Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Jadavpur University

যাদবপুরকাণ্ডের ১০ দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য বোস

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে সটান উপাচার্যের না থাকার যুক্তি দিতে দেখা গিয়েছে।

C V Ananda Bose and Prof Buddhadeb Sau

(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস এবং নতুন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ২৩:২৬
Share: Save:

যাদবপুরকাণ্ড নিয়ে তুলকালাম পরিস্থিতির মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে। তিনি গণিতের অধ্যাপক।

গত ৩১ মে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে ইস্তফা দিয়েছেন সুরঞ্জন দাস। আচার্য বোসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। পরে ওই পদে অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে যাদবপুরেরই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ দত্তকে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু গত ৪ অগস্ট অমিতাভও ইস্তফা দেন। পরে জানা যায়, রাজ্যপাল বোসই তাঁকে বলেছেন ইস্তফা দিতে। এর পর আর নতুন করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাবে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। ফলত, উপাচার্যহীন হয়েই ছিল যাদবপুর। তার মধ্যেই গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে প্রথম বর্ষের এক নবাগত পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। সেই আবহে এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য।

নবাগত পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় হস্টেলে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশ্যে আসছে যাদবপুরের হস্টেল আঁকড়ে পড়ে থাকা প্রাক্তনীদের ‘অত্যাচার’-এর কথাও। সব কিছুর জন্য আঙুল উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দিকেই। প্রশ্ন ওঠে, তাঁদের নজর এড়িয়ে এবং নিয়মের পরোয়া না করে কী ভাবে দিনের পর দিন আইন ভেঙে হস্টেলে পড়ে থাকতেন এই প্রাক্তনীরা? সামগ্রিক ভাবেই নজরদারি ও শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকে দায়ী করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যাদবপুরের ঘটনায় বিজেপির তরফে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তখন ব্রাত্য বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বের শীর্ষে এখনও রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল। ফলে দায় যদি কারও উপর বর্তায়, তবে তাঁর উপরেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে সটান উপাচার্যের না থাকার যুক্তি দিতে দেখা গিয়েছে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কমিটির সদস্যেরা বহু পুরনো। কেন সেই প্যানেলে কোনও বদল হয়নি? জবাবে রেজিস্ট্রার বলেছিলেন, ‘‘উপাচার্য থাকলে এবং এগ্‌জিকিউটিভ কমিটির বৈঠক নিয়মিত করতে পারলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হত। উপাচার্য না থাকলে অনেক ক্ষেত্রে অনেক অনুমোদন পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে।’’

গুরুত্বের বিচারে উপাচার্যের এক ধাপ পরেই রেজিস্ট্রার। তাঁর মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছিল, তিনি কি পরোক্ষে উপাচার্য নিয়োগের ভারপ্রাপ্ত আচার্য তথা রাজ্যপালের দিকেই দায় ঠেলছেন? এ সব নিয়ে তুলকালামের মধ্যেই শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE