প্রিজন ভ্যানে তিন বুকি। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারতের হয়ে ১০০ টাকা বাজি ধরলে পাওয়া যাবে ১৪৩ টাকা। কেউ যদি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১০০ টাকা বাজি ধরেন, তা হলে মিলবে ১৪১ টাকা। বাঙুরের ‘এ’ ব্লকে একটি বাড়িতে সোমবার সন্ধ্যায় বসেছিল এমনই এক বেটিং চক্র। শুধু কলকাতাই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রমাগত এসএমএস-এ আসছিল বেটিং-এর দর। খবর পেয়ে বেটিং চলাকালীন সেই বাড়িতে হানা দিল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। হাতেনাতে ধরা পড়ল চক্রের ছ’জন।
কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, ধৃতদের নাম সঞ্জয় বাগাড়িয়া, মনোজ চৌধুরী, বিজয়কুমার গুপ্ত, রাকেশ গুপ্ত, দেবু মিদ্যা এবং বাপ্পা শর্মা। উদ্ধার হয়েছে ৩৫ লক্ষ ২৭ হাজার ৭০০ টাকা, ১৪টি মোবাইল, দু’টি ল্যাপটপ, কয়েকটি হার্ড ডিস্ক, ক্যাশ কাউন্টিং মেশিন, ক্যালকুলেটর ও আরও কিছু জিনিস। গোয়েন্দা প্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “এটি একটি আন্তঃরাজ্য ক্রিকেট বেটিং-চক্র। রাজস্থান, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গ— তিন জায়গার বুকিরা এই চক্রে যুক্ত। তিনটি রাজ্যের মধ্যে বেটিং চালাতে ধৃতেরা একটি সফ্টওয়্যার ব্যবহার করছিল। দর আসছিল এসএমএসের মাধ্যমে।”
পুলিশ জেনেছে, সেমিফাইনালে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার খেলাই নয়, এ পর্যন্ত বিশ্বকাপের যত খেলা হয়েছে অধিকাংশ খেলাতেই সক্রিয় ছিল এই চক্রটি। এটি মূলত চালানো হচ্ছিল দিল্লি থেকে। সব মিলিয়ে এক কোটির মতো লেনদেন হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে বাঙুর থেকে ধরা হয় সঞ্জয় ও মনোজকে। তাদের জেরায় বড়বাজারের গায়ত্রী মার্কেটের কাছে এক অফিসে এই চক্রের খোঁজ মেলে। কলকাতা পুলিশের সাহায্যে সেখান থেকে ধরা পড়ে বাকি চার জন।
পুলিশ আরও জেনেছে, কলকাতায় এই চক্রের চাঁই ছিল সঞ্জয়। শেয়ার কেনাবেচার অফিসের আড়ালে সক্রিয় ছিল চক্রটি। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, এই বেটিং চক্রটি এতটাই জাল বিস্তার করেছিল যে ছয় বুকি পাকড়াও হওয়ার পরেও তাদের কাছে থাকা মোবাইলগুলিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেটিং-এর দর নিয়ে এসএমএস আসছিল। এই চক্রটির সঙ্গে আন্তর্জাতিক বেটিং-চক্রের কোনও যোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy