Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Hawkers vs Shopkeepers

হকার বনাম দোকানিদের লড়াই, রণক্ষেত্র নিউ মার্কেট

ডাবের খোলা, ইট নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষের দিকে তেড়ে গেলেন। হাতাহাতিও চলল কিছু ক্ষণ। মাঝখানে পুলিশ দাঁড়িয়ে পালন করল ‘রেফারি’র ভূমিকা। দু’টি রাস্তাই বন্ধ থাকল দীর্ঘক্ষণ।

হকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্য়ে গোলমানের জেরে উত্তেজনা, বিক্ষোভ। শনিবার। নিউ মার্কেট।

হকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্য়ে গোলমানের জেরে উত্তেজনা, বিক্ষোভ। শনিবার। নিউ মার্কেট। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪ ০৫:৫৩
Share: Save:

নবান্নের সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই পারস্পরিক দোষারোপ শুরু হয়ে গিয়েছিল নিউ মার্কেটের হকার এবং দোকানদারদের মধ্যে। ধমক দিয়ে তাঁদের থামিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘‘সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে।’’ কিন্তু তার পরে তিন দিনও পেরোয়নি। নিউ মার্কেটে হকার বনাম দোকানদারদের গন্ডগোলের জেরে শনিবার কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল জওহরলাল নেহরু রোড এবং এসএন ব্যানার্জি রোডের একাংশ। ডাবের খোলা, ইট নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষের দিকে তেড়ে গেলেন। হাতাহাতিও চলল কিছু ক্ষণ। মাঝখানে পুলিশ দাঁড়িয়ে পালন করল ‘রেফারি’র ভূমিকা। দু’টি রাস্তাই বন্ধ থাকল দীর্ঘক্ষণ। ফলে, নাজেহাল হলেন সাধারণ মানুষ। যা প্রশ্ন তুলে দিল, জবরদখল করে রাখা জায়গা হাতছাড়া হওয়ার ভয়েই কি নতুন এই পরিস্থিতি তৈরি করা হল?

কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কেন এই পরিস্থিতি হল, খোঁজ নিয়ে দেখব। সাধারণ মানুষ ভুগবেন, এমন কোনও কাজ বরদাস্ত করা হবে না।’’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলকাতা পুলিশের উপ-নগরপাল (সেন্ট্রাল ডিভিশন) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’ কিন্তু এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে পুলিশ স্পষ্ট তথ্য দিতে পারেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ। নিউ মার্কেট সংলগ্ন শ্রীরাম আর্কেড শপিং সেন্টারের ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক মাকসুদ খান তাঁর দোকানের সামনে পার্কিং লটে গাড়ি রাখতে এলে হকারেরা বাধা দেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় মাকসুদকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দুপুর আড়াইটে নাগাদ গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে জওহরলাল নেহরু রোডের দু’ধারের লেন অবরোধ করেন। ৩টে পর্যন্ত অবরোধ চলে। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। ওই ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সেখান থেকে তাঁরা নিজেদের দোকানে গেলে ফের চড়াও হন হকারেরা। এক ব্যবসায়ী দীপক সিংহের অভিযোগ, ‘‘আমরা অবরোধ থেকে সবে নিজের নিজের দোকানে ফিরেছি। তখনই প্রায় ২০০ জন হকার তেড়ে আসেন। ডাবের খোলা, ইট ছুড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় আতঙ্কিত দোকানদারেরা এর পরে নিউ মার্কেট থানা ঘেরাও করেন।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসায়ীরা নিউ মার্কেট থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি এস এন ব্যানার্জি রোড অবরোধ করেন। টানা এক ঘণ্টা অবরোধে মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত তীব্র যানজট তৈরি হয়। বাধ্য হয়ে বাসের যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা রাস্তা অবরোধ করলে প্রায় ৩০০ জন হকার হাতে একটি রাজনৈতিক দলের পতাকা নিয়ে সে দিকে তেড়ে যান। এস এন ব্যানার্জি রোডে হকারেরা নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মুখোমুখি হলে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশ মাঝখানে দাঁড়িয়ে কোনও মতে সামাল দেয়।

নিউ মার্কেটের ‘জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশন’-এর সভাপতি অশোক গুপ্তের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই নিউ মার্কেটে হকারদের দাপটে আমরা দোকান চালাতে পারছি না। রাস্তার উপরে বসে পড়ছেন হকারেরা। বিষয়টি নিয়ে মেয়র ও নগরপালকে বহু বার জানিয়েও লাভ হয়নি।’’ দ্রুত পদক্ষেপ করা না হলে বড় আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তাঁরা। ‘হকার সংগ্রাম কমিটি’র যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস দাস যদিও বলেন, ‘‘শনিবার দুপুরে হকারেরা যা করেছেন, তা অত্যন্ত অন্যায়। বৈধ পার্কিং জ়োনে হকারেরা বসতেই পারেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Street hawkers Shopkeepers New Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy