প্রতীকী ছবি
সম্বল মুখ্যমন্ত্রীর টুইট। কিন্তু শুধু সেটুকুতেই চিঁড়ে ভিজছে না। আগামী ১ অক্টোবর থেকে স্বাভাবিকতায় ফেরার অঙ্গ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাত্রা, নাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ম্যাজিক শোয়ের পাশাপাশি সিনেমার শো চালু করার কথা বললেও ক’জন মিলে কী ভাবে সিনেমা হল খোলা হবে, সে সম্পর্কে আরও স্পষ্ট নির্দেশিকা চাইছেন হলের মালিকেরা। হল খুলতেও আগামী মাসের ৫-৬ তারিখ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
সোমবারও বিষয়টি নিয়ে বৈঠক চলেছে প্রযোজক ও হল মালিকদের সংগঠন ইম্পা-র অন্দরে। ইম্পা-র সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত যেমন বলছেন, ‘‘মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আশা করি, দু’-এক দিনেই শো চালানোর সবিস্তার নিয়মাবলী বা এসওপি হাতে পাব।’’
তবে বিষয়টি নিয়ে সার্বিক বিভ্রান্তির ভাগটাও নেহাত কম নয়। সর্বভারতীয় মাল্টিপ্লেক্স গোষ্ঠীগুলিরও মুখে কুলুপ। সরকারি ভাবে কিছু না বললেও তারা হল খোলা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশের অপেক্ষায়। লকডাউন শিথিল করার নানা পর্বে রেস্তরাঁ, শপিং মল, ধর্মস্থান— প্রতিটি জায়গার জন্যই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা-বিধি প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্স এবং সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল কর্তৃপক্ষের মধ্যে তাই বিভ্রান্তি। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ৫০ জন দর্শককে নিয়ে হল খুলতে হলেও টিকিটের দাম বাড়ানোর সাহস করছেন না হলের মালিকেরা। ইম্পা-র কোষাধ্যক্ষ তথা বেলঘরিয়ার হলমালিক শান্তনু রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে যা কথা হয়েছে, তাতে টিকিটের দাম বাড়ানোর কথা ভাবতে পারছি না।’’ আর কলকাতার প্রিয়া ছাড়া শিলিগুড়ি-বালুরঘাট-বৈদ্যবাটির সিঙ্গল স্ক্রিন মালিক ও হলদিয়া-দুর্গাপুরের মাল্টিপ্লেক্স-কর্তা অরিজিৎ দত্তের মত, ‘‘হলে ফেরার অভ্যাস গড়ে তুলতে ভাবছি টিকিটের দাম কমিয়ে দেব।’’ নতুন ছবি কই? কলকাতার হলে নিজেদের প্রযোজনা সংস্থার ছবি ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ বা ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ দেখানোর কথা ভাবছেন অরিজিৎ। তবে বাইরের হলে কী চালাবেন, ভাবতেই দিশাহারা তিনি।
রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ প্রযোজক-প্রদর্শক গোষ্ঠী ‘শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস’-এর তরফেও হল খোলার সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে নিশ্চয়তা নেই। তবু টুইটের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ‘এসভিএফ এন্টারটেনমেন্ট’-এর ডিরেক্টর মহেন্দ্র সোনি ওরফে মণি বলছেন, ‘‘আমরা নিরাপত্তা-বিধির খুঁটিনাটি জানার অপেক্ষায়।’’ তবে সিনেমা হলের ছন্দে ফেরাটা সার্বিক ভাবে জাতীয় স্তরের উপরেও নির্ভরশীল বলে মণির বক্তব্য। অর্থাৎ, বলিউডের ছবির মুক্তির দিকেই তাকিয়ে রাজ্যের হলমালিকদের অনেকে। পুরনো হিট ছবি বা ডিজিটাল আঙ্গিকে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি হলে রিলিজের কথাও ভাবা হচ্ছে। শহরতলি ও গ্রামের পোড়খাওয়া বুকারদের তাস আবার পুরনো বাংলা ছবিই।
মুখ্যমন্ত্রীর টুইটে ৫০ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে সিনেমা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার কথা বলা হয়েছে। সিনেমা হলের, বিশেষত সিঙ্গল স্ক্রিনগুলির কারবার এমনিতেই ধুঁকছে। তবু কেউ কেউ ৫০ জন দর্শককে নিয়েই শো শুরু করার পক্ষপাতী। স্টারের লিজ়ধারী মালিক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় যেমন বলছেন, ‘‘হল খোলাটাই বড় কথা। আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হবে।’’
দক্ষিণ কলকাতার নবীনার কর্ণধার নবীন চোখানির কথায়, ‘‘নিরাপত্তা-বিধি ছাড়া হলে টিকিট বিক্রির সফটওয়্যারই চালু করা যাচ্ছে না।’’ তবে তিনি বলছেন, ‘‘ব্যবসার যা দশা, টিকিটের দাম বাড়ালে কিন্তু সেই হলের কপালে দুঃখ আছে!’’ বসুশ্রী-র অন্যতম কর্ণধার সৌরভ বসুও সবিস্তার নির্দেশিকার অপেক্ষায়। তবে বাংলা ছবির ঐতিহ্যবাহী হলটি তাঁরা খুলছেন, এই আশ্বাসটুকু মিলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy