শুভেন্দু অধিকারী-সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
হাতে আর দিন ২০ সময় রয়েছে। তবে এখন থেকেই কলকাতার সমাবেশে বড় জমায়েতের লক্ষ্যে জোর প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি। দলের ইচ্ছা, ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে যেখানে প্রতি বছর ২১ জুলাই ‘শহিদ দিবস’-এর কর্মসূচি করে তৃণমূল, সেখানেই হবে মঞ্চ। তার জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদনও করা হয়েছে। একান্তই যদি সেই অনুমতি না পাওয়া যায় তবে কী কী করা হবে তার প্রস্তুতিও বিজেপি রাখছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর।
পুজোর আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনের সামনে যখন অবস্থানে বসেছিলেন, তখনই নতুন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেছিলেন, নভেম্বরে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিতদের সমাবেশ হবে কলকাতায়। রবিবার রাতে রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে সেই ঘোষণা সাংগঠনিক সিলমোহর পায়। গত ২৯ অক্টোবর কোর কমিটির বৈঠকে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করেন, আগামী ২৯ নভেম্বর হবে সেই সমাবেশ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভার অনুমোদন চেয়ে কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন করে রেখেছে বিজেপি। তবে এখনও পর্যন্ত লালবাজারের তরফে বিজেপিকে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলা হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে ‘প্ল্যান বি’ হিসাবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। এ নিয়ে বিজেপি একটু আশাবাদীও। কারণ, অতীতে এই জায়গাতেই মঞ্চ বাঁধার অনুমতি পুলিশের তরফে না-পাওয়ায় আদালতে গিয়ে সুফল পেয়েছিলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। এ বারও যাতে আদালতের কাছ থেকে অনুমতি আদায় করা যায় সেই প্রস্তুতির কথা অবশ্য স্পষ্ট করে বলছেন না নেতারা। তবে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘কলকাতায় তৃণমূল নেতারা অনেক সম্পত্তি বৃদ্ধি করলেও ওই জায়গার দলিল বানিয়ে ফেলেছেন বলে তো শুনিনি। তবু দলদাস পুলিশ নানা অজুহাত দেখিয়ে অনুমতি না-দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সে ক্ষেত্রে আদালতের দরজা তো খোলাই রয়েছে।’’
তবে সুকান্ত না-জানালেও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ‘প্ল্যান সি’ ভেবে রেখেছেন রাজ্য নেতৃত্ব। একান্তই যদি ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা না-করা যায় তবে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে হবে সমাবেশ। কারণ, বিজেপি কোনও ভাবেই এই সভা বানচাল হোক তা চাইছে না। বেশ কিছু দিন ধরে যে ভাবে তৃণমূল কেন্দ্র ও বিজেপির বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে চলেছে তার জবাব দিতেই এই সভার আয়োজন। আর সেই জবাব যাতে দেওয়া যায় সেটাই রাজ্য বিজেপির আশু লক্ষ্য।
১০০ দিনের কাজে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ করছে নবান্ন এবং শাসক তৃণমূল। গত ২ অক্টোবর দিল্লিতে সেই আন্দোলন নিয়ে যান অভিষেক। এর পরে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্ভব না-হওয়ায় কলকাতায় ফিরে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেন তিনি। সেই সময়েই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি কলকাতায় এসেছিলেন অভিষেকের অভিযোগের জবাব দিতে। তখনই মন্ত্রীর সামনে পাল্টা অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। তিনি দাবি করেন, রাজ্যের বহু যোগ্য মানুষ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পাননি। সেই ‘বঞ্চিত’ মানুষদের নিয়েই কলকাতায় হবে বড় সমাবেশ। সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতি আসতে পারেন। অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতারাও আসতে পারেন।
ওই সভায় এক লক্ষ মানুষের সমাগম হবে বলে শুভেন্দু ঘোষণা করেছিলেন। পরে একই কথা বলেছেন সুকান্তও। এখন দল দক্ষিণবঙ্গের সব শাখা সংগঠনকেও এই সমাবেশ সফল করার লক্ষ্য দিয়েছে। বুধবার এ নিয়ে রাজ্য বিজেপির সল্টলেক সেক্টর ফাইভের দফতরে বৈঠকে বসেন রাজ্য নেতৃত্ব। সেখানে দলের সব মোর্চা নেতৃত্বকেও ডাকা হয়েছিল। রাজ্য বিজেপির সেই সংযুক্ত মোর্চার বৈঠকে যোগ দিতে এসে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা সভা করবই। সে দিন রাজ্যের এক লাখ বঞ্চিত মানুষ কলকাতায় আসবেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর ঘুম ভাঙাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy