পুলিশ পরিচয়ে লুটপাটের অভিযোগ না-থামা নিয়ে চিন্তায় লালবাজার। দিনকয়েক আগেই স্ট্র্যান্ড রোডে একই ভাবে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল। প্রাথমিক তদন্তে অবশ্য সরাসরি পুলিশেরই যোগ পাওয়া গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে নেপথ্যে কারা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
প্রতীকী ছবি।
ফের পুলিশ পরিচয় দিয়ে লুটপাটের অভিযোগ উঠল কলকাতায়। এ বার অভিযোগকারী দেওঘরের বাসিন্দা, সোনা-রুপোর এক ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ, বিধাননগর রোড স্টেশন থেকে ট্রেন ধরার সময়ে তাঁকে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। এর পরে তল্লাশির নামে তাঁর সঙ্গে থাকা প্রায় ১৩ লক্ষ টাকার রুপো এবং দেড় লক্ষ টাকার সোনা লুট করা হয়। ঘটনার পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে ‘পুলিশ’ লেখা একটি মোটরবাইক চিহ্নিত করা গিয়েছে।
ঘটনাটি গত ২২ ফেব্রুয়ারির। সে দিন বড়বাজারে সোনা-রুপো কিনতে এসেছিলেন দেওঘরের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর নামে ওই ব্যবসায়ী। প্রায় ২০ কেজি রুপো এবং ৩০ গ্রাম সোনা কিনে তিনি বড়বাজার থেকে বিধাননগর রোড স্টেশনে যান। সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ সেখান থেকেই তাঁর ফেরার ট্রেন ছিল। শ্যামের অভিযোগ, ট্রেনে ওঠার মুখে কয়েক জন ব্যক্তি এসে তাঁকে জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়। তারা নিজেদের পুলিশের লোক বলে পরিচয় দিয়ে জানায়, শ্যামসুন্দরের সঙ্গে চোরাই সোনা-রুপো রয়েছে বলে তাদের কাছে খবর আছে।
ওই ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘আমার সঙ্গে পাকা রসিদ ছিল। সেগুলি দেখিয়ে ছেড়ে দিতে বলি। কিন্তু ওই ব্যক্তিরা আমায় জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে বলে, থানায় যেতে হবে। সেখানে পরীক্ষা করে না দেখে ছাড়া সম্ভব নয়।’’ শ্যামের বয়ান অনুযায়ী, এর পরে স্টেশনের বাইরে দাঁড়ানো একটি সাদা ট্যাক্সিতে তাঁকে তোলা হয়। স্টেশন থেকে ভিআইপি রোড হয়ে দমদমের নানা এলাকায় ঘোরে ট্যাক্সিটি। এর পরে এক জায়গায় গাড়ি থামিয়ে একটি মোটরবাইকে তোলা হয় শ্যামকে। তাতে ‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো ছিল বলে তাঁর অভিযোগ।
শ্যামসুন্দর বলেন, ‘‘ওই বাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে আমায় বলা হয়, বাইকচালকের সঙ্গে কথা বলে দেনাপাওনার বিষয়টা মিটিয়ে নিতে। টাকা দিতে না পারলে ওই সোনা ও রুপো ছাড়া হবে না বলেও জানায় তারা। এর পরে একটা জেলের সামনে আমায় বসিয়ে ওই লোকগুলি সোনা-রুপো ভরা ব্যাগ পরীক্ষা করানোর নাম করে নিয়ে চলে যায়। বলা সত্ত্বেও আমাকে সঙ্গে যেতে দেওয়া হয়নি। মোবাইলও কেড়ে নেয়। বলে যায়, ওখানেই যেন অপেক্ষা করি। কিন্তু ওরা আর ফেরেনি। শেষে এক পথচারীর থেকে ফোন চেয়ে বাড়িতে ফোন করি। ওই ব্যক্তির থেকে জানতে পারি, ওটা দমদম জেল!’’
ব্যবসায়ীর অভিযোগ, দ্রুত তিনি দমদম থানায় গেলে তাঁকে বলা হয় বিধাননগর রোড স্টেশনে গিয়ে বিষয়টি জানাতে। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় শিয়ালদহ জিআরপি-তে। বিষয়টি শুনে অভিযোগ লিখে নেওয়ার পরে সাত দিন কেটে গেলেও এই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। শিয়ালদহ রেল পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে কলকাতা পুলিশের সাহায্য নিচ্ছে তারা। একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ স্টিকার লাগানো বাইকটি চিহ্নিত করা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, দ্রুত অভিযুক্তেরা ধরা পড়বে।
পুলিশ পরিচয়ে লুটপাটের অভিযোগ না-থামা নিয়ে চিন্তায় লালবাজার। দিনকয়েক আগেই স্ট্র্যান্ড রোডে একই ভাবে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল। প্রাথমিক তদন্তে অবশ্য সরাসরি পুলিশেরই যোগ পাওয়া গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে নেপথ্যে কারা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy