বিচারপতি অমৃতা সিংহ। — ফাইল চিত্র।
বেআইনি নির্মাণ বন্ধের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে প্রবল দাবদাহের কারণে বৃহস্পতিবার মানবিকতার রাস্তাতেই হাঁটল আদালত। হাই কোর্টের নির্দেশে বিধাননগরের যে বহুতল থেকে বিদ্যুৎ এবং জলের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে সাময়িক ভাবে তা সরবরাহের নির্দেশ দিল আদালত। তবে বিচারপতি অমৃতা সিংহ এ-ও জানিয়েছেন, ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হবেই।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি সিংহ এই মামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যত দিন এই বহুতলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে, তত দিন আপনারা বিকল্প জায়গা দেখবেন না, জানি। কিন্তু এটা বলে দিচ্ছি, ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হবেই।’’ পাশাপাশি, বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই প্রবল গরমে যাঁরা এখনও ওই বহুতলে রয়েছেন, তাঁদের কষ্ট বুঝতে পারছি। তাই সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিলাম। কিন্তু আবার বলছি, ওই বহুতল ভাঙা হবেই। তাই এখনই অন্যত্র সরে যান।’’
বিধাননগরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেআইনি ওই আবাসনে জল ও বিদ্যুৎ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সিংহের নির্দেশ ছিল, ৩০ দিনের মধ্যে ওই আবাসন খালি করতে হবে। আপাতত ওই আবাসনে জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকবে। তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছিলেন, ১২ এপ্রিলের মধ্যে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ১ কোটি টাকা জমা দিতে হবে ওই আবাসনের দুই নির্মাতাকে। তাঁরা বিধাননগর এলাকায় কোনও নির্মাণ করতে পারবেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে পুরসভা। পুরসভাকে ওই বাড়ি ভাঙার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।
বিধাননগরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। ওই নির্মাণ শুরু করার আগে পুরসভার অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানান দুই নির্মাণকারীর আইনজীবী। অনুমতি ছাড়াই পাঁচতলা ভবন নির্মাণ কী ভাবে হল, সেই প্রশ্ন তোলে আদালত। নির্মাণকারীদের আইনজীবী স্বীকার করেন, অনুমতি ছাড়াই নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরে অনুমতি নেওয়া হয়। শুনে বিচারপতি সিংহের মন্তব্য ছিল, ‘‘নির্মাণ যদি অবৈধ ভাবে শুরু হয়, তবে তা ধুলোয় মিশিয়ে দিতেই হবে। গার্ডেনরিচের দুর্ঘটনার পরে বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে আরও কড়া হতে হবে।’’ নির্মাণকারীদের জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি। আদালত জানায়, দুই নির্মাতার সম্পত্তির খতিয়ান হলফনামা মাধ্যমে জমা দিতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া দুই নির্মাতা কোনও সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবেন না।
ওই বহুতলের এক বাসিন্দা দাবি করেছিলেন, আবাসনের অধিকাংশ বাসিন্দা গরিব। এখন তাঁরা কোথায় যাবেন? বিচারপতি এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘খুব গরিব লোকেদের মরে যাওয়া উচিত? এটাই বলতে চান? তাঁরা কোথায় যাবেন মানে? তাঁদের উচিত ছিল বৈধ অনুমোদন রয়েছে কি না, তা যাচাই করে ওই আবাসনে বিনিয়োগ করা। আগে নিজের জীবন বাঁচান, যদি এই বাড়ি ভেঙে পড়ে তবে কী হবে? গরিব মানুষ কি মরার জন্য জন্মেছেন? জীবনের মূল্য অনেক বেশি।’’ গরমের কারণে এ বার সেই বহুতলের বাসিন্দাদের কথা ভেবে সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎ এবং জল সরবরাহ করতে বললেন বিচারপতি সিংহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy