বাগুইআটি থানার দাবি, দু’পক্ষ নাকি আপসে মিটমাট করে নিয়েছে। যদিও আক্রান্ত পরিবার সে কথা মানতে চায়নি। প্রতীকী ছবি
আটচল্লিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। একটি গৃহস্থ বাড়িতে ক্লাবের যুবকদের ‘হামলা’র ঘটনায় এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ। ওই বাড়ির সদস্যদের দাবি, তাঁরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সুবিচারের আশায়। অন্য দিকে, বাগুইআটি থানা আবার দাবি করেছে, দু’পক্ষ নাকি আপসে মিটমাট করে নিয়েছে। যদিও আক্রান্ত পরিবার সে কথা মানতে চায়নি। হামলাকারীরা ঘটনাস্থলে তৃণমূলের এক যুব নেতার নাম করায় তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এলাকার খবর, বাগুইআটি থানার অধীন, বিধাননগর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে ‘শিবশঙ্কর স্পোর্টিং’ নামে একটি ক্লাব। অভিযোগ, গত শনিবার দুপুরে ওই বাড়িতে হামলা চালানোর পরে ক্লাবের যুবকদের একাংশ ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক যুব নেতার নাম করতে করতে বেরিয়ে যায়। তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এলাকাবাসীর সিংহভাগের প্রশ্ন, যুব নেতার সঙ্গে পরিচিতির সুবাদেই কি দিনেদুপুরে একটি গৃহস্থ বাড়িতে চড়াও হয়ে, পরিবারের সদস্যদের মারধর করার পরেও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্তেরা? রাজনৈতিক যোগাযোগ না থাকলে ওই ২০-২৫ জন যুবক একটি বাড়িতে গিয়ে মহিলাদের মারধর করার সাহস পেল কোথা থেকে? ক্লাবের কর্মকর্তা এবং ওই যুব নেতার অবশ্য দাবি, তাঁদের অজানতেই ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত শনিবার দুপুরে বাগুইআটির ফয়রা ভবন এলাকার একটি বাড়িতে ওই ক্লাবের ২০-২৫ জন যুবক চড়াও হয়ে মহিলা ও বয়স্কদের বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। বাড়ির মহিলারা ঝাঁটা-জুতো নিয়ে মারমুখী যুবকদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাতে রণে ভঙ্গ দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ফিরে যাওয়ার সময়ে ওই যুবকেরা ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেই যুব নেতার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে বলে জানায়। পরিবারটির আরও দাবি, স্থানীয়দের থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, হামলাকারীরা ‘শিবশঙ্কর স্পোর্টিং’ ক্লাবের লোকজন।
ক্লাবের সম্পাদক সুজিত মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমরা ওই পরিবারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছি। অল্পবয়সি ছেলেরা উত্তেজিত হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার, ভাসানকে কেন্দ্র করে। সে দিন ভাসানে ওই পরিবারের সদস্যেরা মত্ত অবস্থায় ক্লাবের কয়েক জন বাচ্চা ছেলেকে মারধর করেন। তবে, সেই ঘটনা আমরা মিটমাট করিয়ে দিয়েছিলাম। ওই বাড়িতে গোলমালের বিষয়টি জানতাম না। ওই বাড়ির মহিলারাও আমাদের ছেলেদের ঝাঁটা-জুতো দিয়ে বেধড়ক মেরেছেন। আমাদের ভুল এটাই হয়েছে যে, আমরা পুলিশে অভিযোগ করিনি।’’ এই সম্পাদক ওই যুব নেতার ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকার খবর।
ফয়রা ভবনের ওই পরিবারের অন্নপূর্ণা পুজো এলাকায় পরিচিত। পুলিশ জানায়, শুক্রবার এলাকার একটি পুকুরঘাটে বিসর্জনের সময়ে ওই পরিবারের এক ব্যক্তির সঙ্গে শিবশঙ্কর স্পোর্টিং ক্লাবের এক যুবকের বচসা হয়। তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। যদিও পরে তা মিটে যায়। ওই পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুরে তাদের বাড়িতে চড়াও হয় ক্লাবের যুবকেরা। তারা বেধড়ক মারধর করে বাড়ির মহিলা ও প্রবীণদের। এমনকি, বাড়ির একটি শিশুও মারমুখী যুবকদের রোষের মুখে পড়ে। এক প্রৌঢ়ার অভিযোগ, ‘‘আমার নাবালক নাতিকে সবাই মিলে মারছিল। তখন প্রতিরোধ করি।’’ পরিবারটির দাবি, ঘটনার ভিডিয়ো দেখে কয়েক জন তাঁদের জানান, হামলাকারীরা ওই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত।
ওই যুব নেতার অবশ্য দাবি, তিনি নিজেই পুলিশকে অনুরোধ করেছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় দীর্ঘদিন রাজনীতি করি। কেউ অপরাধ করে আমার কাছে আসছে বলতেই পারে। কিন্তু আমি তাকে আশ্রয় দিয়েছি কি না, সেটা দেখা হোক। আমার নাম জোর করে জড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। ওই পরিবারটির সঙ্গে আমার দীর্ঘ বছরের যোগাযোগ। আমি ওঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে রয়েছি। মামলা না তুলতেও ওঁদের বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy