসনের চার দিকে স্বয়ংক্রিয় স্যানিটাইজ়ার যন্ত্র বসানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এই পুজোর রীতি অনুযায়ী আবাসিকেরা একসঙ্গে বসে ভোগ খেতেন। এ বছর সে সব বন্ধ। তার বদলে প্লাস্টিকের কৌটোয় ভোগ পৌঁছে দেওয়া হবে আবাসিকদের কাছে। প্রতি বছর নবমীর রাতে আবাসিকদের পাঁঠার মাংস ও ভাত খাওয়ার রেওয়াজও এ বছর বাতিল করা হয়েছে।পুজোর সম্পাদক তপনবাবু বলেন, “বডিগার্ড লাইন্স আবাসনে শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের কর্মীরাই থাকেন না। এখানে আবহাওয়া দফতর ও ভারতীয় সেনার আবাসনও রয়েছে। সেখানে আবাসিকদের সংখ্যা প্রায় হাজার সাতেক। তা ছাড়া এটি পুলিশ আবাসন। এখানে সংক্রমণ প্রতিরোধে ঢিলেঢালা ভাব দেখালেই সমালোচনা হবে। তাই আমরা আবাসনের পুকুরেই প্রতিমা বিসর্জন দেব। সেখানে খুব বেশি হলে কুড়ি জন থাকবেন। এ বছর প্রতিমা নিরঞ্জনের ট্যাবলো, ঘোড়ার গাড়ি সবই বাতিল। সংক্রমণ যেন কোনও ভাবে ছড়াতে না পারে, তাই এত কড়াকড়ি।”মূক ও বধির এক যুবক শিল্পীর হাতে তৈরি কালীঘাট মন্দিরের ধাঁচে তৈরি মণ্ডপে একচালার প্রতিমা পূজিত হবে বডিগার্ড লাইন্স আবাসনের পুজোয়। পুজোয় সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিক ভাবে পালন করা হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর রাখবেন ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy