কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।
সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ বার আর্থিক কেলেঙ্কারি! স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকিট থেকে আদায় করা কয়েক লক্ষ টাকার কোনও হদিস মিলছে না।
স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কর্মবন্ধু পদে কাজ করা এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিন লক্ষ ২২ হাজার টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, অভিযুক্ত পেশায় ঝাড়ুদার হলেও তিনি হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকিট দেওয়ার কাজ করতেন। গত বছরের জুন থেকে গত মে মাস পর্যন্ত তাঁর কাউন্টার থেকে সংগৃহীত হয়েছিল মোট তিন লক্ষ ২২ হাজার ৩০৬ টাকা। অভিযোগ, সেই টাকা কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেননি ওই ব্যক্তি। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত কর্মীকে এর কারণ দর্শানোর নোটিস ধরিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাত দিনের মধ্যে ওই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এই কেলেঙ্কারির জন্য কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, নোটিসে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে অভিযুক্তের কাছে।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, মৌখিক ভাবে ওই অভিযুক্ত জানিয়েছেন, তিনি পড়াশোনা খুব বেশি জানেন না। তাই কী ভাবে এমনটা ঘটেছে, তা বোধগম্য হচ্ছে না তাঁর!
তবে এই ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী যে টাকা জমা করছেন না, তা এতদিন পরে কেন নজরে এল? টাকা জমা পড়ছে কি না তা দেখার জন্য যে কর্মীরা রয়েছেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বহির্বিভাগের কাউন্টার বন্ধ হওয়ার পরে সাধারণত দিনের দিন টাকা জমা করাটাই নিয়ম। কিন্তু খুচরো-সমস্যার জন্য এক সঙ্গে সাত দিনের টাকা জমা করতেন কর্মীরা। পাঁচ জন কর্মী ওই টাকা জমা দিলেও এক জন যে দিচ্ছেন না, তা নজরই করেনি হিসাব বিভাগ। সম্প্রতি অডিটের সময়ে এই গরমিল ধরা পড়ে।
এক জন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সম্পাদক গৌতম পাল বলেন, ‘‘বিষয়টি প্রশাসনিক স্তরে বিবেচনাধীন। এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে কেন বসানো হল? এ প্রসঙ্গে গৌতম বলেন, ‘‘হাসপাতালে যা কর্মী সঙ্কট রয়েছে, তাতে এ ছাড়া কোনও উপায় নেই। ২০১৩ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে গ্রুপ ডি পদে অনেকে নিয়োগ হয়েছিলেন। তাঁদের পদোন্নতি দিলে এ ধরনের কেলেঙ্কারি এড়ানো যায়। কিন্তু তা তো হচ্ছে না!’’
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা উপাধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘অ্যাকাউন্টস বিভাগের স্পষ্ট গাফিলতি রয়েছে। অভিযুক্ত কর্মীকে শো-কজ করার পাশাপাশি তাঁকে অন্যত্র বদলি করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy