Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজোয় শরিক মহাদেব-আব্দুলেরা

বারাসত শহরের দু’পাশে দত্তপুকুর এবং শাসন এলাকা। মুসলিম অধ্যুষিত ওই এলাকায় কয়েক ঘর হিন্দুর বাস। শারদোৎসব বলে কথা। তাই পরম্পরা মেনে মিলেমিশে এখানে দেবী দুর্গার পুজো করেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষই।

মণ্ডপে প্রতিমা পৌঁছতে একজোট। নিজস্ব চিত্র

মণ্ডপে প্রতিমা পৌঁছতে একজোট। নিজস্ব চিত্র

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০৭
Share: Save:

উৎসবের প্রস্তুতিতে বাঁশ বেঁধেছেন ওঁরা। কুমোরপাড়া থেকে কাঁধে বয়ে প্রতিমা এনেছেন কাজি, আব্দুল। নিজেরাই চাঁদা দিয়ে পাকা নাটমন্দির গড়ে দুর্গাপুজোয় মেতেছেন গিয়াসউদ্দিন, জিয়াউল। ছেলেপুলেদের নতুন জামাকাপড়ও কিনে দিয়েছেন জিয়াউলেরা।

বারাসত শহরের দু’পাশে দত্তপুকুর এবং শাসন এলাকা। মুসলিম অধ্যুষিত ওই এলাকায় কয়েক ঘর হিন্দুর বাস। শারদোৎসব বলে কথা। তাই পরম্পরা মেনে মিলেমিশে এখানে দেবী দুর্গার পুজো করেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষই।

দত্তপুকুরের তেঁতুলতলার দক্ষিণপাড়া পল্লিশ্রী সঙ্ঘের পুজো কেবল গৌতম, মহাদেব কিংবা রাজুদের নয়। ওঁদের সঙ্গে পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছেন কাজি-রফিকেরা। বাঁশ বাঁধা, কাঁধে করে কুমোরপাড়া থেকে মণ্ডপে প্রতিমা আনা— সব কাজই। রফিকের কথায়, ‘‘পাশাপাশি থাকি। দুর্গাপুজোয় নতুন জামাকাপড় না কিনলে বা পুজো না করলে মন খারাপ তো হয়েই যায়। কখনও মনে হয়নি, এ পুজো আমাদের নয়।’’ পুজোর বয়স ৭৮ বছর। পুজোর এক সদস্য গৌতম সাধুখাঁ বলেন, ‘‘ছোট থেকেই দেখছি, আব্দুলদের নানা-নানির সঙ্গে আমার দাদু-দিদাও মিলেমিশে পুজো করছেন। সেই রীতি কিন্তু আজও বদলায়নি।’’

যেমন বদলায়নি ৪৬ বছরের পুরনো শাসন সর্বজনীন আদিবাসীবৃন্দের দুর্গাপুজো। সে কালে হারুন অল রশিদ, বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়, কৃষ্ণপদ বিশ্বাস এবং সতীশ পালের মতো বন্ধুরা একসঙ্গে শুরু করেছিলেন পুজো। বাঁশ ও টিনের ছাউনির নীচে পূজিত হতেন দেবী। সেই পরম্পরা ধরে রেখেছেন তাঁদেরই উত্তরসূরি নরেশ পাল, অসীম বিশ্বাস, গিয়াসউদ্দিন, জিয়াউলেরা। দুই সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের চাঁদায় পাকা নাটমন্দির হয়েছে।

পুজো কমিটির সম্পাদক নরেশ বলেন, ‘‘বাপ-ঠাকুর্দার সময় থেকে চলছে পুজো। আজও দেবীবরণ, অঞ্জলির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খাওয়াদাওয়ায় অংশ নেন সবাই।’’ অসীম বলেন, ‘‘প্রতিমাও আনতে পাশে থাকেন গিয়াসুদ্দিন, জিয়াউল। এ বারের বাজেট ৮০ হাজার টাকা। সবার মিলিত চাঁদায় পুজো হচ্ছে।’’ গিয়াসউদ্দিনের কথায়, ‘‘নতুন জামাকাপড় না হলে বাচ্চারা মন খারাপ করে বসে থাকে। দুর্গাপুজো তো আমাদেরও।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2019 Barasat Hindu Muslim Harmony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy