খাড়াই: এই পথ পেরিয়েই বরাহনগর মেট্রো স্টেশনে পৌঁছতে হয় যাত্রীদের। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
উচ্চতার নিরিখে কলকাতা মেট্রোর উচ্চতম স্টেশন বরাহনগর। কিন্তু মাটির উপরে প্রায় ৫৫ ফুট উচ্চতাই এখন যাত্রী টানার ক্ষেত্রে ওই স্টেশনের মূল বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় সাড়ে তিনশো মিটার রাস্তা হাঁটার পাশাপাশি টিলা সমান উঁচুতে উঠে স্টেশনে ঢুকতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, এই অস্বাচ্ছন্দ্যই নতুন স্টেশন ব্যবহারে বহু যাত্রীর আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে।
যদিও মেট্রোকর্তাদের দাবি, শুধু স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের অনুমতি থাকায় যাত্রী এখন কম রয়েছে। টোকেন ব্যবহার শুরু হলেই তা বাড়বে বলে আশা তাঁদের।
মেট্রো সূত্রের খবর, উত্তর শহরতলির বি টি রোড, ডানলপ, ব্যারাকপুর সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার যাত্রীদের কথা ভেবেই বরাহনগর স্টেশনকে ধারে-ভারে অনেকটা বড়সড় চেহারার করা হয়েছে। দিনে ৫০ হাজারের মতো যাত্রী ওই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন বলে দাবি মেট্রো কর্তৃপক্ষের। যদিও পরিষেবা শুরুর পরে দেখা যাচ্ছে, দৈনিক মাত্র সাড়ে চার হাজার যাত্রী বরাহনগর স্টেশন ব্যবহার করছেন। অথচ প্রান্তিক স্টেশন হওয়া সত্ত্বেও দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন তুলনায় বেশি যাত্রী টানছে। ওই স্টেশনের দৈনিক যাত্রী সংখ্যা সাত থেকে ন’হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। গত তিন সপ্তাহের প্রতি দিনই যাত্রী সংখ্যার নিরিখে দক্ষিণেশ্বরের থেকে প্রায় কয়েক যোজন পিছিয়ে থেকেছে বরাহনগর।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এক পাশে বরাহনগর রেল স্টেশন এবং অন্য পাশে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উড়ালপুল থাকায় নোয়াপাড়ার দিকে প্রায় সাড়ে তিনশো মিটার সরিয়ে এনে এই মেট্রো স্টেশন নির্মাণ করতে হয়েছে। কার্যত, শিয়ালদহ-ডানকুনি রুটের রেললাইন ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের মাঝের পরিসরে নোয়াপাড়ার দিকে সরে স্টেশনটি তৈরি করা হয়েছে। বি টি রোড, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে এবং বরাহনগর রেল স্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং রেলপথের উপর দিয়ে মেট্রোর লাইন দক্ষিণেশ্বরের দিকে নিয়ে যেতে হয়েছে। ফলে সামগ্রিক মেট্রোপথের উচ্চতা বরাহনগরের কাছে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। স্টেশনের উচ্চতাও সেই কারণেই সব থেকে বেশি। উচ্চতম মেট্রো স্টেশনে পৌঁছতে যাত্রীদের বি টি রোড থেকে অনেকটা চড়াই পথ উঠতে হচ্ছে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসা যাত্রীদের ওই মেট্রো স্টেশনে পৌঁছনোর কার্যত সুযোগ নেই। এই সব কারণেই এখনও যাত্রীদের কাছের হয়ে উঠতে পারেনি বরাহনগর মেট্রো স্টেশন।
কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে উঠতে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে চান মেট্রোর কর্তারা। ওই মেট্রো স্টেশনের সামনে, অর্থাৎ নোয়াপাড়ার দিকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশ দিয়ে একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে মেট্রোর। সেই পরিকল্পনা কার্যকর হলে, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসা যাত্রীরা ওই স্টেশন থেকে মেট্রো ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। এর পাশাপাশি বরাহনগর রেল স্টেশনের বুকিং অফিস থেকে মেট্রো স্টেশনে যাওয়ার কোনও পথ তৈরি করা যায় কি না, কিংবা মেট্রো স্টেশন চত্বরে ব্যাটারিচালিত গাড়ির ব্যবস্থা করা যায় কি না— সে সব নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।
এ প্রসঙ্গে মেট্রোর এক কর্তা বলেন, “এখন তো শুধুমাত্র স্মার্ট কার্ড চালু আছে। টোকেন চালু হলে পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy