সরস্বতী পুজোর আর কয়েক দিন। শীত-দুপুরে বাহন হাঁসের গায়ে রঙের প্রলেপ দিতে ব্যস্ত খুদে। রবিবার উত্তর কলকাতায়। ছবি: সুমন বল্লভ
মাটি থেকে শুরু করে কারিগরদের মজুরি, প্রতিমা তৈরির আনুষঙ্গিক সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে হু হু করে। ফলে সরস্বতী পুজোর আগে প্রতিমার দামও বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন মৃৎশিল্পীরা। এ বার সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রতিমার চাহিদাও, যা খানিক চিন্তা কমিয়েছে কুমোরটুলির।
পুজোর কয়েক দিন আগে থাকতেই ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে কুমোরপাড়ায়। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বাড়ির জন্য প্রতিমা কিনতে শিল্পীদের স্টুডিয়োয় ঢুঁ মারছেন ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকেরা। তাই প্রতিমার দাম বাড়লেও ক্রেতাদের আনাগোনা কিছুটা স্বস্তিতে রেখেছে কুমোরটুলিকে। শিল্পীদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত বছরের তুলনায় এ বার প্রতিমার দাম বেড়েছে প্রায় ১৫-২৫ শতাংশ। গত বার আড়াই ফুটের যে প্রতিমার দাম ছিল মোটামুটি তিন-চার হাজার টাকা, তারই দাম এ বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজারেরও বেশি। দেড় ফুটের প্রতিমা বিকোচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারে। প্রতি বছর ছাঁচের সরস্বতী প্রতিমার চাহিদাও থাকে অনেক। আকার অনুযায়ী সেই প্রতিমার দাম এ বার বেড়েছে গড়ে ২০০-২৫০ টাকা।
কুমোরটুলির শিল্পীদের একাংশ প্রতিমার দাম বাড়ার কারণ হিসাবে কারিগরদের মজুরি বৃদ্ধিকেই দেখাতে চাইছেন। আগে যেখানে এক জন কারিগরের মজুরি ছিল দৈনিক গড়ে ৭০০ টাকা, সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। অভিজ্ঞ কারিগরদের ক্ষেত্রে এই মজুরি আরও বেশি। সহকারী শিল্পীদের মজুরিও এক ধাক্কায় ১০০-১৫০ টাকা করে বেড়েছে বলে দাবি। যার রেশ পড়ছে প্রতিমার দামে। এ ছাড়া প্রতিমা তৈরির মাটি, রং, বাঁশের কাঠামো, কাপড়-সহ আনুষঙ্গিক জিনিসের দামও বেড়েছে।
কুমোরটুলির শিল্পী প্রদ্যুৎ পাল বললেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই সব জিনিসের দাম বাড়ছে। তবে করোনার কারণে চাহিদা সে ভাবে না থাকায় লোকসান করেই প্রতিমা বিক্রি করতে হয়েছিল। কিন্তু এখন যা অবস্থা, দাম একটু না বাড়ালে উপায় ছিল না।’’ একই কথা শোনা গেল আর এক শিল্পী মন্টু পালের কাছেও। তাঁর কথায়, ‘‘সব জিনিসের দাম বাড়লে প্রতিমার দামও তো বাড়বে! এটাই স্বাভাবিক। আমরা ক্রেতাদের সেটাই বোঝাচ্ছি।’’
কুমোরটুলির শিল্পীদের যদিও দাবি, প্রতিমার দাম বাড়লেও চাহিদার উপরে তার তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। বরং গত দু’বছরের তুলনায় চাহিদার পরিমাণ খানিকটা বেশির দিকেই। এমনকি আগাম বায়নার সংখ্যাও গত বারের তুলনায় বেশি হয়েছে বলেই জানাচ্ছেন মৃৎশিল্পীদের একাংশ। ফলে পুজোর আগেই ক্রেতাদের ভিড় কুমোরটুলির শিল্পীদের মুখে চওড়া হাসি ফুটিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy