প্রতীকী ছবি।
সাদা ভাত, গন্ধরাজ লেবু ও কাঁচালঙ্কা, শুক্তো, ভাজা মুগের ডাল, বেগুনি, ভেটকি পাতুরি, বাসন্তী পোলাও, কচি পাঁঠার ঝোল অথবা চিকেন, আমের চাটনি, পাঁপড়, নবদ্বীপের দই, মিষ্টি আর পান।
কোনও বিয়েবাড়ি নয়, এই মেনু স্কুল ছুটির পরে শিক্ষকদের ‘গেট-টুগেদার’ উপলক্ষে খাওয়াদাওয়ার। কোথাও খাবারের এই তালিকা লেখা রয়েছে স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডে। কোনও স্কুলে আবার দেখা যাচ্ছে, শিক্ষকেরা ক্লাসরুমের বেঞ্চেই পাত পেড়ে খাচ্ছেন। সেই ঘটা করে খাওয়ার ছবিও তোলা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে কোভিড-বিধি মেনে স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন শুরু হয়েছে গত ১২ ফেব্রুয়ারি। করোনা যাতে না ছড়ায়,
তা নিশ্চিত করতে নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের উপরে। এত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ইতিমধ্যে দু’টি স্কুলে শিক্ষকদের করোনা ধরা পড়ায় পঠনপাঠন সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে স্কুলের ভিতরে শিক্ষকদের দলবদ্ধ ভাবে পার্টি করা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন উঠেছে। অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, স্কুলে যেখানে পড়ুয়াদের টিফিন ভাগ করে খেতেও বারণ করা হচ্ছে, সেখানে শিক্ষকেরা নিজেরাই এ ভাবে পার্টি করতে পারেন কি?
শিক্ষকদের এই খাওয়াদাওয়ার আয়োজন কেন? সূত্রের খবর, সম্প্রতি আপস বদলি ও সাধারণ বদলির কারণে অনেক শিক্ষক নতুন যোগ দিয়েছেন। সেই নতুন শিক্ষকদের স্বাগত জানাতেই এমন আয়োজন। বেশির ভাগ স্কুলেই এই ‘গেট-টুগেদার’ হচ্ছে স্কুল ছুটির পরে। এমনকি, কেটারার দিয়ে রান্নাবান্নারও আয়োজন করা হয়েছে।
কী বলছেন ওই সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা?
কল্যাণীর পান্নালাল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক অসিতকুমার সেন বললেন, ‘‘স্কুলের ভিতরে পাত পেড়ে কোনও রকম খাওয়াদাওয়া হয় না। অনেক সময়ে এমন হয় যে, কোনও শিক্ষক হয়তো কোনও কারণে অন্য শিক্ষকদের টিফিন খাওয়াবেন বলে ঠিক করেছেন। সেই টিফিন ভাগ করে খাওয়ার আয়োজন করা হয়। ’’ কাঁচরাপাড়া হর্নেট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম বাচস্পতির কথায়, ‘‘কোভিড পরিস্থিতির জন্য আমরা এ বার স্কুলে পড়ুয়াদের একসঙ্গে পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করিনি। তবে সম্প্রতি যে খাওয়াদাওয়া হয়েছে, তা স্কুলে নতুন শিক্ষকদের যোগদান উপলক্ষে। তাতে শুধু শিক্ষকেরাই ছিলেন। সেখানে স্কুলের ৫০ জন কর্মী খেয়েছেন। প্রতি ব্যাচে ২০ জন করে।’’
কিন্তু শিক্ষকেরা এ ভাবে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া বা পার্টি করতে পারেন কি? শিক্ষক সংগঠন ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বললেন, ‘‘যেখানে শিক্ষকদের মধ্যে করোনা ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তাঁদের আরও বেশি করে দায়িত্বশীল হওয়া উচিত বলে মনে করি। শুধু কল্যাণী বা কাঁচরাপাড়া নয়, বিভিন্ন জায়গা থেকেই এ ভাবে শিক্ষকদের গণ খাওয়াদাওয়া নিয়ে অভিযোগ পাচ্ছি। আমরা স্কুল শিক্ষা দফতরের কমিশনার অনিন্দ্যনারায়ণ বিশ্বাসের কাছে এ নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছি। স্কুলে এই ধরনের গণ খাওয়াদাওয়া বন্ধ হওয়া দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy