সম্প্রতি বিজেপির তরফে দক্ষিণ কলকাতার লোকসভা এলাকার বুথ স্বশক্তিকরণ অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে। ফাইল চিত্র।
মমতার কেন্দ্রে এ বার দুর্গাপুজোর আসর বসাতে চায় বিজেপি। শনিবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকেই এই বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি বিজেপির তরফে দক্ষিণ কলকাতার লোকসভা এলাকার বুথ স্বশক্তিকরণ অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন বিধানসভার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন শুভেন্দু। আগামী লোকসভা ভোটে কীভাবে তৃণমূলকে টক্কর দেওয়া যায়, সেই রণকৌশল সাজাতে একের পর এক গোপন বৈঠক করছেন তিনি। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও বটে। তাঁর সঙ্গে বিধানসভাতে সম্মুখসমর হয় বিরোধী দলনেতার। এ বার শারদোৎসবেও ভবানীপুর বিধানসভায় মমতা-শুভেন্দু দ্বৈরথ দেখা যেতেই পারে, এমনটাই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের।
ভবানীপুরে মমতা ছাড়াও বাস করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়াও ভবানীপুর বিধানসভার বাসিন্দারা হলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও মদন মিত্র। এ ছাড়াও রয়েছেন ৮ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। স্বাভাবিক কারণেই এই বিধানসভায় তৃণমূল নেতৃত্বের প্রভাব যথেষ্টই। সেই ভবানীপুরে দলীয় সংগঠন চাঙ্গা করতে বেশকিছু উপায় ও নির্দেশ দেন তিনি। শনিবারের বৈঠকে শুভেন্দু সামাজিক অনুষ্ঠানে বেশি বেশি করে অংশগ্রহণ করে ভোটাদের সঙ্গে জনসংযোগ বৃদ্ধি করতে নির্দেশ দেন। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবের পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আগামী ১ বছর সংগঠন বাড়ানোর কাজ করার কথা বলেন নন্দীগ্রাম বিধায়ক।
বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের থেকেই শুভেন্দু জানতে পারেন, ভবানীপুর বিধানসভার অন্তর্গত যে সব দুর্গাপুজো হয়, তাতে হয় তৃণমূলের নেতারা জড়িত, নয় তাতে জড়িত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা। আর শাসকদলের নেতাদের এমন প্রভাবের কারণেই বিজেপি নেতা-কর্মীদের কোনও পুজো কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয় না। বিজেপি কর্মীদের ‘মনঃকষ্ট’ শুনে পাল্টা একটি নিদান দেন শুভেন্দু। সঙ্গে জানান, যে সমস্ত বিধানসভায় বিজেপির সংগঠন দুর্বল, সেখানে বিজেপি কর্মীরাই দুর্গাপুজো করতে পারেন। সেক্ষেত্রে দল কর্মীদের সাহায্য করবে। ভবানীপুর বিধানসভার কর্মীরাও সম্মিলিত ভাবে দুর্গাপুজো করুন। তাতে যে সাহায্য লাগবে, তা করতে তাঁরা প্রস্তুত। এ ক্ষেত্রে ভবানীপুরের বিজেপি কর্মীরা জানান, পুজো করতে গেলে প্রশাসনের সাহায্য ও অনুমতি দুইই প্রয়োজন হয়। কিন্তু যেখানে সাধারণ মিটিং, মিছিলের অনুমতিই দেওয়া হয় না বিজেপি নেতৃত্বকে, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রে দুর্গাপুজো করতে গেলে তার অনুমতি কোনও ভাবেই দেবে না প্রশাসন।
কর্মীদের এমন কথা শুনে বিকল্প পথের সন্ধান দেন শুভেন্দু। তিনি জানান, কলকাতা শহরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিয়ে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা যেতেই পারে। ভবানীপুর বিধানসভা এলাকায় কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের বেশকিছু সম্পত্তি রয়েছে। তাই বিজেপির পুজো সেই সব জায়গায় হতে পারে বলেও বিরোধী দলনেতাকে জানানো হয়েছে। কর্মীদের সেই প্রস্তাবে যে তাঁর সায় রয়েছে, তাও জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, সেই পুজোয় অংশগ্রহণ করতে আসবেন তিনি।
এই দুর্গাপুজো দিয়ে আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি কর্মীদের হারানো মনোবল ফেরাতে চাইছেন বিরোধী দলনেতা। কারণ, ২০২১ সালের পরাজয়ের পর ভবানীপুর বিধানসভার বিজেপির সংগঠন একপ্রকার ভেঙে গিয়েছে। তাঁদের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার ঘটিয়ে লোকসভা ভোটের আগে ময়দানে নামানোই লক্ষ্য বিরোধী দলনেতার। এমনটাই মত ভবানীপুরের বিজেপি কর্মীদের। তাই গ্রীষ্মের মরসুম থেকেই ভবানীপুরের বিজেপি নেতা-কর্মীরা তাঁদের শারদোৎসবের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy