Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

পরিচ্ছন্ন হস্টেল চায় কলকাতাও

সিন্ডিকেট, সেনেট কক্ষ-সহ উপাচার্যের ঘরের অবস্থা পরিবর্তনে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হলেও পড়ুয়াদের থাকার জায়গার ক্ষেত্রে অবহেলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

শোচনীয়: বিধান সরণিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিজি লেডি স্টুডেন্টস হল। —নিজস্ব চিত্র।

শোচনীয়: বিধান সরণিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিজি লেডি স্টুডেন্টস হল। —নিজস্ব চিত্র।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

সম্প্রতি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পড়ুয়াদের ছাত্রাবাসের দাবিতে অনশন শোরগোল ফেলেছে গোটা রাজ্যে। আন্দোলনের মুখে তাঁদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের পরিস্থিতি শোচনীয়, এই অভিযোগ তুলে সরব হলেন সেখানকার পড়ুয়ারা। পলেস্তরা খসে পড়া দেওয়াল, পরিস্রুত পানীয় জলের অভাব, অপরিচ্ছন্ন ঘর নিয়ে ক্ষোভ জমছে পড়ুয়াদের মধ্যে। সিন্ডিকেট, সেনেট কক্ষ-সহ উপাচার্যের ঘরের অবস্থা পরিবর্তনে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হলেও পড়ুয়াদের থাকার জায়গার ক্ষেত্রে অবহেলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মোট ১৬টি ছাত্রাবাস রয়েছে। অভিযোগ, কোনও ছাত্রাবাসেরই সার্বিক পরিস্থিতি ভাল নয়। ছাত্রাবাসের সব জায়গাই অপরিচ্ছন্ন। দেওয়াল, ছাদ থেকে ক্রমাগত খসে পড়ে পলেস্তরা, নোংরা হয়ে যায় বই-খাতা। প্রতিটি তলায় নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও। ছাত্রাবাসগুলির মধ্যে নিউ ল হস্টেল, বিডন রো-এর পিজি লেডি স্টুডেন্টস হল, আমহার্স্ট স্ট্রিটের হস্টেলের অবস্থা বেশি খারাপ।

পিজি লেডি-তে সর্বত্র ঘুরে বেড়ায় বিড়াল। যত্রতত্র পড়ে থাকে আবর্জনা। কয়েক সপ্তাহ আগেই সিলিং-এর কাঠ ভেঙে পড়েছিল। পানীয় জল পরিশোধনের যন্ত্রটিও দীর্ঘ দিন ধরে খারাপ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অন্য দিকে, নিউ ল’ হস্টেলে ছাদ থেকে জল পড়ার অভিযোগ করছেন পড়ুয়ারা। এ ছাড়াও অভিযোগ উঠেছে খাবারের মান নিয়ে। নিউ ল হস্টেলের আবাসিক এক ছাত্র বলেন, ‘‘ডাল খাচ্ছি না গঙ্গার জল, সেটাই বুঝতে পারি না।’’ ছাত্রীদের হস্টেলে অনেকেই বাধ্য হয়ে নিজেদের রান্না করে নেন। দুই হস্টেলের আবাসিকেরাই অভিযোগ করেছেন, শৌচালয় ঠিক সময়ে পরিষ্কার করা হয় না।

এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সুজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সর্বত্রই পড়ুয়াদের স্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে। কারণ সরকারের অঙ্গুলি হেলনে চলেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষরা।’’ এ ছাড়া, পড়ুয়াদের জন্য যে বাস পরিষেবা চালানো হয়, সেটাও অনিয়মিত বলে অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি র‌্যাগিং বন্ধ করার দাওয়াই হিসেবে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিদ্যাসাগর ও নিউ ল হস্টেলে শুধু প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের থাকতে দেওয়া হবে। সিনিয়রদের সরে যেতে হবে অন্য জায়গায়। পড়ুয়াদের দাবি, এখানেও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) দীপক কর জানিয়েছেন, সব হস্টেলের পরিস্থিতি ঠিক রয়েছে। সর্বক্ষণের জন্য সুপার নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলছে। তিনি বলেন, ‘‘সোমবারই আমি, উপাচার্য এবং একটি দল কিছু হস্টেল ঘুরে এসেছি। কোথাও কোনও সমস্যা নেই। যেখানে প্রয়োজন, সেখানে মেরামতিও করা হয়েছে। পড়ুয়াদের যেন কোনও অভিযোগ না থাকে, সেই দিকে আমরা বিশেষ ভাবে নজর দিয়েছি। এ ছাড়া বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের জন্যও ব্যবস্থা করা হচ্ছে’’। তবে উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মেসেজেরও।

অন্য দিকে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ বছর ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে হিন্দু হস্টেল সংস্কার করে পড়ুয়াদের থাকার ব্যবস্থা করার কথা ছিল। কিন্তু তা করে উঠতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। উল্টে সময়মতো কাজ না করার জন্য মেরামতির টাকা রাজ্য কোষাগারে ফেরত চলে গিয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, কর্তৃপক্ষের আশ্বাস এ বছর যাঁরা স্নাতকে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরা যাতে হস্টেলে থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy