সল্টলেকে কো-অপারেটিভ আবাসনের নীচে এই খাবারের দোকান ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লিতে একটি আবাসিক বাড়ির নীচে থাকা পরোটার দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার পরে বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের কাছে এ সব নিয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সল্টলেকের আইবি ব্লকে একটি কো-অপারেটিভ আবাসনের একতলায় খাবারের দোকানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন আবাসিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, কো-অপারেটিভের নিয়ম না মেনে একতলার দু’টি ফ্ল্যাট ভেঙে তৈরি হয়েছে ওই দোকান। সেখানে আগুন জ্বালিয়ে রান্না হয়। পুরসভা-সহ প্রশাসনকে জানালেও এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
আবাসনের দুই বাসিন্দা তথা কো-অপারেটিভের দুই সদস্যা শ্যামলী মিত্র ও রত্না ঘোষ বলেন, ‘‘কো-অপারেটিভের নিয়ম, এখানে বসবাস ছাড়া অন্য কর্মকাণ্ড করা যাবে না। দোকান তৈরির সময়ে বাসিন্দাদের মত নেওয়া হয়নি। এক সময়ে উপরের একটি ফ্ল্যাটে একাধিক সিলিন্ডার এনে রান্নাও হত। আমরা আপত্তি করায় তা বন্ধ হয়। আমরা এ সব নিয়ে সরব হওয়ায় নানা ভাবে সমস্যা সৃষ্টি করে আবাসন থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’ যদিও ওই খাবারের দোকানের মালিক ইরফান আলমের দাবি, যাঁরা ফ্ল্যাট দু’টি বিক্রি করেছেন, তাঁরা তাঁকে কো-অপারেটিভের নিয়ম জানাননি। ইরফানের পাল্টা অভিযোগ, ওই বাসিন্দারা বিপুল টাকা দাবি করেছিলেন। তিনি দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁর ব্যবসা বন্ধের চক্রান্ত চলছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০২২ সালে স্থানীয় ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি রঞ্জন পোদ্দারকে বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি। পরে তাঁরা বিধাননগর পুরসভা, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট, নগরোন্নয়ন দফতর, এমনকি ডেপুটি রেজিস্ট্রার অব কো-অপারেটিভ সোসাইটিজ (ডিআরসিএস)-এরও দ্বারস্থ হয়েছেন। বাসিন্দারা নথি দেখিয়ে দাবি করেছেন, ওই দু’টি ফ্ল্যাটের সম্পত্তিকরের বিলেও লেখা রয়েছে, সেটি কো-অপারেটিভের অধীনে।
রঞ্জনের অবশ্য দাবি, ‘‘পুরসভার নকশা থেকে দেখা গিয়েছে, ওই আবাসনটি যেখানে অবস্থিত, সেখানে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ রয়েছে। বাড়িটির নীচে চারটি দোকান ছিল। কিন্তু কোনও ফ্ল্যাট ভাঙা হলে সেটা কো-অপারেটিভের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি দু’তরফকে বলেছি, আলোচনা করে সমাধানসূত্র বার করতে।’’
উল্লেখ্য, নগরোন্নয়ন দফতর সল্টলেকে আবাসিক বাড়িতে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু কো-অপারেটিভের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয় বলে জানান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘ওই আবাসনের বাসিন্দারা আমার দফতরে চিঠি লিখুন। উত্তর দেওয়া হবে।’’
ইরফান জানান, আবাসনের সামনের অংশটি বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য ১৯৮৭ সালের কাগজ রয়েছে তাঁর। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দু’বছর ধরে ওই দোকান চলেছে। বেআইনি হলে তখনও তো হয়েছে। আজ প্রশ্ন উঠছে কেন?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই আবাসিকেরা কো-অপারেটিভের নামে ২৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। আমি অঙ্ক কমাতে বলি এবং কো-অপারেটিভে সদস্যপদ চাই। তা দেওয়া হয়নি। পরে জেনেছি, ওঁদের কো-অপারেটিভ বৈধ নয়। আমি যত দূর যেতে হয় যাব। বাড়ির পিছন দিকটিও বাণিজ্যিক করার জন্য আবেদন করেছি। সেটা পেলে দোকান পুনর্গঠনের কাজ শুরু করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy