ফাইল চিত্র।
কোভিড আবহে গত বছরে জোর ধাক্কা খেয়েছিল কুমোরটুলি।
প্রতিমা বায়নার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমা ছাড়াও বহু প্রতিমা অবিক্রীত অবস্থায় রয়ে গিয়েছিল। তবে এ বছর ছবিটা অনেকটাই বদলেছে। সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা সত্ত্বেও এ বার দুর্গা প্রতিমা বিক্রির হার অনেকটাই বেশি, যা কুমোরটুলির অর্থনীতি কিছুটা হলেও চাঙ্গা করেছে। শুধু দুর্গাই নয়, এ বার বহু আগে থেকে কালী প্রতিমা তৈরির বায়নাও পেয়েছেন কুমোরটুলির শিল্পীরা। ব্যবসা বেড়েছে কুমোরটুলির শোলাশিল্পী, সাজশিল্পীদেরও। সব মিলিয়ে করোনার ধাক্কা সামলে আস্তে আস্তে ছন্দে ফিরছে উত্তর কলকাতার পটুয়াপাড়া।
কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতির সম্পাদক বাবু পাল বলেন, ‘‘গত বছরে আমাদের পেটের ভাত কেড়ে নিয়েছিল করোনা। এ বার কী হবে, তা নিয়েও সংশয়ে ছিলাম। তবে এ বার দুর্গা প্রতিমা বিক্রি গত বছরের তুলনায় অনেক গুণ বেড়েছে।’’
গত বছর দুর্গাপুজোর শেষে দেখা গিয়েছিল, অবিক্রীত অবস্থায় কুমোরটুলিতেই পড়ে রয়েছে ২০০-রও বেশি প্রতিমা! শেষে সেই প্রতিমাগুলিকেই একটু-আধটু পরিবর্তন করে জগদ্ধাত্রীর রূপ দিয়ে অবস্থা সামাল দিয়েছিলেন শিল্পীরা। এ বছরের ছবিটা সম্পূর্ণ উল্টো। শিল্পীদের তৈরি একটাও দুর্গা প্রতিমা এ বার আর পড়ে নেই। মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, এ বারে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, পুজোর সপ্তাহ দুয়েক আগে অনেকে বায়না করতে এলেও তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।
মৃৎশিল্পী কাঞ্চি পালের কথায়, ‘‘এ বার ভালই ব্যবসা হয়েছে। গত বছরে যেখানে ২৮টি দুর্গা প্রতিমা বিক্রি করতে পেরেছিলাম, এ বার সেখানে বায়নার সংখ্যা ৪৫টি। তা ছাড়া এ বার প্রতিমার উচ্চতাও বেড়েছে।’’ কুমোরটুলির আর এক শিল্পী কৌশিক ঘোষ বলেন, ‘‘করোনার শুরুতে গত বছর মাত্র সাতটি দুর্গা প্রতিমা বিদেশে পাঠাতে পেরেছিলাম। এ বারে সেই সংখ্যাটা ২২। গত বছরে যেখানে আমার তৈরি তিনটি কালী প্রতিমা বিদেশযাত্রা করেছিল, সেখানে এ বার যাচ্ছে ১০টি।’’
অথচ গত বছরের কথা মনে পড়লেই মনটা ভার হয়ে আসে মায়া পাল, কার্তিক পাল, সুজিত পালদের। সুজিতের কথায়, ‘‘গত বছরে করোনার ভয়ে তো বায়নাই আসেনি সে ভাবে। অনেকে আগাম বায়না করেও শেষে বাতিল করেছিলেন। তবে এ বার এনেকটা স্বস্তি ফিরেছে।’’ শিল্পী মিন্টু পাল বললেন, ‘‘এ বছরে দুর্গাপুজোর সময়েই কালী প্রতিমার বেশ কিছু বায়না পেয়েছি।
কুমোরটুলির বেশির ভাগ শিল্পীই কালী প্রতিমা তৈরির আগাম বায়না পেয়েছেন, গত বছরে যা ভাবনারও অতীত ছিল।’’
কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতির আর এক সম্পাদক রঞ্জিত সরকার বলছেন, ‘‘এ বারে কুমোরটুলি লাভের মুখ দেখেছে। অনেক শিল্পী গত বছরের ধারদেনা এত দিনে মেটাতে পারলেন। তবে সঞ্চয় বলতে কিছু রইল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy