বড়বাজারের মেহতা বিল্ডিংয়ের এই ওষুধের দোকান থেকেই জিনিস কিনেছিল দেবাঞ্জন। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
ভুয়ো নথিরই ফাঁদ পেতেছিল প্রতিষেধক দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেব। বড়বাজারের মেহতা বিল্ডিংয়ে ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রির একটি দোকান থেকে সে ওই নথি দেখিয়ে চিকিৎসা সামগ্রী তুলেছিল বলে অভিযোগ। শুক্রবার বড়বাজারে লালবাজারের গোয়েন্দারা হানা দেওয়ার পরে এই তথ্য উঠে আসছে। দেবাঞ্জন পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পরেই প্রশ্ন ওঠে, এত বিপুল পরিমাণ প্রতিষেধক, ইঞ্জেকশন, ওষুধপত্র কোথা থেকে কিনেছিল সে? তদন্তে উঠে আসে মেহতা বিল্ডিংয়ের ওই দোকানের নাম।
প্রশ্ন উঠেছে, খোলা বাজারে কি আদৌ প্রতিষেধক পাওয়া সম্ভব? মেহতা বিল্ডিং ও বাগড়ি মার্কেট চত্বরে ওষুধের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কোনও ভাবেই খোলা বাজারে প্রতিষেধক বিক্রি হচ্ছে না। সরকারি ভাবে, নয়তো বেসরকারি হাসপাতাল থেকেই প্রতিষেধক নিতে হচ্ছে। কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ড তো বটেই, স্পুটনিক ভি সরবরাহের মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরও একই বক্তব্য। বড়বাজারের ‘বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’ জানিয়েছে, প্রতিষেধক বিক্রির অনুমতি তারা চেয়েও পায়নি। তাই ধৃত ওই ব্যক্তিকে প্রতিষেধক বিক্রির প্রশ্নই ওঠে না।
কিন্তু প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য যে আনুষঙ্গিক ওষুধ, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ লাগে, সে সব কোথা থেকে কিনেছিল দেবাঞ্জন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেবাঞ্জনের কসবার অফিস থেকে যে ওষুধের দোকানের বিল পেয়েছেন তদন্তকারীরা, সেখানে মেহতা বিল্ডিংয়ের ওই দোকানের নাম রয়েছে। সেই ঠিকানায় হানা দিয়ে এ দিন পুলিশ জানতে চায়, সেখান থেকে দেবাঞ্জন প্রতিষেধক ও আনুষঙ্গিক কী কী কিনেছিল?
মেহতা বিল্ডিংয়ের মূল গেট দিয়ে ঢুকে গলির ভিতরে তস্য গলির ঘিঞ্জি দোকান পেরিয়ে দোতলায় নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দেখা গেল, ক্রেতার ভিড় রয়েছে ভালই। এক কর্মকর্তা রৌনক মুকিম বলেন, ‘‘আমরা কোনও প্রতিষেধক বিক্রি করিনি। কারণ প্রতিষেধক বিক্রির অনুমতিই নেই। চিকিৎসা সামগ্রী যা বিক্রি করেছি, তা পুরসভাকে বিক্রি করেছি। দেবাঞ্জন দেব বলে কোনও ব্যক্তিকে বিক্রি করিনি। তার পরে সেই ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রী কোন শিবিরে নিয়ে গিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে, তা আমরা জানি না। পুরসভার প্যাডে লেখা অনুযায়ী ওষুধের অর্ডার সরবরাহ করেছি। পুরসভার ওই প্যাড এবং ব্যবহৃত আধিকারিকের সই ভুয়ো কি না সে সম্পর্কেও ধারণা নেই।’’
সূত্রের খবর, ওই দোকান থেকে দু’দফায় ওষুধ কেনা হয়। সেই বাবদ কয়েক হাজার টাকা বকেয়াও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy