Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Biometric

বায়োমেট্রিকের পরিবর্তে হাজিরা খাতায়-কলমেই!

যদি কোনও আধিকারিক এবং কর্মী ধারাবাহিক ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের পরে অফিসে ঢোকেন এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সময়ের আগে অফিস থেকে বেরিয়ে যান, তা হলে তাঁর ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস ঘড়াই
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২১ ০৬:৫৩
Share: Save:

এক দিকে ই-অফিসের উপরে জোর। অথচ হাজিরার ক্ষেত্রে চিরাচরিত ‘অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার’-এর উপরেই ভরসা। বিপ্রতীপ এই অবস্থানের জেরেই যেন ‘মেলাবেন তিনি মেলাবেন’-এর ক্ষেত্র কলকাতা পুরসভা!

ঘড়ি ধরে অফিসে ঢুকতে হবে। অনুমতি ছাড়া অফিস শেষের আগে বেরোনো যাবে না। যদি কোনও আধিকারিক এবং কর্মী ধারাবাহিক ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের পরে অফিসে ঢোকেন এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সময়ের আগে অফিস থেকে বেরিয়ে যান, তা হলে তাঁর ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে গত মাসে এমনই কড়া পদক্ষেপ করেছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ।

অবশ্য এ বারই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বার পুর অফিসার এবং কর্মীদের সময় মতো অফিসে ঢোকা এবং নির্দিষ্ট সময়ে বেরোনোর জন্য ২০১৪, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে একাধিক ফরমান জারি করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে আবার এটাও বলা হয়েছিল, কোন দফতরের কোন কর্মী কখন কাজে ঢুকছেন, ঢুকতে দেরি হচ্ছে কি না অথবা তিনি গরহাজির থাকছেন কি না, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি হবে। কর্মীদের বেতন দেখভাল করে যে দফতর, সেই ‘সার্ভিস রেকর্ডস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস সেল’-এ প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ওই রিপোর্ট জমা পড়ার কথা বলা হয়েছিল। যদি নির্দিষ্ট সময়ে রিপোর্ট জমা না পড়ে, তা হলে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীদের বেতনের বিল দেওয়ার প্রক্রিয়াই শুরু হবে না বলে জানানো হয়েছিল। আর রিপোর্ট জমা না-পড়ার জন্য দায়ী করা হবে সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রধানকে।

তার পরেও সামগ্রিক পদ্ধতিতে ফাঁক থেকে যাওয়ায় এই সাম্প্রতিক নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, যেখানে পুরসভা ‘ই-অফিস’ বা ‘পেপারলেস অফিস’-এর উপরে জোর দিচ্ছে, সেখানে কেন পুরসভার সমস্ত অফিসে সামগ্রিক ভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে না? সেটা চালু হলে তো আর ‘অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার’-এর উপরে নির্ভর করতে হবে না। বরং সেটাই ‘ই-অফিস’ ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের অনেক অফিসেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সামগ্রিক ভাবে চালু করাটা এক দিনে হবে না। এই সংক্রান্ত কোনও প্রস্তাব এলে তখন সেটা ভেবে দেখা যেতে পারে।’’

অবশ্য পুর প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা নতুন বিষয় নয়। অতীতেও পুরসভায় সেই চেষ্টা করা হয়েছিল। তখন দেখা গিয়েছিল, কেউ বা কারা বায়োমেট্রিক যন্ত্র ভেঙে দিয়েছেন বা অন্য ভাবে খারাপ করে দিয়েছেন। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘পুরসভার ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিকের অভিজ্ঞতা খুব একটা ভাল নয়। ফলে সামগ্রিক ভাবে বায়োমেট্রিক চালু করাটা সহজে সম্ভব বলে মনে হয় না।’’ আর এক পুরকর্তার বক্তব্য, ‘‘করোনা সংক্রমণের সময়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু না করাই ভাল। তা ছাড়া এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত।’’

আর সে কারণেই এক দিকে ই-অফিসের উপরে জোর দিলেও এখনই পুরোদস্তুর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরার পথে হাঁটতে নারাজ পুরসভা। তার থেকে বরং কোনও পুর আধিকারিক এবং কর্মীর ধারাবাহিক ভাবে দেরিতে অফিসে ঢোকা এবং ঊর্ধ্বতনের অনুমতি ছাড়াই অফিস থেকে বেরোনোর ক্ষেত্রে ‘সি এম সি অফিসার্স অ্যান্ড এমপ্লয়ি কনডাক্ট রেগুলেশন (১৯৯২-৯৩)’ অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপের উপরেই ভরসা রাখছেন কর্তৃপক্ষ।

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Biometric
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy