শনিবার বাঘাযতীন উড়ালপুল থেকে নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বেসরকারি বাস শুভজিতের স্কুটারে ধাক্কা দিয়ে তাঁকে পিষে দেয়। নিজস্ব চিত্র
বাঘাযতীনে পথ দুর্ঘটনায় ভাইকে হারিয়ে অঝোরে কাঁদছেন দিদি সুপর্ণা। জেঠুকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন ভাই শুভজিৎ সুর। আর পথেই ঘটে গেল ওই মর্মান্তিক ঘটনা। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে দিদির থেকে ফোঁটা নেওয়ার কথা ছিল শুভজিতের। তা আর হল না। কান্নায় ভেঙে পড়ে সুপর্ণা বলছেন, ‘‘এ বার মায়ের কী হবে। কী বলব আমি মা-কে? আমরা ভেসে গেলাম।’’
শনিবার হাসপাতালে যাওযার পথে বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে শুভজিতের। পরিবার সূত্রে খবর, কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন শুভজিতের জেঠু। সকালে মেডিক্লেমের কিছু নথি জমা করতে যাচ্ছিলেন শুভজিৎ। তার পরই ঘটে এই দুর্ঘটনা।
সম্প্রতি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর চাকরির জন্য ক্যাম্পাসিংয়ে বসছিলেন শুভজিৎ। বছর দেড়েক আগে বিয়ে হয়েছে দিদি সুপর্ণার। ভাইফোঁটার জন্য বাপের বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। প্রতিবেশী অনিন্দ্য চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘সকালে ও দিদিকে বলেছিল, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেই ফোঁটা নেবে। সে আর হল কই! এমন বিপর্যয় নেমে আসবে ভাবতে পারিনি।’’
শুভজিতের কাকুর ছেলে জয়দীপ বলেন, ‘‘আমার টিউশন ছিল বলে আগে আমাকে ফোঁটা দিয়েছিল দিদি। ওর (শুভজিতের) হাসপাতাল থেকে ফিরে ফোঁটা নেওয়ার কথা ছিল।’’
ভাইফোঁটার দিন সকালে শহরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। শনিবার বাঘাযতীন উড়ালপুল থেকে নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বেসরকারি বাস স্কুটারকে ধাক্কা দেয়। স্কুটার আরোহী রাস্তায় পড়ে গেলে তাঁকে পিষে দেয় ওই বেসরকারি বাস। সকাল নটা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে ওই স্কুটার আরোহী শুভজিৎকে নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন এবং ট্রাফিক গার্ডের কর্মীরা। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। দুর্ঘটনার পর বাসটি উড়ালপুলে গড়িয়ে নামতে থাকে। চলন্ত বাস থেকেই লাফ মেরে চালক পালান। চলন্ত বাস থামান এক যাত্রী। তা হলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটত বলে পুলিশের আশঙ্কা।
(এই প্রতিবেদন প্রথম প্রকাশের সময় শুভজিতের বাবা প্রয়াত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল, যে তথ্য ভুল। এই ভুলের জন্য প্রয়াত শুভজিতের পরিবার এবং পরিচিতের কাছে আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy