দিলীপ এবং স্বপ্না মুখোপাধ্যায়।
নেতাজিনগরের দম্পতিকে খুনের কিনারায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজই ছিল মূল সূত্র। এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত ২৯ জুলাই নেতাজিনগরের অশোক অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে খুন হন প্রবীণ দম্পতি দিলীপ মুখোপাধ্যায় ও স্বপ্না মুখোপাধ্যায়। ওই বাড়ির কাছাকাছি একাধিক বাড়ি মিলিয়ে প্রায় ২০টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেই সব ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায় বলে দাবি লালবাজারের। পুলিশ জানিয়েছে, ফুটেজের সূত্র ধরে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, আততায়ী পেশায় মিস্ত্রি। বাঁশদ্রোণী এলাকায় ভাড়া থাকে। ঘটনার রাতে নেতাজিনগর থেকে বাঁশদ্রোণী পর্যন্ত অভিযুক্তের হেঁটে যাওয়ার ফুটেজও পেয়েছে পুলিশ।
গত শনিবার রাতে বিহারের কাটিহারে হানা দিয়ে এই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মহম্মদ হামরুজ আলম নামে ওই মিস্ত্রিকে গ্রেফতার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ধৃত হামরুজ এখন কলকাতা পুলিশের হেফাজতে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সে নেতাজিনগরের একাধিক বাড়িতে বহু দিন ধরে কাজ করেছে। অশোক অ্যাভিনিউয়ের ওই বাড়িতে গত কয়েক দিন ধরে কাজ করছিল। তদন্তকারীরা ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছেন, খুনের আগে অশোক অ্যাভিনিউয়ের ওই গলিতে একাধিক বার এসে ‘রেকি’ করে গিয়েছিল সে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়িতে সারাইয়ের কাজ করার সময়েই হামরুজ বুঝতে পেরেছিল, প্রবীণ দম্পতির কাছে ভাল পরিমাণ নগদ টাকা ও গয়নাগাঁটি রয়েছে। ২৯ জুলাই রাতে লুটপাটের উদ্দেশ্যেই হামরুজ ওই বাড়িতে ঢোকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে মুখোপাধ্যায় দম্পতির দোতলা বাড়ির নীচের তলার দরজা খোলাই ছিল। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ হামরুজ ঘরে ঢুকে সিঁড়ির নীচে লুকিয়ে ছিল। ন’টা নাগাদ স্বপ্নাদেবী দরজা বন্ধ করতে এলে তাঁকে গলা টিপে খুন করে সে। পরে সে বাড়ির দোতলায় উঠে বৃদ্ধের মুখে কাপড় বেঁধে বাড়ির কোথায় টাকা-গয়না রয়েছে, তা জানতে চায়। বৃদ্ধ আলমারিগুলি দেখানো মাত্রই তাঁকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে সে। তার পরে দশটি আলমারি খুলে টাকা, গয়না লুট করে পালায়।
ধৃত পুলিশকে জানিয়েছে, খুন ও লুটপাট করতে প্রায় দু’ঘণ্টা লেগে যায় তার। রাত ১১টা নাগাদ ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে পায়ে হেঁটেই বাঁশদ্রোণীর ভাড়া বাড়িতে পৌঁছয়। পরের দিন দুপুরে ট্রেনে কাটিহারের উদ্দেশে রওনা দেয়। হামরুজের কাছ থেকে একটি হাতঘড়ি, একটি মোবাইল ও নগদ আটত্রিশ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ধৃত দাবি করেছে, সে একাই ওই দম্পতিকে খুন করেছে। এটা সত্যি কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, হামরুজের বিরুদ্ধে অতীতে কোনও খুন বা বড় অপরাধের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে লালবাজারের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘বেহালার খুনের ঘটনায় ধৃতদের মতো নেতাজিনগরের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকও পেশাদার খুনি নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy