Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Maa Flyover

গাড়ি উল্টে বিপত্তি মা উড়ালপুলে

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ মা উড়ালপুলে দুর্ঘটনায় পড়ার পরে এমনই অবস্থা হয়েছে একটি ব্যক্তিগত এসইউভি-র

দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই এসইউভি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই এসইউভি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০২:০৭
Share: Save:

গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে চৌচির। বনেট দুমড়ে ভিতরের দিকে ঢুকে গিয়েছে। গাড়িটি উল্টে যাওয়ার পরে অনেকটা রাস্তা ঘষটে সামনের দিকে এগোনোয় বনেটের উপরের রং বোঝার উপায় নেই! গাড়ির ছাদের অনেকটা অংশও তোবড়ানো। ভাঙা উইন্ডস্ক্রিনের সঙ্গে আটকে রয়েছে ছেঁড়া মাস্ক। গাড়ির মধ্যে এ দিক, সে দিক ছড়িয়ে ভাঙা কাচ আর কয়েক ফোঁটা রক্ত!

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ মা উড়ালপুলে দুর্ঘটনায় পড়ার পরে এমনই অবস্থা হয়েছে একটি ব্যক্তিগত এসইউভি-র (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল)। গাড়িচালক-সহ পাঁচ জনকে কোনও মতে পুলিশ উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বুধবার সকালে লালবাজারের তরফে জানা যায়, কারও আঘাত গুরুতর নয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সকলকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে গাড়িচালক ওয়ালিদাদ খানকে (২৬) গ্রেফতার করেছে তপসিয়া থানা।

পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়ির আরোহীদের বয়স ২৫ থেকে ২৭-এর মধ্যে। ধৃত চালক জেরায় জানিয়েছেন, গাড়িটি তাঁরই। মঙ্গলবার রাতে পাঁচ বন্ধু মিলে তাঁরা চা খেতে গিয়েছিলেন। ফেরার সময়ে মা উড়ালপুলের পূর্ব দিকের রাস্তা ধরে যাচ্ছিলেন সায়েন্স সিটির দিকে। সামনে থাকা একটি গাড়ির গতি হঠাৎ কমে গেলে সেটির ডান দিক দিয়ে গতি বাড়িয়ে বেরোনোর চেষ্টা করেন ওয়ালিদাদ। তখনই তাঁর গাড়ির ডান দিকের চাকা উড়ালপুলের ডিভাইডার ছুঁয়ে যায়। কিন্তু গাড়ির গতি এতই বেশি ছিল যে, এর পরে আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি ওয়ালিদাদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ডিভাইডারে চাকা লাগার সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটি বাঁ দিকে উল্টে যায়। এর পরে ওই অবস্থাতেই কিছুটা ঘষটে এগিয়ে যায় সামনের দিকে। আশপাশে থাকা কয়েকটি গাড়ি দ্রুত ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যায়। কিছুটা দূর গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি থেমে গেলেও সেটির দরজা খুলছিল না। এর পরে দ্রুত খবর যায় তপসিয়া ট্র্যাফিক গার্ডে। মা উড়ালপুলে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা দ্রুত গিয়ে বাইরে থেকে গাড়ির দরজা খুলে পাঁচ জনকে উদ্ধার করেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে গাড়িচালক এবং আরোহীরা মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না জানতে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়।

তপসিয়া থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কেউই মত্ত অবস্থায় ছিলেন না। কারও আঘাতও গুরুতর নয়। তবে যে হেতু গাড়িটির গতি বেশি ছিল, তাই চালকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯ (বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো) এবং ৪৭৭ (জেনে বিপদ ঘটানো) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।’’ বুধবার ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে লালবাজারের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময়ে গাড়িটির গতি ছিল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের কাছাকাছি।

কিন্তু মা উড়ালপুল দিয়ে অত জোরে গাড়ি চলানোর কথাই নয়। ফলে এই ঘটনাতেও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, রাতের শহরে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।

লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, উড়ালপুলের উপরে গাড়ি আটকে গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু উড়ালপুল থেকে নামা-ওঠার সময়ে পর্যাপ্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

national medical college maa flyover
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy