Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

খাল বুজিয়ে নির্মাণ, বিতর্ক

বেলেঘাটায় কলকাতা পুরসভার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের এই ‘প্রকল্প’ ঘিরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেচ দফতরের অধীন বেলেঘাটার ওই খালের একাংশের জমি বুজিয়ে ঘর তৈরি করে তা বিক্রি করা হচ্ছে।

জবরদখল: খাল বুজিয়ে এ ভাবেই হয়েছে ঘর। ছবি: শৌভিক দে

জবরদখল: খাল বুজিয়ে এ ভাবেই হয়েছে ঘর। ছবি: শৌভিক দে

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

খালপাড় জুড়ে পরিপাটি করে জমি সমান করা হয়েছে। তার একাংশে করা হচ্ছে উদ্যান। অন্য অংশে পরপর তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি ঘর। দুপুরের রোদে সেখানে কাজে ব্যস্ত কর্মীরা। তবে কারা করছেন, কী নির্মাণ— তা বলতে পারছেন না কেউ! সব প্রশ্নের জবাব একটাই, ‘‘বড় প্রকল্প চলছে।’’

বেলেঘাটায় কলকাতা পুরসভার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের এই ‘প্রকল্প’ ঘিরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেচ দফতরের অধীন বেলেঘাটার ওই খালের একাংশের জমি বুজিয়ে ঘর তৈরি করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। যাতে কোনও রকম আপত্তি না ওঠে, তাই মানুষের নজর ঘোরাতে তৈরি হচ্ছে উদ্যান। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘৫০ বর্গফুট জায়গার একটি ঘরের দর উঠছে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা। বড় ব্যবসা চলছে এখানে।’’ বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর জীবন সাহা পুরো বিষয়টা সম্পর্কে ভাল মতোই ওয়াকিবহাল। তা সত্ত্বেও এই কাজ চলছে।

এক দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ইতিমধ্যেই ওই ধরনের বেশ কয়েকটি ঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেগুলির বেশির ভাগই বন্ধ। রেস্তোরাঁ এবং গুদাম হিসেবে কয়েকটি ঘরের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তেমনই একটি গুদামের মালিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কার থেকে কিনেছি বলতে পারব না। খালের পাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলাম। দেখতে বাজে লাগত। তাই কাউন্সিলর এ ভাবে বসতে সাহায্য করেছেন।’’

এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর জীবনবাবুর বক্তব্য, খালপাড়ের উন্নয়নের জন্যই তাঁর এই উদ্যোগ। তাঁর দাবি, ‘‘দলনেত্রীর নির্দেশ, কাউকে উচ্ছেদ না করে উন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই চেষ্টাই করেছি। খালপাড়ের দখলদারদের তো আর উচ্ছেদ করা যায় না! তাঁরা গুদাম তৈরি করতে চেয়েছেন, আমরা তাঁদের সাহায্য করতে পাশে রয়েছি।’’ সেই সঙ্গে জীবনবাবুর আরও দাবি, ‘‘ভাল প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক তৈরির তো কিছু নেই।’’

এ দিকে পুরসভার তরফে বলা হয়েছে, এমন কোনও ‘প্রকল্প’-এর কথা তাদের জানা নেই। এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘উদ্যান তৈরির অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না, তা দেখতে হবে। তবে ঘর তৈরির কোনও প্রকল্প আমাদের জানা নেই।’’

তবে কি সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে এই ‘উন্নয়ন প্রকল্প’ করছেন কাউন্সিলর? সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনও প্রকল্পের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি। এমন কাজ হলে, তা অন্যায়। দ্রুত খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি কালই এই নিয়ে খোঁজ নেব।
সেচ দফতরের জমিতে এমন কিছু করতে হলে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন।’’ কাউন্সিলরের দাবি, ‘‘সেচ দফতর তো খাল নিয়ে একেবারেই সচেতন নয়! পাড়ের এমন দুর্দশা জেনেও কোনও কিছুই করে না। কার অনুমতি নেব!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Beliaghata Iillegal Construction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy