প্রতীকী ছবি।
সারদা-রোজভ্যালি কাণ্ডের পরেও চিটফান্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের যে হুঁশ ফেরেনি, ফের তার প্রমাণ মিলল। খাস কলকাতা শহরের জনবহুল অঞ্চলে রীতিমতো অফিস করে এক বছর ধরে প্রায় ২০০ জনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছে একটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা। গত শুক্রবার সেই অফিসে তালা পড়েছে।
শনিবার ওই সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে দমদম থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বুধবার লগ্নিকারীরা এসে বন্ধ অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। সব মিলিয়ে লগ্নিকারীদের প্রায় ৩০ কোটি টাকা ডুবেছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমের নরসিংহ অ্যাভিনিউয়ের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে বছরখানেক আগে অফিস করে সৌম্যজিৎ রায়চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। ‘অল ইন্ডিয়া ফিশ মার্চেন্ট অ্যান্ড ট্রেডার্স’ নামে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রতি রবিবার তারা বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করে। তাদের সংস্থা কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদিত বলে বিজ্ঞাপনে জানানো হয়। লগ্নিকারীদের বলা হয়েছিল, ওই সংস্থায় লগ্নি করলে মাসে ১০ শতাংশ হারে সুদ দেওয়া হবে।
শুভজিৎ সিংহ নামে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের এক যুবক জানান, তিনি সৌম্যজিতের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, যেখানে ব্যাঙ্ক এই হারে সুদ দিতে পারছে না। সেখানে তারা কী ভাবে তা দেবে? সৌম্যজিৎ তাঁদের জানিয়েছিল, মাছ যেহেতু পচনশীল, তাই ব্যাঙ্ক তাদের ঋণ দেয় না।
সেই জন্যই তারা এ ভাবে বাজার থেকে টাকা তোলে। সেই টাকা তারা যেমন মাছের ব্যবসায় লগ্নি করে, তেমনই বাজারের ছোট ছোট মাছ বিক্রেতাদের দাদন হিসেবে দেয়। দাদনের বিনিময়ে দিনের শেষে প্রতি এক হাজার টাকায় তারা ৭৫-১০০ টাকা সুদ হিসেবে পায়। সব মিলিয়ে মাসে তারা ৩০-৪০ শতাংশ লাভ করে। তার থেকে লগ্নিকারীদের তারা ১০ শতাংশ দেওয়া হবে।
চিটফান্ড কর্তাদের এমন কথায় বিশ্বাস করেছিলেন লগ্নিকারীরা। দেবরত্ন দাস নামে এক লগ্নিকারী জানান, প্রথম দিকে তাঁদের প্রতিমাসে সুদ ঠিকঠাক মেটানো হয়েছিল। এখন তাঁরা বুঝছেন, তাঁদের টাকা থেকেই তা দেওয়া হয়েছিল। মাস সাতেক পরে তাঁদের বলা হয়, বিদেশে মাছ রপ্তানির বড় বরাত পেয়েছে ওই সংস্থা। সেই জন্য মূলধনের প্রয়োজন। পাঁচ মাস পরে তাদের মাস প্রতি ২০ শতাংশ হারে সুদ এবং আসল টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অতিরিক্ত লোভে তাঁরা সুদ হিসেবে পাওয়া টাকাও লগ্নি করেন।
দেবরত্নবাবু জানান, তিনি মোট ২৫ লক্ষ টাকা লগ্নি করেছিলেন। এ মাসের ৫ তারিখে তার টাকা ফেরত পাওয়ার কথা ছিল। টাকা ফেরত চাইতেই আজ-কাল করে তাঁর মতো অনেককেই ঘোরাচ্ছিল সৌম্যজিৎ এবং তার সহযোগী চার জন। শুক্রবার থেকে সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার লগ্নিকারীরা এসে দেখেন অফিসে তালা ঝুলছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy