পরীক্ষা দিয়ে ওয়াকার নিয়ে বেরোচ্ছে মহম্মদ সাজিদ। মঙ্গলবার, কলেজ স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র।
মাত্র এক মাস আগেই বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল বছর সতেরোর মহম্মদ সাজিদ। মঙ্গলবার হিন্দু স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষা দিয়ে যখন সে বেরোল, তখনও তার পায়ের পাতায় বড় ব্যান্ডেজ বাঁধা। হাতে ধরা ওয়াকার। স্কুলের দরজা পেরোনোর সময়ে তাকে সাহায্য করতে করতে দাদা মহম্মদ শামিম জানালেন, ভাইয়ের জেদের কাছে হার মেনেছেন তাঁরা সকলেই। আর পরীক্ষার শেষে এক মুখ হাসি নিয়ে শ্রীজৈন বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র সাজিদ বলছে, ‘‘প্রথম পরীক্ষা ছিল হিন্দি। পরীক্ষা ভালই হয়েছে।’’
পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা সাজিদ পথ দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল এক মাস আগে। গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা পেরোনোর সময়ে একটি অ্যাপ-ক্যাব তার বাঁ পায়ের পাতার উপর দিয়ে চলে যায়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে সে দিন রাস্তায় শুয়ে পড়েছিল সে। উদ্ধার করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পরে দিন দুয়েক হাসপাতালে রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পায়ের অবস্থা খারাপ হওয়ায় অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। শামিম বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের জন্য ভাইকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ওর শরীরের অন্য জায়গা থেকে চামড়া নিয়ে পায়ের পাতায় লাগানো হয়। তবে এর মধ্যেও ভাই বার বার বলেছিল যে, ও পরীক্ষা দেবেই।’’
অস্ত্রোপচারের পরে সাজিদকে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল সাত দিন। সেই কয়েক দিন হাসপাতালে বসেই উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতি চালিয়ে গিয়েছে সে। পরীক্ষা না দেওয়ার কথা ভাবতেই পারেনি। সাজিদ বলল, ‘‘অনেকে বলেছিলেন, প্রয়োজনে হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিতে। কিন্তু আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে বসেই পরীক্ষা দেব বলেছিলাম। ২০২১ সালে কোভিডের জন্য মাধ্যমিক দিতে পারিনি। এ বার সময়মতো স্কুলে বসেই উচ্চ মাধ্যমিক দিতে চাই। এই তো সবে একটা পরীক্ষা দিলাম। এখনও পায়ে যন্ত্রণা হয়। তবু সব যন্ত্রণাকে সহ্য করেই সব ক’টা পরীক্ষা ভাল ভাবে দিতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy